আপডেট : ১০ November ২০১৮
উৎক্ষেপণের ছয় মাসের মাথায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মালিকানা বুঝে নিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল শুক্রবার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেসের কাছ থেকে স্যাটেলাইটের মালিকানা সম্পূর্ণভাবে বুঝে নেওয়া হয়। রাজধানীর বাংলামোটরে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) কার্যালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে মালিকানার কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়। শুরুতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে স্যাটেলাইটটির মালিকানা বুঝিয়ে দেয় থ্যালেস অ্যালেনিয়া। এরপর বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ দায়িত্ব বিসিএসসিএলেরর কাছে বুঝিয়ে দেন। এ সময় বিসিএসসিএলের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত বাংলাদেশের জন্য। এখন থেকে আনুষ্ঠানিক মালিকানা পেল বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে সেতু তৈরি হলো। তারা আমাদের স্থায়ী বন্ধু হলো। স্যাটেলাইটের সবকিছু ঠিক থাকলে তিন বছরের মধ্যে লাভ করা শুরু হবে বলে জানান শাহজাহান মাহমুদ। এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এই স্যাটেলাইট আমাদের ঐতিহাসিক স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে। এটা শুধু দেশের জন্য গর্ব নয়, নির্মাতা প্রতিষ্ঠানসহ দুই দেশের গর্ব। চ্যালেঞ্জ ছিল উড়বে কি না। কিন্তু তা উড়েছে। এই স্যাটেলাইট দিয়ে কতটা লাভ হবে, কী খরচ হলো, কতটা উপকার পাব, এর চেয়ে আমাদের কাছে বড় অর্জন আমরা একটা স্যাটেলাইটের মালিক। বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি আনিক বুখডা বলেন, এ প্রকল্পটা আমাদের জন্য সত্যিই খুব খুশির এবং সন্তোষজনক। গত ১২ মে বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে দেশের প্রথম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সফল উৎক্ষেপণ হয়। সেটি মহাকাশে পাঠানোর মধ্য দিয়ে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির অভিজাত দেশের ক্লাবে বাংলাদেশ প্রবেশ করে। বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হয় বাংলাদেশ। এটির নিয়ন্ত্রণে গাজীপুরের তেলিপাড়া এলাকায় পাঁচ একর জমির ওপর স্যাটেলাইটটির গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি হয়েছে। গত ৩১ জুলাই সেটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্যাটেলাইটটিকে ব্যবসায়িকভাবে সফল করতে ইতোমধ্যে থাইল্যান্ডের কোম্পানি থাইকমের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিসিএসসিএল। আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসার দিকটি তারাই দেখবে। বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সেই অর্থ সাশ্রয় বলে আশা করছে সরকার। সব মিলিয়ে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করতে সরকারের খরচ হয়েছে দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। আগামী সাত বছরের মধ্যে এ খরচ উঠে আসবে বলে হিসাব করেছে উৎক্ষেপণকারী সংস্থা বিটিআরসি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এ স্যাটেলাইট থেকে সংযোগ নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানির পক্ষ থেকে সেবা নিতে ৪৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর ২০টি বাংলাদেশে ব্যবহারের জন্য এবং বাকিগুলো ভাড়া দেওয়া হবে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১