বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০২ December ২০১৮

ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার আহ্বান ড. কামালের

ড. কামাল হোসেন সংরক্ষিত ছবি


ভোট পাহারায় জনসাধারণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।

গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশের মালিক জনগণ। তাই ভোট পাহারা দিতে হবে তাদেরকেই। পত্রপত্রিকায় সবাই আশঙ্কা করছেন যে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে নানাভাবে বাধা দেওয়া হবে। সেই বাধা সরকার বা যে কেউ দিক না কেন, সবাই মিলে আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে রক্ষা করতে হবে। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, আমার একটা বিনীত নিবেদন আপনারা কষ্ট করে নির্বাচনের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকে নিয়ে ভোট দিতে একদম সকাল সকাল চলে যাবেন। প্রত্যেক বাড়িতে যত ভোটার আছে সবাই যেন ভোট দেয় সেই ব্যবস্থা করবেন।

ড. কামাল বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। আমি দেশবাসীর প্রতি ১৯৭১ সালের মতো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। আমি বিশ্বাস করি, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হচ্ছে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অপরিহার্য অংশ। যদি জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারেন তাহলে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়বে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

লিখিত বক্তব্যে ড. কামাল বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ দেশ ও সরকারের ওপর তাদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে। নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঐক্যফ্রন্টের সব দলই এ ব্যাপারে সচেতন।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমার আহ্বান তারা যেন নিরপেক্ষভাবে, স্বাধীনভাবে এবং ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ২০২২ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন দেশ ও জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, সব রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও নির্বাচন কমিশনের সঠিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন পাব।

তিনি বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় গেছি। সকলে বলেছেন, তারা পরিবর্তন চান, অবাধ নির্বাচন চান। এটা শুধু দয়া বা অনুগ্রহের ব্যাপার নয়। এটা সংবিধানের প্রতিশ্রুতি। আমাদের সংবিধানে আছে জনগণ দেশের মালিক। সেই বিষয়টি ২ তারিখ থেকে ২৮ দিন জনগণকে জানাতে হবে। আমি এ ব্যাপারে নাগরিক ও গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাচ্ছি।

ড. কামাল বলেন, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে তার জন্য পরিবেশ দরকার। সেটা আমরা বার বার ভুলে যাচ্ছি। সুষ্ঠু পরিবেশের পরিপন্থী হচ্ছে পাইকারি হারে গ্রেফতার। তফসিল ঘোষণার পর ৭শ’র  ওপরে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন প্রার্থীও আছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। প্রধানমন্ত্রীও বলেছিলেন। আমার কথা হলো স্বাভাবিক পরিবেশ রাখার জন্য এই গ্রেফতার বন্ধ করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতার বন্ধ না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তিনি বলেন, এই নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্ত করার জন্য, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু এখনো গায়েবি মামলায় শত শত নেতাকর্মী আটক করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। সেজন্য আমরা দাবি করছি, গ্রেফতার বন্ধ করা হোক, গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দেওয়া হোক, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হোক। তা না হলে নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। অন্যথায় আমরা বৃহত্তর একটা কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান তালুকদার, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমেদ, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, ড. রেজা কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।

ঐক্যফ্রন্টের নতুন অফিস পল্টনে : নতুন অফিস নিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল বিকালে ৩৭/২, পুরানা পল্টনে (কালভার্ট রোড) নতুন অফিস পরিদর্শনে যান ড. কামাল হোসেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা মহানগর ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়কারী আবদুস সালাম, রেজা কিবরিয়া প্রমুখ তার সঙ্গে ছিলেন।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১