আপডেট : ০৩ November ২০১৮
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পরিকল্পনা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটি বলছে, নভেম্বরের মাঝামাঝি প্রত্যাবাসনের যে সিদ্ধান্ত দেশ দুটি নিয়েছে তা রোহিঙ্গাদের আরো ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারে। তাই অবিলম্বে প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা স্থগিত করা উচিত। তা না হলে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে প্রশংসা পেয়েছিল সেটা হারাবে। ৩০ অক্টোবর জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে একটি ‘যথাযথ পরিকল্পনা’ নেওয়ার কথা জানায় মিয়ানমার ও বাংলাদেশ। ওই পরিকল্পনায় নভেম্বরের মাঝামাঝি প্রথম দফায় দুই হাজার রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানায় মিয়ানমার। সেই পরিকল্পনাই স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ। এদিকে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও। তাদের অভিযোগ, প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কোনো আলোচনাই করা হয়নি। গতকাল শুক্রবার এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটির শরণার্থী অধিকার বিষয়ক পরিচালক বিল ফ্রেলিক বলেছেন, মিয়ানমার সরকার প্রত্যাবাসন নিয়ে শুধু কথাই বলে যায়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন কিংবা পরিস্থিতির উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যদি জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নেয় তবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে প্রশংসা পেয়েছিল সেটা হারাবে। ফ্রেলিক বলেন, এই প্রত্যাবাসন পরিকল্পনার মাধ্যমে মিয়ানমার রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের সমালোচনা পাশ কাটাতে চাইছে। দাতা সংস্থাগুলোর এখানে অর্থায়ন করা উচিত নয়। কারণ এখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। বাংলাদেশের তৈরি করা রোহিঙ্গা তালিকায় স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার বিষয়টির প্রাধান্য দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত শত রোহিঙ্গা ফিরে যেতে চায়। তবে তার আগে মিয়ানমারে তাদের নিরাপত্তা, অধিকার, স্বাধীনতা ও জীবিকার নিশ্চয়তা চায়। আর কয়েক দিন আগে ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র আন্দ্রে মাজেহসিস বলেছিলেন, আমরা রাখাইনের পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট নই। তাই প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এই মুহূর্তে রাখাইনে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের কোনো সহায়তা করবে না ইউএনএইচসিআর। এ ছাড়া নভেম্বরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়টিকে ‘তাড়াহুড়ো ও অপরিপক্ব’ বলে আখ্যা দিয়েছে ইউএনএইচসিআর। গত জুনে মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিয়ে চুক্তি করে ইউএনএইচসিআর। এরপরও রাখাইনের প্রকৃত অবস্থা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় ৩০ অক্টোবর নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশ। সে সময় মিয়ানমার কর্মকর্তারা দাবি করেন, তারা পাঁচ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পর্যালোচনা করেছে। চলতি মাসেই ২ হাজার জনের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ১৫ নভেম্বর থেকে প্রতি সপ্তাহে ১৫০ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যাবে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১