আপডেট : ১৭ October ২০১৮
পাহাড়ে এখন চলছে পাকা ধান কাটার ভরা মৌসুম। এরপর শুরু হবে তিল, তুলা ও আদা-হলুদসহ অন্য ফসল ঘরে তোলার পালা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। জুম চাষ পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী চাষাবাদ পদ্ধতি বলে চাষিদের এই ফসল আবাদ থেকে ফেরানো যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে জুমে নতুন জাতের ধান বপন ও পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট আউশ মৌসুমের বিরি-২৪, বিরি-২৬, বিরি-২৭ সহ গবেষণায় পরীক্ষাধীন দুটি জাতের ধান পরীক্ষামূলকভাবে খাগড়াছড়িতে আবাদ করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সফর উদ্দিন জানান, প্রদর্শনী প্লটেও জুমের আবাদ ভালো হয়েছে। চারটি জাতের মধ্যে বিরি-২৪ ও বিরি-২৭’র ফলন সবচেয়ে বেশি হয়েছে বলে তিনি জানান। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে চলতি মৌসুমে প্রায় ১৯ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার জুমিয়া পরিবার জুম চাষ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জুমের আবাদ হয়েছে বান্দরবান পার্বত্য জেলায়। বান্দরবানে ২৮ হাজার পরিবার প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে জুমের আবাদ করেছে। রাঙামাটিতে ৫ হাজার পরিবার সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে এবং খাগড়াছড়িতে ৬ হাজার ৬৮২ পরিবার ৫ হাজার ৩৬২ হেক্টর জমিতে আবাদ করেছে। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫২ হেক্টর জমিতে কোম্পানি, গেলংবিন্নি ও চড়ুইসহ ১৩ প্রজাতির ধান চাষ হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে লাঙ্গলে চাষাবাদের জমির পরিমাণ খুবই কম। ফলে উপজাতিরা জীবন ধারণের একমাত্র উপায় পাহাড়ে আদিযুগের প্রথানুযায়ী জুম চাষের ফসল উৎপাদন করে থাকে। সাধারণত পৌষ-মাঘ মাসে মালিকানাধীন কিংবা পরিত্যক্ত ঘন বন-জঙ্গল, পাহাড় নির্বাচন করে জঙ্গল কাটা শুরু হয় এবং ফাল্গুন-চৈত্র মাস পর্যন্ত প্রখর রোদে শুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করা হয়। ন্যাড়া পাহাড়ে বৈশাখের প্রথম বৃষ্টিতে প্রথম বীজ ধান বপন এবং পরে বিভিন্ন তরিতরকারির বীজ বপনসহ নানা ধরনের ঔষধি, সবজি রোপণ করা হয়। বর্তমানে জুম চাষের উৎপাদিত ফসলের মধ্যে রয়েছে মারপা (শসা জাতীয়) বরবটি, শিম, বেগুন, চিকন মরিচ, ধনিয়া, কুমড়া, ঢেঁড়শ, বাতিমা, কচুসহ নানা ধরনের বর্ষাকালীন সবজি। জুমচাষি খগেন্দ্র ও হরি ত্রিপুরা জানান, এবার প্রথম থেকে আবহাওয়া ছিল অনুকূলে। চৈত্র-বৈশাখ মাসে জুমের লতাগুল্ম পুড়ে ফেলার জন্য ছিল প্রখর রোদ। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে ধানসহ বিভিন্ন ফলের চারা গজিয়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত বৃষ্টি ছিল। ব্যাপকহারে ভূমিধসের আশঙ্কা থাকলেও ভূমিধস কম হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতি থেকে বেঁচে গেছেন। ফলে এবার জুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। খাগড়াছড়ি শহরের আলুটিলা-দীঘিনালা সড়কের বিভিন্ন স্থানে জুমে উৎপাদিত পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১