বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৯ November ২০১৮

সংসদ নির্বাচনের ইতিহাস

জাতীয় সংসদ সংগৃহীত ছবি


সম্প্রতি দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশে ১০টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক নজরে  দেখে নেয়া যাক বিগত দিনের জাতীয় নির্বাচনগুলো।

প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় ৩০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। আর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ছিল ১৫টি। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৩টিতে জয়লাভ করে। সেই নির্বচনে মোট ৫৪.৯% ভোট সংগৃহীত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু সে সময় ঢাকা-১২ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ঐ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ৭ এপ্রিল, তেজগাঁওয়ে অবস্থিত তৎকালীন জাতীয় সংসদ ভবনে।


দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হয়। সেবার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ছিল ৩০টি। সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ২ এপ্রিল। সেবারের নির্বাচনে বিএনপি ২০৭টি আসন পেয়ে জয় লাভ করে। সেবারের নির্বাচনে মোট ভোট সংগৃহীত হয়েছিল ৫১.৩%। আর আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৫৪টি আসন। উল্লেখ্য, ২য় সংসদেই প্রত্যক্ষ ভোটে খুলনা-১৪ থেকে প্রথমবারের মতো একজন নারী সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচিত সাংসদ সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ।

তৃতীয় সংসদ নির্বাচন
ভোটগ্রহণ হয় ১৯৮৬ সালের ৭ মে তারিখে। নির্বাচনে মোট ১,৫২৭ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করে। সেবারে জাতীয় পার্টি ১৫৩টি, আওয়ামী লীগ ৭৬টি আর জামায়াতে ইসলামী ১০টি আসন পায়। সেবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের উপস্থিতি ছিলো ৬১.১%। উল্লেখ্য, পূর্বের নির্বাচনের বিজয়ী বিএনপি এই নির্বাচনটি বর্জন করেছিল।

চতুর্থ সংসদ নির্বাচন
১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৫১টি। সংরক্ষিত মহিলা আসন সংক্রান্ত আইনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এই সংসদে মোট আসন সংখ্যা ছিল ৩০০টি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ বেশ কয়েকটি দল এই নির্বাচন বর্জন করেছিল। উল্লেখ্য সেবারের নির্বাচনেও ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫২.৫%।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেবার ৩০০টি আসনের বিপরীতে ৪২৪জন সতন্ত্র প্রার্থীসহ ৭৫টি দল থেকে মোট ২৭৮৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে বিএনপি ১৪০টি, আওয়ামী লীগ ৮৮টি আর জাতীয় পার্টি ৩৫টি আসনে জয়লাভ করে। এছাড়া নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে ৩০ জন মহিলাকে সাংসদ নির্বাচিত করা হয়। সেবারে মোট ভোট গৃহীত হয়েছিল ৫৫.৪%। উল্লেখ্য সেবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি সংবিধানের আন্তভূক্ত ছিল না। (বিএনপি) নির্বাচনে জয় লাভ করে এবং ৩০০টি আসনের মধ্যে ৩০০টি আসনই লাভ করে

ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় । আওয়ামী লীগ সহ অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচনটি বর্জন করেছিল। ফলে মোট ভোট গৃহীত হয়েছিল মাত্র ২১ শতাংশ। উল্লেখ্য,উক্ত নির্বাচনে বিএনপি ৩০০টি আসনের মধ্যে ৩০০টিই জয় লাভ করে। কিন্তু মাত্র চার কার্যদিবসে সংসদ বসার পর তা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন
১৯৯৬ সালের ১২ জুন তারিখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে। উক্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪৬, বিএনপি ১১৬ ও জাতীয় পার্টি ৩২টি আসনে জয়লাভ করে। পরে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন
ভোটগ্রহণ হয় ২০০১ সালের ১ অক্টোবর। অষ্টম সংসদের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৩০০টি। কারণ সংরক্ষিত মহিলা আসন সংক্রান্ত আইনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শুরুতে কোনো মহিলা আসন ছিল না। পরে আইন করে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ এ উন্নীত করা হয়। উক্ত নির্বাচনে ৪৮৪জন সতন্ত্র প্রার্থীসহ ৫৪টি দল থেকে মোট ১৯৩৫ জন প্রার্থী অংশ নেয়। উল্লেখ্য, সেবারের নির্বাচনে বিএনপি ১৯৩ আর আওয়ামী লীগ ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছিল। উক্ত নির্বাচনের মোট ভোটারের ৪১.৪০% বিএনপি এবং ৪০.০২% আওয়ামী লীগ পায়।

নবম সংসদ নির্বাচন
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পেয়েছিল ২৬৩টি আসন। আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট পায় ৩৩টি আসন। এই নির্বাচনটিই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নির্বাচন। নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ-এর নেতৃত্বাধীন সামরিক সরকারের অধীনে

দশম সংসদ নির্বাচন
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তারিখে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেবারে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছিল । ফলে ১৫৪ জন সাংসদ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই সাংসদ নির্বাচিত হন।

একাদশ সংসদ নির্বাচন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৮ আগামী ২৩ শে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।

বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১