আপডেট : ২৩ October ২০১৮
নতুন করে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিং বা স্পট ফিক্সিংয়ের মতো অভিযোগ তুলল কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরা। চ্যানেলটি কয়েক মাস আগেও গোপন ক্যামেরা অভিযান চালিয়ে একই দাবি তোলে এবং এ নিয়ে তারা ক্রিকেটবিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করে। তবে যে দেশটি ক্রিকেটের ‘ক’ও বোঝে না, তাদের টিভি চ্যানেলের এভাবে ফিক্সিং অভিযোগ নিয়ে তথ্য প্রকাশকে দুরভিসন্ধিমূলক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্ব ক্রিকেটে কাতারের কোনো স্থানই নেই। টেস্ট তো দূরের কথা, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি কিংবা মহিলা র্যাঙ্কিংয়ের কোথাও নেই কাতারের নাম। এই দেশটির টিভি চ্যানেলের ক্রিকেটকে ‘পরিচ্ছন্ন’ করার এই চেষ্টাকে কিছুটা হলেও অমূলক মনে হচ্ছে। আইসিসির উচিত আলজাজিরার তথ্যকে অবহেলা না করা, পাশাপাশি খুব বেশি গুরুত্বও না দেওয়া। যেসব ম্যাচে গড়াপেটা হয়েছে বলে অভিযোগ, তার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে, হল্যান্ড, কেনিয়া ও আফগানিস্তানের ম্যাচ রয়েছে। টেস্ট প্লেয়িং দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাম নেই তালিকায়। অর্থাৎ ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত প্রায় সব দেশই রয়েছে অভিযোগের তালিকায়। সব দেশকে ফাঁসানোর অর্থ এটাও তো হতে পারে ক্রিকেটকেই ধ্বংস করার প্রচেষ্টা। আলজাজিরা এবার আরো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছে। ২০১১-১২ ক্রিকেট মৌসুমে গড়াপেটা হয়েছে, এমন ১৫টি ম্যাচের তালিকা এবার প্রকাশ করেছে চ্যানেলটি। যার মধ্যে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একাধিক ম্যাচ রয়েছে। আছে ২০১১ ঘরের মাঠের ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের ম্যাচটি। যেখানে চমক দেখিয়ে ২ উইকেটের জয় পেয়েছিল টাইগাররা। এছাড়া রয়েছে বেশ কয়েকটি টেস্ট ম্যাচ। এর আগে আলজাজিরার প্রতিবেদনে কাঠগড়ায় উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো দেশ। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট দুই দেশের বোর্ড। এই গড়াপেটা চক্রের অন্যতম সুনীল মুনাওয়ার এবার ফোনে ও গোপন ক্যামেরার সামনে সরাসরি বলে দিয়েছেন, ২০১১-১২ মৌসুমে কোন কোন ম্যাচে গড়াপেটা হয়েছে, যা তার ফোনের কথাবার্তা রেকর্ড করে জানা গেছে বলে দাবি ওই চ্যানেলের। ২০১১ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠ চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের কঠিন ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করা ইংলিশদের ৪৯.৪ ওভারে ২২৫ রানে অলআউট করে টাইগাররা। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে দারুণ জয় তুলে নেয় সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে স্বাগতিকরা। ২০১১ সালে ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার আয়োজনে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পাঁচটি ম্যাচে ও ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচেও এই ধরনের সেশন ফিক্সিং বা স্পট ফিক্সিং হয়েছে বলে অভিযোগ, যা মুনাওয়ারের কথার রেকর্ডিংয়ে জানা যায়। তার দাবি, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের বহু ক্রিকেটার এই গড়াপেটায় যুক্ত রয়েছেন। চ্যানেলটির দাবি, গড়াপেটার বাজিকররা ২৬টি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, তার মধ্যে ২৫টিই সঠিক ছিল। অভিযোগ, কয়েকটি ম্যাচে ৮-১০ ওভারের একাধিক সেশন গড়াপেটাও ছিল। এমনকি কয়েকটি ম্যাচে দুই দলের ক্রিকেটারদেরই গড়াপেটায় জড়িয়ে নেওয়া হয়। আলজাজিরার দাবি, কোন ম্যাচে কোন সেশন গড়াপেটা হয়েছিল, তার বিস্তারিত তথ্যও নাকি তাদের কাছে আছে। কিন্তু সেগুলো তারা এখন প্রকাশ করবে না পরবর্তীকালে সম্ভাব্য আইনি তদন্তের স্বার্থে। এদিকে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ এই চ্যানেলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। তাদের কাছে যা গোপন তথ্য ও প্রমাণ রয়েছে, তা আইসিসিকে দিতে অনুরোধ করেছে। অবশ্য আইসিসির উচিত আলজাজিরার এসব তথ্য প্রকাশের ভেতরের খবরকেও বিবেচনায় আনা। তাদেরও তো ক্রিকেটকে বিতর্কিত করার চেষ্টা থাকতে পারে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১