আপডেট : ০৪ November ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আলোচনায় বসার পাশাপাশি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় সংলাপে তাদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আলোচনা আর আন্দোলন একসঙ্গে কীভাবে সম্ভব? যখন আলোচনা চলছে, তখনই আন্দোলনের কর্মসূচি। একদিকে আলোচনা, অন্যদিকে আন্দোলনের কর্মসূচি- এটা বোধগম্য নয়। তাহলে এটা কী ধরনের সংলাপ, কী ধরনের আলোচনা? জাতি এটা কীভাবে নেবে?’ গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জেলহত্যা দিবসে আওয়ামী লীগের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই সবার অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। সুষ্ঠুভাবে আগামী সংসদ নির্বাচন করতে সরকার সংলাপে বসেছে। সেখানেও বলেছি, কোনটা সরকার করতে পারে, কোনটা রাষ্ট্রপতির ও কোনটা নির্বাচন কমিশনের।’ তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জানিয়েছেন, রাজবন্দিদের মুক্তি চায়। আমরা বলেছি, রাজবন্দিদের তালিকা দিন। তাদের বিরুদ্ধে যদি খুনের মামলা না থাকে, যদি কোনো ক্রিমিনাল অফেন্স না থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। আমরা তো তাদের বন্দি করিনি।’ তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে কথা রয়েছে। তারা সংলাপ করতে চেয়েছে, আমরা করেছি। তারা যেসব দাবি দাওয়া দিয়েছে, আমাদের পক্ষে যা মানা সম্ভব, তা মানব। এরপর আরো অনেকের সঙ্গে আলোচনা করব।’ দশম সংসদ নির্বাচনে আগে খালেদা জিয়াকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলাম। পরে ওনার ছেলের মৃত্যুতে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বন্ধ দরজা থেকে ফিরে আসার বিরূপ অভিজ্ঞতার পরও বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসার ক্ষেত্রে জনগণের চিন্তাই মাথায় রেখেছেন বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে এবং মানুষ শান্তিতে ভোট দিক, তাদের পছন্দের সরকার বেছে নিক- সেজন্যই আমরা এ সংলাপে বসেছি, আলোচনা করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের অধীনে গত পাঁচ বছরে প্রায় ছয় হাজারের মতো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। ইউপি, পৌর ও উপনির্বাচন। এসব নিয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারেননি। কোথাও কারচুপি হয়নি। আগামী নির্বাচনও অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন করার আগে সার্চ কমিটি হয়েছে। সার্চ কমিটিতে প্রত্যেকটা দলের পক্ষ থেকে নাম গেছে। আমরা যেমন নাম দিয়েছি, বিএনপিও দিয়েছে। সবার মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। এই কমিশন নিয়ে তো প্রশ্ন থাকতে পারে না। কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হবে। মানুষ ভালো থাকুক, মানুষের ভালো হোক। দেশ ভালো থাকুক, বাংলাদেশের একেবারে তৃণমূলের মানুষটার জীবনও যেন উন্নত হয়। আওয়ামী লীগ সেটাই চায়। এত কাজ করেছি, তারপরও যদি জনগণ ভোট না দেয়, তাহলে তো কিছু করার নেই। এটা জনগণের ওপর নির্ভর করে। ভোটের মালিক জনগণ।’ এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী দিনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে আবার লুটেরা, খুনি অগ্নিসন্ত্রাসকারী, জঙ্গিবাদীরা, গ্রেনেড হামলাকারীদের কাছে চলে যাবে। এরা ক্ষমতায় গেলে মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না বরং আবার তারা অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘পনেরো আগস্টের মধ্য দিয়েই ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ৩ নভেম্বর জেলহত্যা তারই ধারাবাহিকতা। জাতির পিতা ও জাতীয় চার নেতা আমাদের মধ্যে নেই। তবে যে আদর্শ তারা রেখে গেছেন, সে আদর্শ অনুসারে দেশ গড়তে হবে।’ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের পরিচালনায় জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, ওবায়দুল কাদের এবং জেল হত্যাকাণ্ডে শহীদ জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরা।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১