আপডেট : ০৭ December ২০১৮
বাংলা সাহিত্যের পঞ্চপাণ্ডবের একজন বুদ্ধদেব বসুর মতে, আত্মরতির সম্মোহনে যারা দিন কাটান তারাই বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধদেবের এই কথাটি বাঙালি বৃদ্ধিজীবীদের ক্ষেত্রে যে অনেকাংশেই সত্যি তার প্রমাণ পাওয়া গেছে অসংখ্যবার। তবে মনোবিজ্ঞানীরা বলেছেন, আত্মরতির সম্মোহনে যারা দিন কাটান তারা আসলে গণতন্ত্রবিরোধী। যুক্তরাজ্যের কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও পোল্যান্ডের একাডেমি অব সায়েন্স এর একদল মনোবিজ্ঞানীর যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। ব্রিটেন জার্নাল অব সাইকোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি। গবেষণাটি পোল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন নাগরিকের ওপর চালানো ওই সব নাগরিক নিজেদের অন্যান্য নাগরিকের তুলনায় সব ক্ষেত্রে সেরা মনে করেন। গবেষকরা বলছেন, আত্মরতির সম্মোহনে যারা দিন কাটান অর্থাৎ যারা আত্মকেন্দ্রিক তারা আসলে গণতন্ত্রবিরোধী হয়ে ওঠেন। তারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমর্থন করেন না বা মেনে নিতে পারেন না। গবেষকরা দেখেছেন, আন্তকেন্দ্রিক মানুষ মনে করেন গণতন্ত্রপন্থিরা রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতি পরিপালনে প্রত্যাশিত সফলতা দেখাতে পারেন না। রাষ্ট্র পরিচালনের ক্ষেত্রে আন্তকেন্দ্রিকদের পছন্দ একনায়ক কিংবা সামরিক সরকার। আত্মকেন্দ্রিকরা মনে করে, একনায়ক বা সামরকি শাসক দ্বারাই রাষ্ট্র ভালোভাবে পরিচালিত হতে পারে। আন্তকেন্দ্রিক মানুষের এহেন মনোভাবের পেছনে তাদের অহম ও অন্যদের তুলনায় সেরা ভাবার প্রবণতাকেই দায়ী করেছেন গবেষকরা। নিজেদের সবক্ষেত্রে সঠিক ও সেরা ভাবার কারণেই রাজনৈতিক মতের বৈচিত্র্যকে মেনে নিতে পারেন না বা অস্বীকার করেন। ‘মাই ওয়ে অর হাইওয়ে : হাই নার্সিজম অ্যান্ড লো সেল্ফ-এস্টেম’ শীর্ষক ওই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের থেকে সংগ্রহ করা তথ্য দুই ধাপে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যাদের আত্মসম্মানবোধ তুলনামূলক কম তাদের তুলনায় বেশি আত্মসম্মানবোধের মানুষ গণতন্ত্রবিমুখ হচ্ছেন। এ বিষয়ে গবেষক দলের প্রধান ও কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব সাইকোলজির অধ্যাপক ড. আলেকসান্দ্রা চিচোককা বলেছেন, এখনকার দিনের তরুণরা দিন দিন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। দয়েক দশক আগের তুলনায় এই হার ভয়বহ রকমের বেশি। এর জন্য তার পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তবে পারিপার্শ্বিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডগুলো কতটা প্রভাব রাখতে তা জানতে আরো পর্যবেক্ষণ দরকার। ওই গবেষক জানান, তিনি ও পোল্যান্ডের একাডেমি অব সায়েন্সের মার্তা মার্চলেওস্কা এমন একটি উপায় খুঁজে পেয়েছেন যার মাধ্যমে আত্মকেন্দ্রিকদের গণতন্ত্রে আস্থাশীল করা যায়। পুরনো কিছু গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তারা এমন একটি উপায়ের সন্ধান পেয়েছেন যা মানুষের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য ভিত্তিতে সামাজিক সংগঠনগুলোর সম্পর্কে তার মতামত জানা যাবে। তবে তার আগে আত্মকেন্দ্রিক মানুষগুলো নিজেদের কতটা সেরা ও অনন্য মনে করেন তার মাত্রাও নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১