আপডেট : ১৮ October ২০১৮
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে উপজেলার পূর্ব হাটিল ইউনিয়নের পূর্ব হাটিলা গ্রামে প্রবাসী ভগ্নিপতির সঙ্গে পরকিয়া প্রেমের জেরে ছোট বোন আইরিন আক্তার ও স্বামী হযরত আলীর হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন নাসরিন আক্তার রিভা (২০) নামের গৃহবধু। এ ঘটনায় আইরিন আক্তার ও হযরত আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা পুলিশ কার্যালয়ে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। নিহত গৃহবধূ আইরিন সুলতানা রিভা হাটিলা গ্রামের বেপারী বাড়ীর প্রবাসী আব্দুর রহিমের মেয়ে। রিভা হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পাশ করেন। অভিযুক্ত স্বামী হযরত আলী চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের মনিহার গ্রামের তোরাব আলী মুন্সি বাড়ীর রুহুল আমিন মাস্টারের ছেলে। নাসরিনের ছোট বোন আইরিন আক্তার রেখা (১৬) স্থানীয় টঙ্গীরপাড় হাটিলা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যায়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। চলতি বছরের মার্চ মাসে নাসরিনের সাথে হযরত আলীর বিয়ে হয়। বিয়ের পরে সে দুবাই চলে যায়। বিয়ের পরেই নাসরিনের ছোট বোন রেখার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুবাই থেকে থেকে নিয়মিত রেখার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। চলতি মাসের ৮ তারিখে গোপনে দেশে আসেন আলী। প্রেস ব্রিফিং বলা হয়, গত ৯ অক্টোবর ওই গ্রামের বেপারী বাড়ীতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে নাসরিনের ছোট বোন আইরিন ও স্বামী হযরত আলী রাতের বেলায় নাসরিনের পায়ে উড়না পেচিয়ে পা চেপে ধরে এবং হযরত আলী মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। ওই সময় নাসরিন সজাগ হয়ে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে হযরত আলী বালিশ ফেলে দিয়ে নাসরিনকে গলা চেপে ধরে। ওই অবস্থায় নাসরিন চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ সময় অভিযুক্তরা মনে করে নাসরিনের মৃতু হয়েছে। নাসরিনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হযরত আলীকে অপর দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে ছোট বোন আইরিন এবং বাড়ীর লোকজনকে ভিতরের আরেকটি দরজা খুলে দিয়ে সেও জ্ঞান হারানোর ভান ধরে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে। এরপর ওই বাড়ীর বাসিন্দা ফেরদৌসি আক্তার মিনুসহ লোকজন নাসরিন ও আইরিনকে প্রথমে হাজীগঞ্জ বিসমিল্লাহ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরবর্তীতে তাদেরকে কুমিল্লা সিটি প্যাথ হসপিটালে নিয়ে যান। ওই হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ অক্টোবর রাতে নাসরিনের মৃত্যু হয়। ওই রাতেই কুমিল্লা হাসপাতাল থেকে নিহত নাসরিনের মরদেহ ও ছোট বোন আইরিনকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা আব্দুর রহিম গত ১৪ অক্টোবর হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহম্মদকে। তিনি গত ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় একই উপজেলার বাকিলা বাজার থেকে অভিযুক্ত হযরত আলীকে আটক করেন। তার কথানুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত নাসরিন আকতার রিভার ছোট বোন আইরিন আকতার রেখাকে গতকাল বুধবার তার বাড়ী থেকে পুলিশ আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে হযরত আলী পুলিশকে জানান, ঘটনার আগে সে এক আত্মীয়ের বাড়ীতে ছিলেন। ওই রাতে পরকিয়া প্রেমিক শ্যালিকা আইরিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই বাড়ীতে আসেন। এর আগে থেকে আইরিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক এবং শারীরিক সম্পর্ক হয়। পরে পুলিশ হযরত আলী ও আইরিন আক্তারকে চাঁদপুর আদালতে পাঠালে অভিযুক্ত হযরত আলী আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১