বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৪ November ২০১৮

তালতলীতে 'জোছনা উৎসব' অনুষ্ঠিত

বরগুনা নদী বন্দরে জোছনা উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বরগুনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ ছবি : বাংলাদেশের খবর


বরগুনার অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে জোছনাপ্রেমী মানুষের জন্য এ উৎসবের আয়োজন করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বরগুনায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ জোছনা উৎসব। শুক্রবার বরগুনার তালতলীতে শুভ সন্ধ্যায় এ উৎসব উদযাপিত হয়। দেশ বিদেশের হাজারো পর্যটক ভিড় জমান এ উৎসবে।

একদিকে দীর্ঘ ঝাউবন, আরেক দিকে তিনটি নদী খরস্রোতা পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর বিশাল জলমোহনা। নদী যেখানে সাগরে মিশেছে ঠিক সেখানে; নবগঠিত তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের স্নিগ্ধ বেলাভূমি 'শুভ সন্ধ্যার' বিস্তির্ণ বালুচরে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সব মিলিয়ে নদ-নদী আর বন-বনানীর এক অপরূপ সমাহার- শুভ সন্ধ্যার চর! ভরাপূর্ণিমায় এখানেই জল-জোছনায় একাকার হয় জোছনাবিলাসী হাজারো মানুষ।

শুক্রবার দুপুর ২টায় বরগুনা নদী বন্দরে জোছনা উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বরগুনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ। এসময় তার সাথে ছিলেন বরগুনা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ। তার আগেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়কপথে এসে হাজারো পর্যটক ভিড় জমায় উৎসবস্থলে। বিকেল ৫টায় বিস্তির্ণ বালুচরে একটি দলীয়স্তৃ নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জোছনা উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর রাতভর জোছনার গান, রাখাইন নৃত্য, বাউল সঙ্গীত, মোহনীয় বাঁশি, পুঁথী এবং কবিতা আবৃত্তি আর ফানুস উড়ানোর সাথে সাথে জলজোছনায় একাকার হয় নারী-শিশুসহ হাজারো মানুষ। শেষ রাতে জোছনা উৎসবের দ্বীপালী ভাসিয়ে শেষ হয়ছে জোছনা উৎসব।

জোছনা উৎসবের উদ্যোক্তা সোহেল হাফিজ বলেন, শহুরে সভ্যতায় আমরা পেয়েছি অনেক, একই সাথে হারানোর তালিকাও কম নয়। নাগরিক ব্যস্ততায় আমরা হারিয়েছি শ্রাবণের জলে সর্বাঙ্গ ভেজানোর সুযোগ। হারিয়েছি শরতের শিশিরে নগ্ন পায়ে হাঁটার সময়। হারিয়েছি রূপালী নদীতে হৈমন্তী পূর্ণিমায় জলজোছনায় অবগাহনের রোমাঞ্চকর অনুভূতি। সেইসব হারানো সময়, সুযোগ আর স্মৃতির কথা ভেবেই বরগুনায় শুভ সূচনা হয়েছিলো জোছনা উৎসবের।

এ বিষয়ে বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মনোয়ার বলেন, সাংবাদিক সোহেল হাফিজ যখন বরগুনায় প্রথমবারের মতো এ উৎসব শুরু করেছিলেন তখন বরগুনার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষের মধ্যেই এ উৎসব সীমাবদ্ধ ছিলো। ধীরে ধীরে এ উৎসবের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। দলমত নির্বিশেষে এ উৎসব এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক ও জোছনা উৎসব আয়োজক কমিটি ২০১৮-এর আহ্বায়ক কবীর মাহমুদ বলেন, বরগুনা এমন একটি জেলা যেখান থেকে নৌপথে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এবং বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের অভয়ারণ্যের দূরত্ব মাত্র ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার। এ ছাড়া বরগুনায় রয়েছে নয়নাভিরাম স্নিগ্ধ বনভূমী আশারচর, লালদিয়ারচর, হরিণঘাটার বন, টেংরাগিরির বনভূমি এবং শুভসন্ধ্যার বিচ পয়েন্টসহ অনেক আকর্ষণীয় বন-বনানী ও নদ-নদীর মোহনা। এসব বনাঞ্চলে রয়েছে হরিণ, বানর, শুকরসহ শতেক প্রজাাতীর প্রাণী। বরগুনার এসব আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা পরিকল্পিতভাবে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরা গেলে পর্যটন শিল্প বিকাশের সাথে সাথে এখানকার অর্থনীতিতে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। জোছনা উৎসবের মত একটি উৎসবকে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে প্রচার করা গেলে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে। আর এভাবেই এগিয়ে যাবে বরগুনা। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১