দিনাজপুরের পার্বতীপুরে নারী সহকর্মীর হাতে মন্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অপদস্থের ঘটনার তদন্ত কাজ শুরু করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিজেই।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা ৬ ঘন্টায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা আফরোজা খাতুন, প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানসহ ৮ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এদিকে, অভিযোগকারী প্রধান শিক্ষক, অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা ও স্কুল কমিটির সভাপতিসহ জবানবন্দি প্রদানকারী অন্যান্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত শিক্ষিকা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে আসছিলেন।

তাদের দাবী- সময়মত এসব অভিযোগের সুষ্ঠ তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।

তদন্ত কর্মকর্তা পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তদন্তকালে অভিযোগকারী প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত শিক্ষিকা ছাড়াও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাহবুর রহমান, সহ-সভাপতি মিজাউর রহমান, সহকারী শিক্ষক জোবায়দুর রহমান, রুপালি পারভীন, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য বাবর আলী বাবু ও দপ্তরী-কাম নৈশ্যপ্রহরী মাহমুদুর রহমানসহ ৮ জনের জবান বন্দি গ্রহণ করা হয়। এসময় তদন্ত কাজে সহযোগিতা করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সহকারী আব্দুল মান্নান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সহকারী মরিয়ম নেছা। তিনি বলেন, তদন্ত শেষ করে স্বল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে এবং দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর সোমবার সকালে মন্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান তার দপ্তরে উপজেলা শিক্ষা সমন্ময় কমিটির মাসিক সভার সিদ্ধান্তের উপর এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন। আলোচনায় প্রধান শিক্ষক সরকারিবিধি অনুযায়ী স্কুলের সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। এসময় তিনি সুনির্দিষ্ট ভাবে দুই একজন শিক্ষকের দায়িত্ব পালনে অনিয়মের উল্লেখ করে সর্তক করে বক্তব্য রাখলে সহকারী শিক্ষিকা আফরোজা খাতুন আচমকা পায়ের জুতা খুলে প্রধান শিক্ষকের দিকে তেড়ে যান ও তাকে লাঞ্চিত করে। এঘটনায় ক্ষুদ্ধ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গ্রামবাসী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে অভিযুক্ত শিক্ষিকা আফরোজা খাতুনকে দ্রুত অনত্র বদলী করার দাবী সম্বলিত আবেদন আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরে জমা দেন। এছাড়াও দাবী পূরন না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে মন্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে তারা ঘোষনা দেন।