আপডেট : ২৪ November ২০১৮
মনে আছে, গত বছরের নভেম্বরে পেঁয়াজের দাম কত ছিল? ওই সময় ভারত পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য (এমইপি) বাড়িয়ে সাড়ে ৮০০ ডলার নির্ধারণ করেছিল। এ কারণে দেশে পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি একশ টাকা পেরিয়েছিল। ওই দাম ক্রেতাকে গুনতে হয়েছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু এ বছর মৌসুমের শেষেও বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছে। এতে স্বস্তিতে রয়েছে ক্রেতারা। নভেম্বর দেশের পেঁয়াজের মৌসুম শুরুর আগের মাস। এ কারণে প্রায় প্রতিবছর এ সময় বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকে। ফলে আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজের ওপর নির্ভর করতে হয় বেশি। তবে ওই দেশেও যদি উৎপাদন ঘাটতি হয়, তাহলে উভয় ক্ষেত্রে সঙ্কট প্রকট হয়। এমন পরিস্থিতিতে ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে রফতানির মূল্য বাড়িয়ে দেয়। স্বাভাবিকভাবে তখন বাংলাদেশে হু-হু করে বাড়তে থাকে পণ্যটির দাম। তবে এ বছর রাজধানীর বাজারগুলোতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কমছে পেঁয়াজের দাম। যেখানে গত মাসে দেশে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা বিক্রি হতো, তা এখন কমে ৩০-৩৫ টাকায় নেমেছে। আর আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। এ বছরের নিম্নমুখী দামের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিবছরের ন্যায় দাম বাড়ার আশঙ্কায় এ বছরও মজুতদাররা প্রচুর পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছিল। আবার ভারতে উৎপাদন ভালো হওয়াতে কম দামে পেঁয়াজ আমদানি করা যাচ্ছে। এজন্য তারা মজুত পেঁয়াজ বাজারে ছাড়ছে, কারণ শিগগির দেশে নতুন পেঁয়াজ আসবে। ফলে বাজারে দেশি ও আমদানি উভয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে দাম কমছে। কারওয়ান বাজারে পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা ফজলুল হক বলেন, ভারতে এবার পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়াতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বর্তমানে ইন্দোর ও বেলোরি জাতের পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এ ছাড়া মহারাষ্ট্র থেকেও পেঁয়াজ আসছে। এ কারণে গত কয়েক দিনে পেঁয়াজ আমদানি অনেক বেড়েছে। দাম কমেছে কেজিতে ৬-৮ টাকা। এতে করে দেশি পেঁয়াজের দামও কমেছে। ওই বাজারে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, এ বছর যারা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় পেঁয়াজ মজুত রেখেছে তারা লোকসানে পড়েছে। কারণ এ বছর দর ওঠেনি। আর কিছুদিন পরই বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ আসবে। সুতরাং মজুত থাকলে লোকসানের পাল্লা আরো ভারী হবে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম শেষ দফায় কেজিতে ছয় টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে ওই এলাকার ট্রাকসেলে পেঁয়াজ ১৭-২০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ১১-১৪ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। হিলি স্থলবন্দর সূত্রে আরো জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন বন্দর দিয়ে ২৫-৩০ ট্রাকের মতো পেঁয়াজ প্রবেশ করে। কিন্তু বর্তমানে আমদানি আরো বেড়েছে। এখন বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৩৫-৪০ ট্রাক পেঁয়াজ আসছে। এদিকে রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় প্রতিদিনই একটু একটু করে কমছে দাম। বিক্রেতারা বলছে, অবহাওয়া ঠিক থাকলে দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে দাম আরো কমে আসবে। সবজির পাশাপাশি কমেছে ব্রয়লার মুরগির দামও। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা দরে। যা গত সপ্তায় ১০ টাকা বেশি ছিল। সঙ্গে মাছ বাজারে শীত ও ইলিশের উপস্থিতির পর থেকেই দাম কিছুটা কম। ব্যবসায়ীরা বলছে, এ সময় নদী-হাওর-বাঁওড়-বিল ও অন্যান্য উন্মুক্ত জলাশয়ের মতো প্রাকৃতিক উৎস থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এ কারণে মাছ বেশি ধরা পড়ছে, কমছে দাম। অন্যদিকে বাজারে গরু-খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাংস বিক্রেতারা।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১