বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৪ November ২০১৮

সাদা পাথরের দেশে মায়াবী হাতছানি


ভোলাগঞ্জ, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের আধার। ধলাই নদীর মোহনীয় রূপ, পাশেই সবুজ পাহাড়ের মায়াবী হাতছানি। পাহাড়গুলোর উপরে সাদা মেঘের আনাগোনা। স্বচ্ছ স্ফটিক জলে নীল আকাশের ছায়া। নদীর পরিষ্কার জলের তলায় বালুর মসৃণ স্তর। পুরো এলাকায় অজস্র সাদা পাথরের বিস্তার। এককথায় পাথরের রাজ্যে যেন সৌন্দর্যের হাতছানি। সময় পেলে ঘুরে আসুন সাদা পাথরের রাজ্য সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে। পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া স্বচ্ছ জলে মন ও শরীরের সব ক্লান্তি-অবসাদ সহজেই দূর করতে পারবেন।

সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটার। এটি দেশের বৃহত্তম পাথর কোয়ারি অঞ্চল। ধলাই নদীর সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে ছোট-বড় সাদা রঙের পাথরগুলো। ভারত থেকে প্রচুর পাথর ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিতে জমা হয়। যা সারা বছর শ্রমিকরা উত্তোলন করে থাকে। এত পাথর বাংলাদেশের কোথাও নেই।

ভোলাগঞ্জের অন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হলো ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে। পাথর কোয়ারি, পাহাড়ি মনোলোভা দৃশ্যের পর ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে এলাকা ঘুরে দেখতে পারেন। ১৮৬৪ সালে সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে প্রকল্প। রোপওয়ের এরিয়া প্রায় একশ একর। ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে এলাকায় অবস্থান করে পাহাড় টিলার মনোরম দৃশ্যাবলি অবলোকন করা যায়। পাহাড়ি সৌন্দর্য মনকে কেমন উদাসীন করে তোলে।

এ ছাড়া ভোলাগঞ্জে রয়েছে একটি ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন। এ স্টেশন দিয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চলে। এ স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রধানত চুনাপাথর ও কয়লা আমদানি করে থাকেন। চুনাপাথর নিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্তের জিরো লাইনে এ কাস্টমস স্টেশনের অবস্থান। চাইলে এখান থেকেও ঘুরে আসতে পারেন।

 

কীভাবে যাবেন

ঢাকার সায়দাবাদ, ফকিরাপুল, গাবতলী ও মহাখালী বাসস্টেশন থেকে সিলেটের উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। এ পথে লন্ডন এক্সক্লুসিভ, গ্রিন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া, এস আলম পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিসের এসি ও নন-এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া পড়বে ৪৭০ থেকে ১১০০ টাকা।

এ ছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ও উপবন এক্সপ্রেসে চড়ে যেতে পারেন সিলেটে। সময় লাগবে ৭-৮ ঘণ্টা।

সিলেট শহর থেকে ভোলাগঞ্জ যাওয়ার কোনো বাস বা লেগুনা নেই। যাতায়াতের একমাত্র বাহন সিএনজিচালিত অটোরিকশা, জনপ্রতি ভাড়া ১৫০ টাকা। সিলেট শহর থেকে ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর ঘাটে রিজার্ভ করে সিএনজি অটোরিকশা গেলে ৮০০ টাকা ভাড়া। ঘাটে নেমে সাদা পাথর যাওয়ার জন্য রিজার্ভ নৌকা ভাড়া করতে হবে। ভাড়া নেবে ৭০০-১০০০ টাকা। এক্ষেত্রে ভাড়া ঠিক করে নেওয়া ভালো। রাস্তা তেমন একটা ভালো নয়। সে ক্ষেত্রে নদীপথে যাওয়াই ভালো।

এই পথে জনপ্রতি খরচ ২০০ টাকা। সংখ্যায় বেশি হলে ট্রলার রিজার্ভ নিয়ে যেতে পারেন। ভাড়া নেবে ছয় হাজার টাকা যাওয়া-আসা। যাতায়াত সময় সড়কপথের মতো নদীপথেও তিন ঘণ্টা। দিনে গিয়ে দিনেই ফেরত আসা যাবে। আর নদীপথে যাতায়াতে একটু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সম্ভব হলে সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখবেন।

 

থাকার ব্যবস্থা

জেলা পরিষদের একটি রেস্ট হাউজ আছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে। সেখানে থাকতে হলে আপনাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি নিতে হবে। এ ছাড়া ভোলাগঞ্জ বা কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় থাকার তেমন কোনো ভালো ব্যবস্থা নেই। ভোলাগঞ্জ ভ্রমণ শেষে আপনি সিলেটে এসে অবস্থান করতে পারবেন।

 

অন্যান্য

শুকনা খাবার এবং প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ সঙ্গে রাখবেন। একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, আপনার বা আপনার ভ্রমণসঙ্গীদের দ্বারা পরিবেশ হুমকিতে পড়ে এমন কোনো কিছু অবশ্যই করা চলবে না। পলিথিন বা প্লাস্টিকের বোতলসহ পরিবেশ বিপন্ন হয় তেমন কিছু ফেলে আসবেন না।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১