আপডেট : ১৬ November ২০১৮
আগামী বছরের জানুয়ারি থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) বঙ্গবন্ধু-১-এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম। ইতোমধ্যে দেশের কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে স্যাটেলাইটটির পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সম্পূর্ণভাবে বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম শুরু করতে আমাদের কিছুটা সময় লাগছে। কারণ, আমরা যেই পদ্ধতিতে যাব সেভাবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), একাত্তর টেলিভিশনসহ চারটি টিভিকে পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিকভাবে স্যাটেলাইট ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছি। তিনি বলেন, এই পরীক্ষা থেকেই আমরা আমাদের স্যাটেলাইটের কোয়ালিটি দেখব। তার মাসখানেক পরেই আমরা সম্পূর্ণভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যেতে পারব। তাহলে বলা যায়, জানুয়ারি থেকেই আমরা বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যেতে পারব। তিনি আরো বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশি, দেশের সব টিভি চ্যানেল আমাদের স্যাটেলাইট দিয়ে সম্প্রচার করতে আগ্রহী হয়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, আগে বিদেশি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে তাদের বৈদেশিক মুদ্রায় খরচ পরিশোধ করতে হতো। এজন্য আবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি নিতে হতো, যা খুবই জটিল একটা পদ্ধতি ছিল। কিন্তু এখন আর সেই সমস্যা থাকছে না। কারণ নিজেদের দেশীয় মুদ্রাতেই তারা পরিশোধ করার সুযোগ পাচ্ছে। চেয়ারম্যান আরো বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের স্যাটেলাইট ব্যবহার করে টিভি চ্যানেলগুলো উন্নতমানের সম্প্রচার করতে পারবে। কারণ, আমাদের স্যাটেলাইটের সিগন্যাল স্ট্রেংথ অন্যান্য দেশের স্যাটেলাইটের চেয়ে অনেক উচ্চতর। গত ৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস স্যাটেলাইটের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)। পরে বিটিআরসি বিসিএসসিএলকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে। অনুষ্ঠানে বলা হয়, জানা গেছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের অবস্থান ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের ওপর হওয়ায় ওই দেশ দুটিতে মনিটরিং এজেন্সি খোলা হবে, যারা পরখ করে দেখবে সেখানকার ট্রান্সপন্ডার কীভাবে কাজ করছে। এরই মধ্যে বিসিএসসিএল দেশের তিন সেলস পার্টনার স্কয়ার, এডিএন ও ডিএনএস স্যাটকমের সঙ্গে চুক্তি করেছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান তিনটি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বিভিন্ন সেবা বিক্রি ও বিপণনের কাজ করবে। জানা গেছে, তিন সেলস পার্টনারের ভি-স্যাট ও হাবের লাইসেন্স রয়েছে। প্রতিষ্ঠান তিনটি লাইসেন্সিং প্রতিবন্ধকতায় সেবা দিতে না পেরে প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর তাদের ভি-স্যাট (ভেরি স্মল অ্যাপারেচার টার্মিনাল) ও হাব বসিয়ে রেখেছে। এদিকে মেরিন ভি-স্যাট (ভেরি স্মল অ্যাপারেচার টার্মিনাল) ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সহায়তায় ৩৭ হাজার সমুদ্রগামী জাহাজ, লঞ্চসহ অন্যান্য জলযান ট্র্যাক করবে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তিও হয়েছে এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। আর এই কাজের জন্য স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্য থেকে একটি ট্রান্সপন্ডার বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১১ মে যুক্তরাষ্ট্রের কেপ কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণ করা হয়। এরপর ৩৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিরক্ষরেখার ১১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রিতে স্থাপিত হয় এটি। এরপর বিভিন্ন কারিগরি পরীক্ষা শেষে স্যাটেলাইটের নির্মাতা ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালাস অ্যালেনিয়া বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। এরপরই শুরু হয়েছে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১