আপডেট : ০৭ December ২০১৮
সিলেটে আঁচল ভিসার বাণিজ্য অনেকটা কমলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ বাণিজ্য এখনো রয়ে গেছে। কোনো কোনো লন্ডনি কইন্যা বিয়ের নামে এ বাণিজ্য ও প্রতারণা অব্যাহত রেখেছে। তাদেরই একজন লন্ডনি কইন্যা ফাতেমা বেগম রুনি। মাত্র ২২ বছর বয়সে এ লন্ডনি কইন্যা একাধিক বিয়ে-বাণিজ্য করে ইংল্যান্ড গমনেচ্ছু যুবকদের সর্বস্বান্ত করেছে। স্বামী থাকা সত্ত্বেও গোপনে বিয়ে করে চলেছে অন্যদের। মাত্র কয়েক দিনের জন্য বিয়ে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রুনি ও তার পরিবার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রুনি সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার ধারনবাজার এলাকাধীন নয়া রাজারগাঁওয়ের ইংল্যান্ড প্রবাসী মিয়াজান আলীর মেয়ে। সে নিজেও যুক্তরাজ্য প্রবাসী। যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব লাভের সুযোগে পিতা মিয়াজান ও মাতা নেওয়ারুন বিবি মেয়ে রুনিকে নিয়ে শুরু করেছেন জমজমাট বিয়ে-বাণিজ্য। স্পাউস ভিসায় যুক্তরাজ্যে যাওয়ার ও বসবাসের সুযোগ রয়েছে এমন ধোয়া তুলে তারা তাদের মেয়ে রুনিকে দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে অনেক যুবক জায়গা-জমি ও সোনা গহনাসহ লাখ লাখ টাকা হারিয়ে পথে বসেছে। লন্ডনি কইন্যার এসব বিয়ে-বাণিজ্যে সিলেট ও যুক্তরাজ্যের বাঙালি কমিউনিটিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মাত্র ২২ বছর বয়সী রুনির বিয়ে ও আঁচল ভিসা প্রতারণার অনেক তথ্য রয়েছে মিডিয়াকর্মীদের কাছে। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি বিয়ে-বাণিজ্যের তথ্য এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হচ্ছে— ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিতা-মাতা রুনিকে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে দেন যুক্তরাজ্যে অবৈধ বসবাসরত এক বাংলাদেশি যুবকের সঙ্গে। তাকে যুক্তরাজ্যে সেটেল করে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে রুনি ও তার পরিবার ওই যুবকের কাছ থেকে ১০ হাজার পাউন্ড (১২ লাখ টাকা) নেয়। বিয়ের তিন মাস যেতে না যেতেই রুনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে অন্য এক যুবকের সঙ্গে। এর কিছু দিন যেতে না যেতেই লন্ডনি রুনির প্রতারণার জালে বন্দি হন লন্ডন গমনেচ্ছু যুবক ছালেহ আহমদ। তিনি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার গহরপুর এলাকার সুলতানপুর গ্রামের মরহুম চান মিয়ার ছেলে। লন্ডন নেওয়ার নামে ছালেহ আহমদের পরিবারের কাছ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে বিয়ের খরচ ও মোহরানা বাবদ ১০ হাজার পাউন্ড গ্রহণ করে রুনি ও তার পিতা-মাতা। যুবকের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও রুনিকে ‘কুমারী’ সাজিয়ে দেশে নিয়ে আসেন পিতা-মাতাসহ ভাই-বোন। ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই ছালেহ আহমদের সঙ্গে বিয়ে পড়ান রুনির। বিয়ের কাবিননামায় রুনিকে উল্লেখ করা হয় ‘কুমারী’। বিয়ের পর ছালেহ আহমদের সঙ্গে কয়েক দিন ঘর করার পর রুনি আবার ইংল্যান্ড চলে যায়। লন্ডন যাওয়ার প্রহর গুনতে থাকেন স্বামী ছালেহ আহমদ। স্বামী ছালেহ আহমদকে ভিসা প্রসেস করে লন্ডন নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আবার এ বছরের (২০১৮ সালের) অক্টোবরে দেশে ফেরে। দেশে ফেরার পর স্বামী ছালেহ আহমদের সঙ্গে বসবাস করতে থাকাবস্থায় নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক শাহ লোকমান আলীর সঙ্গে গোপনে বিয়ের কাবিননামা সম্পাদন করে রুনি। এ কাবিননামার মাধ্যমে শাহ লোকমান আলীর ১১ লাখ টাকা মোহরানার মধ্যে ৫ লাখ টাকার সোনা গহনা হাতিয়ে নেয় রুনি ও তার পরিবার। গত ১২ অক্টোবর শাহ লোকমান আলীর সঙ্গে লন্ডনি আঁচল কইন্যা রুনির বিয়ের এ কাবিননামাকে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণা বলে মামলা হয়েছে আদালতে। সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ম আদালতে মামলা করেন রুনির স্বামী ছালেহ আহমদ। মামলায় লন্ডনি কইন্যা ফাতেমা বেগম রুনি, কথিত বর শাহ লোকমান আলী ও নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী এমকে হেলালীসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর স্বামী দাবিদার ছালেহ আহমদ গত ২৯ নভেম্বর প্রেস কনফারেন্স করে জালিয়াত ও প্রতারকচক্রের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১