আপডেট : ২৫ October ২০১৮
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অপপ্রচার’ ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর ‘নিয়ন্ত্রণ’ আরোপের বক্তব্য থেকে সরে এসেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে ফেসবুক, গুগলের মতো সামাজিক যোগাযোগের নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে থাকবে বলে বক্তব্য দিলেও এখন বলছেন, ওইসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আসলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তবে নিরাপদ থাকার জন্য যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার সেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকরাও বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই অবাধ যুগে ফেসবুক-গুগলকে নিয়ন্ত্রণ করাটা সহজ নয়। তবে সরকার চাইলে দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে মাধ্যমগুলোর ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে পারে। শনিবার ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেছিলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য টেকনোলজিক্যাল কাজ চলছে, যা আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। তবে গত মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের খবরের পক্ষ থেকে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কীভাবে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব- প্রতিবেদকের এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রথমত আমি নিয়ন্ত্রণের কথা বলিনি। নিয়ন্ত্রণ শব্দটি নিয়ে আমার আপত্তি আছে। ফেসবুক-ইউটিউবকে নিয়ন্ত্রণ করার কী আছে। তারা নিজেদের মতন চলবে। তবে ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশের সকল নাগরিক, সমাজ এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা নিরাপদ রাখতে যা যা করা দরকার তা তো আমাদের করতেই হবে। তিনি বলেন, কেউ যদি বাংলাও না বোঝে তাহলে আমার কী বলার আছে। আমি বলেছি নিজেদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য কোথাও যদি কোনো কিছু আটকাতে হয় তাহলে তা আটকাব, কিছু মুছে ফেলতে হলে মুছে ফেলব। নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নই আসে না। আমি বরাবরই বলে এসেছি আমি নিজেদের নিরাপত্তা বিধান করতে চাই। মন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর একটাও বাংলাদেশি না। তারা আমাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মানে না। তারা নিজ দেশের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মানে। তাদেরকে আমি আদর-যত্ন করে যে আমাদের দেশের স্ট্যান্ডার্ড মানাতে পারব সেই সম্ভাবনাও কম। তাই এখন যে অবস্থায় আছে সেখান থেকেই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। আর এই ব্যবস্থা করতে আমাদের যে প্রযুক্তি দরকার তার সবই করা হবে। সেটা সফটওয়্যার হোক হার্ডওয়্যার হোক আর জনবলই হোক। তিনি বলেন, এখন শুধু নিজের দেশের অপরাধকেই নয়, আন্তর্জাতিক অপরাধগুলোতেও আমাদের নজর রাখতে হচ্ছে। দেশে বসেই যে মানুষ অপরাধ করছে তা নয়, বিদেশে থেকেও বাংলাদেশে অপরাধ করছে। আমাদেরকে তো সেগুলো নজরদারিতে রাখতে হবে। এ বিষয়ে সফটওয়্যার আমদানি-রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি আলমাস কবির বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ফেসবুক-গুগলকে আসলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। ফেসবুক তার নিজের গাইডলাইন অনুযায়ী চলে, তাই সে আমাদের কথা শুনবে কি শুনবে না এটা একান্তই তার ব্যাপার। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে এখনো তাদেরকে বাধ্যগত করার অবস্থায় আসতে পেরেছি কি না সেটা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। তবে শনিবার ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেছিলেন, আগামী (নভেম্বর) মাস থেকে ফেসবুক, ইউটিউব ও গুগল নিয়ন্ত্রণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ মাসেই সব ধরনের ডিভাইস আসবে। এর মাধ্যমে নির্বাচনকে ঘিরে অপপ্রচার, গুজব ও মিথ্যা তথ্য প্রতিরোধ করতে সক্ষম হব। আমরা আর পিছিয়ে নেই, অনেক দূর এগিয়েছি। ফেসবুক একসময় আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত না করলেও এখন শুনছে। আমাদের দেশীয় আইনকানুন অনুযায়ীই তারা চলবে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১