বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৭ November ২০১৮

ক্যাম্পে গ্যাস বিতরণ

স্মার্টকার্ডে ‘রোহিঙ্গা’ উল্লেখ না থাকায় প্রতীকী অনশন

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ইউএনএইচসিআর এর গ্যাস বিতরণ সংগৃহীত ছবি


পরিবেশ রক্ষা, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে এলপিজি গ্যাস বিতরণ শুরু করেছে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। এদিকে প্রত্যাবাসনের জন্য ইউএনএইচসিআরের তৈরি করা পরিবারভিত্তিক তালিকা ও স্মার্টকার্ডে ‘রোহিঙ্গা’ উল্লেখ না থাকায় তা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গারা।

জানা গেছে, পরিবারভিত্তিক তালিকায় ‘রোহিঙ্গা’ উল্লেখ না থাকায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’কে সব ধরনের সহযোগিতা থেকে বিরত রয়েছেন রোহিঙ্গাদের একটি অংশ। গত দুই দিন ধরে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে প্রতীকী অনশন করেন।

ইউএনএইচসিআর জানায়, গত সপ্তাহে কুতুপালংসহ কক্সবাজারে অবস্থিত অন্যান্য শরণার্থী ক্যাম্পে সপ্তাহব্যাপী এলপিজি গ্যাস বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শরণার্থীদের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরবরাহকৃত প্রতিটি সিলিন্ডারে সাড়ে বারো কিলোগ্রাম এলপিজি থাকে, যা সাত সদস্যের একটি পরিবারের এক মাসের রান্নার জন্য যথেষ্ট। শরণার্থীরা প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে এসব সিলিন্ডার রিফিলের সুযোগও পাবে। এই সিলিন্ডার ও চুলা স্থানীয়ভাবে তৈরিকৃত, যা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছে। সরকারি হিসাবে রোহিঙ্গারা এ যাবৎকালে গণহারে প্রতিদিন প্রায় ৭০০ মেট্রিক টন কাঠ কেটে ও জ্বালিয়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করছে, যা প্রতিদিন ৫টি ফুটবল খেলার মাঠের সমান জায়গা বন উজাড়ের শামিল। এখন বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থার উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ এবং ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল অরগানাইজেশন (ফাও), আইওএম ও ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা।

এদিকে ইউএনএইচসিআর কর্তৃক প্রত্যাবাসনের জন্য তৈরি করা পরিবারভিত্তিক তালিকা ও স্মার্টকার্ডে ‘রোহিঙ্গা’ উল্লেখ না থাকায় তা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করছে রোহিঙ্গারা।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটির নেতা সৈয়দ উল্লাহ বলেন, আমরা শুরু থেকে দাবি করে আসছি আমাদেরকে মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গা স্বীকৃতি দিতে হবে। একইভাবে রাখাইনে স্বাধীনভাবে চলাচল, পূর্ণ নাগরিক সুবিধা দিতে হবে। কিন্তু প্রত্যাবাসনের জন্য করা পরিবারভিত্তিক তালিকায় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উল্লেখ না থাকায় আমরা বিচলিত হয়ে পড়েছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজি) একটি সূত্র জানায়, রোববার সকাল থেকে টেকনাফের চাকমারকূল ও উখিয়ার ২১ নম্বর ক্যাম্পসহ বিভিন্ন ক্যাম্পের কিছু রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তালিকায় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উল্লেখ না থাকায় স্মার্টকার্ড না নেওয়ার পাশাপাশি প্রতীকী অনশন করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. আবুল কালাম জানান, রোহিঙ্গাদের একটি অংশ ক্যাম্পে প্রতীকী অনশনের কথা আমি শুনেছি। আমি বিষয়টি দেখতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাচ্ছি।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনার বিরোধিতা করে গত রোববার মিয়ানমারের রাখাইনের রাজধানী সিত্তেতে শতাধিক উগ্রপন্থি বৌদ্ধ ভিক্ষুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ করেছে বৌদ্ধরা। নিপীড়িত হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদেরকে ‘পলায়নপর শরণার্থী’ আখ্যা দিয়ে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করার জন্যও আহ্বান জানায় বিক্ষোভকারীরা।

 

 

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১