বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ৩০ October ২০১৮

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা

খালেদার আপিলের রায় আজ

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সংগৃহীত ছবি


জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আপিলের রায় আজ। এরসঙ্গে একত্রে দণ্ডিত দুই আসামির খালাসের আপিল ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দণ্ড বাড়ানোর রিভিশন আবেদনেরও রায় হবে। এতে আপিল বিভাগের বেঁধে দেওয়া ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এ রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। আপিলের শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সাজা বাতিল করে তার খালাসের আরজি জানিয়েছেন। দুদকের আইনজীবী খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন চেয়েছেন। আর বিচারিক আদালতের দেওয়া পাঁচ বছরের সাজা বহালের আরজি জানিয়েছেন সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল।

খালাস চেয়ে করা তিন আপিল ও একটি রিভিশন আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। শুনানিতে (গতকাল) খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। তিনি ট্রাস্টের অর্থের উৎস জানতে খালেদা জিয়ার করা আবেদন একদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে আপিল বিভাগের আবেদন দাখিল করেন। এ সময় তিনি অর্থের উৎস নিয়ে অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদন করেও আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের উপস্থিত না থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর অতিরিক্ত সাক্ষ্য চেয়ে করা আবেদনটি নামঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ মামলার অন্য আসামিদের আপিলের রায় ঘোষণার জন্য আজ মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।

গত ১২ জুলাই থেকে এ মামলার আপিল ও দুদকের আবেদনে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। ৩২ কার্যদিবস শুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য করা হলো।

শুরু থেকে আপিলে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও আবদুর রেজাক খান। সরকার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান। কাজী সালিমুল হকের পক্ষে শাহ মঞ্জুরুল হক ও শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে মো. আহসান উল্লাহ শুনানিতে অংশ নেন।

গতকাল সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আপিল নিষ্পত্তি করতে খালেদা জিয়ার করা সময় বাড়ানোর পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন। এর ফলে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি শেষ করার নির্দেশ বহাল থাকে। এ ছাড়া ট্রাস্টের অর্থের উৎস জানতে অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন এক দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

গত ৯ জুলাই ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এরপর গত ৩১ জুলাই খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আরেকটি আবেদনে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। এই সময় আরো বাড়াতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে গতকাল তা খারিজ করেন আপিল বিভাগ।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন  ঢাকার পঞ্চম অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত।  রায়ের পর তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন । এ মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়াও আরো পাঁচ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আশি পয়সা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এরমধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। দণ্ডিত সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ কারাগারে আছেন।

রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের সত্যায়িত (সার্টিফায়েড) অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পরদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালাস চেয়ে আপিল করেন তারা। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্ট ৭ মার্চ অপর আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ১০ মে শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল গ্রহণ করেন।

গত ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদকের করা আবেদন গ্রহণ করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়া এ মামলায় চার মাসের অন্তর্বর্তীকালনি জামিন পান। কিন্তু জামিন পেলেও অন্য মামলা থাকায় তিনি মুক্ত হতে পারেননি। 

জরুরি অবস্থার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই খালেদা জিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ  ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে অন্যান্য মামলার সঙ্গে এ মামলায়ও খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মতিঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় জিয়া অরফানেজ  ট্রাস্টের নামে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১