আপডেট : ২৫ November ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা চূড়ান্ত করার পর ১৪ দলের আসন ভাগাভাগিও করে নিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ! শেষ মুহূর্তে এসে গতকাল শনিবার দলের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও মহাজোটের শরিকদের সঙ্গে একটানা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসে দলটি। আনুষ্ঠানিক ওই বৈঠকে ১৪ দলে থাকা দলগুলোর সঙ্গে আসন বণ্টন ‘চূড়ান্ত’ হলেও মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আসন ভাগ গতকাল রাত পর্যন্ত ‘অমীমাংসিত’ আছে বলে বৈঠকে উপস্থিত সূত্রে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র জানায়, শনিবার রাতে জাপার সঙ্গে আলোচনা করে আসন বণ্টনের বিষয়টি সুরাহা হতে পারে। তা হয়ে গেলে আজ রোববার, না হয় আগামীকাল সোমবার আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের মনোনীতদের চূড়ান্ত তালিকা একসঙ্গে প্রকাশ করা হতে পারে। তাই মহাজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মাহেন্দ্রক্ষণ আসতে পারে আজ, না হয় কাল। আবার দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কোনো কোনো নেতা এমন আভাসও দেন, আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত হলেও আজ ও কালের মধ্যে তালিকা প্রকাশের সম্ভাবনা খুব কম। সূত্র মতে, শনিবার দুপুরে ঢাকার গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর বিকালে বৈঠক করেন জাপার সঙ্গে। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত দলগুলোর প্রতিনিধিদের আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আসনের বিষয়ে জানানো হয়। জোটের অনেক দলের চাওয়া আসনসংখ্যা জোটের জন্য আওয়ামী লীগের বরাদ্দ করা আসনের চেয়ে বেশি। তবে ১৪ দলের অধিকাংশ শরিক আওয়ামী লীগের বরাদ্দ আসনে ‘সন্তুষ্ট’ বলে বৈঠক সূত্র উল্লেখ করে। সূত্র মতে, মহাজোটের শরিক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাপাকে এবার ৩৫টি আসন দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় বৈঠকে। এতে ‘পুরোপুরি রাজি’ হয়নি জাপা। এ ছাড়া ১৪ দলীয় শরিকদের ১৪টি, সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টকে পাঁচটি, ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলকে পাঁচটি আসন দেওয়ার কথা জানানো হয়। এসব দল আসনসংখ্যা জেনে ‘দ্বিমত’ করেনি। ১৪ দলের শরিক আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টিকে (জেপি) দুটি আর মহাজোটের সঙ্গে থাকা জাকের পার্টিকে একটি আসন ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ও মহাজোটের অন্তর্ভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে ৬৫ থেকে ৭০টির বেশি আসনে ছাড় দেওয়া হবে না বলে বৈঠকে ওবায়দুল কাদের ইঙ্গিত দেন। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে গত কয়েকদিনের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, বিকল্পধারার সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও ন্যাশনালিস্ট ফোরামের (বিএনএফ) সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদের কথা হয়। তখন আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর গতকাল ১৪ দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয় আওয়ামী লীগের। দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের কাছে প্রথমে জাপা এবার ১০০টি আসন চায়। শেষ দিকে এসে দলটির দাবি ৫০টি আসন। দলটিকে প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে ৩৫টি আসনের। জাপার দাবি, এখন দলটিতে সংসদ সদস্যই আছেন ৩৫ জন। এ অবস্থায় তারা কমপক্ষে ৪০টি আসন দাবি করে। এ বিষয়ে দলের চেয়ারম্যান এরশাদ গণভবনে বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। বৈঠকে এরশাদ কমপক্ষে ৪০টি আসন দাবি করেন। তালিকা ঘোষণার আগে জাপাসহ ১৪ দলের আসন সংখ্যায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে সূত্র উল্লেখ করে। সূত্র জানায়, দলের মনোনীতদের তালিকা চূড়ান্ত হলেও প্রায় ১০টি আসন বাকি আছে। নিজ দল ও জোট ও মহাজোটের প্রার্থীসহ বিভিন্ন দল ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা নেতাদের এসব আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার কথা। তবে বিতর্কিত ও জনপ্রিয়তাহীন নেতাদের আওয়ামী লীগে না নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে দলটির। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কাছে তথ্য আছে, বিএনপির মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করার পর বঞ্চিত হয়ে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক নেতা আওয়ামী লীগে যোগ দিতে পারেন। এমন অন্তত তিন থেকে চারজনকে মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনাও আছে আওয়ামী লীগের। গতকালের বৈঠকে জাসদের একাংশকে তিনটি আসন ছেড়ে দেওয়ার কথা হয় আওয়ামী লীগের পক্ষে। তবে জাসদ পাঁচটি আসন চায়। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে বাকিটা চূড়ান্ত হতে পারে বলে বৈঠক সূত্র জানায়। এরপর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সঙ্গেও আসন বণ্টনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের বৈঠক হয়।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১