বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৬ October ২০১৮

বিমানবাহিনীর উন্নয়নে আরো পরিকল্পনা আছে : প্রধানমন্ত্রী

যশোরে বিমানবাহিনী একাডেমিতে গতকাল নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি -বাংলাদেশের খবর


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে সর্বাধুনিক ও অগ্রসর বাহিনীতে পরিণত করতে চাই। ভবিষ্যতে এ বাহিনীর উন্নয়নে আমাদের আরো অনেক পরিকল্পনা আছে। আগামী নির্বাচনে যদি আমরা বিজয়ী হই তাহলে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে একত্রে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, কারো সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না বাংলাদেশ। কিন্তু কেউ যদি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে আঘাত হানে, তা মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। আক্রান্ত হলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। এ জন্য আরো আধুনিক ও চৌকস বাহিনী হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তোলা হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার যশোরে বাংলাদেশ এয়ার ফোর্স (বিএএফ) একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর বাসস

বিএএফ প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ব্রোঞ্জ নির্মিত আবক্ষমূর্তি উন্মোচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন। এর আগে তিনি বিএএফ একাডেমি প্রাঙ্গণে পৌঁছালে বিমানবাহিনী প্রধান চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিএএফ বেস-এর এয়ার অফিসার কমান্ডিং এয়ার ভাইস মার্শাল ফজলুল হক এবং বিএএফ একাডেমির কমাড্যান্ট এয়ার কমোডর যাবেদ তানভীর খান তাকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, তিন বাহিনী প্রধান, কূটনীতিক, সংসদ সদস্য, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমানবাহিনী গঠনের। তাঁর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তে স্বাধীনতার পরপরই বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয় সে সময়কার অত্যাধুনিক মিগ-২১, সুপারসনিক ফাইটার বিমানসহ পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, এয়ার ডিফেন্স রাডার। আমরা বিমানবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন অব্যাহত রেখেছি। আমাদের সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয় চতুর্থ প্রজন্মের অত্যাধুনিক মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান, সুপরিসর সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার। আমাদের সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০০৯ সাল থেকে বিগত বছরগুলোতে বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন ও অপারেশনাল সক্ষমতা বহুলাংশে বেড়েছে। ইতোমধ্যে বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান, অত্যাধুনিক স্যালুন হেলিকপ্টার, মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ হেলিকপ্টার ও আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি আধুনিক ও চৌকস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার জন্য তার সরকার বদ্ধপরিকর। এ জন্য ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অত্যাধুনিক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বিমানবাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু। আকাশসীমা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব বিবেচনায় কক্সবাজারে নতুন এয়ার ডিফেন্স রাডার স্থাপন করা হয়েছে। সমুদ্রসীমায় অনুপ্রবেশ, মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও চোরাচালানবিরোধী অভিযানসহ যেকোনো প্রয়োজনে বিমানবাহিনী সহায়তা দিয়ে আসছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নততর এবং যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ সুনিশ্চিত করতে অত্যাধুনিক জেট ও পরিবহন প্রশিক্ষণ বিমান, হেলিকপ্টার ট্রেইনার এবং এমআই সিরিজ হেলিকপ্টার সিম্যুলেটর সংযোজন করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমি আজ এমন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা উন্নত দেশের যেকোনো বিমানবাহিনী একাডেমির সমকক্ষ।

তিনি বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পরিবহন বিমান দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সত্ত্বেও সিলেট থেকে প্যারা কমান্ডো দলকে ঢাকায় পরিবহন করে। এ কমান্ডো দলটি জঙ্গি নির্মূলে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল করেছে।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি দিয়েছে এবং জাতিসংঘ ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সনদ দিয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না’। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভকারী বিজয়ী জাতি। আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচব।

প্রধানমন্ত্রী সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠান আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই মিলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি। আমি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করি।’

এর পরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমির বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স, বিমান সেনা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ১০৫ জেট ট্রেনিং ইউনিটের কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১