বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৪ October ২০১৮

ধর্মীয় শিক্ষা হবে জীবন ও জীবিকানির্ভর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংরক্ষিত ছবি


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা হতে হবে জীবন ও জীবিকানির্ভর। খেয়াল রাখতে হবে, ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিতরা যাতে সমাজে মর্যাদার সহিত মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সেই লক্ষ্যে ঢেলে সাজাতে হবে।’ তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান শেষে দেশে ফিরে গতকাল সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে শাশ্বতকাল থেকেই শিক্ষার শুরু ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে। মুসলমানরা গিয়েছে মক্তব-মাদরাসায় আর হিন্দুরা শিক্ষা শুরু করেছে টোলে। কিন্তু অগ্রসরমান ইতিহাসের চলার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের ধর্মীয় শিক্ষাকে কখনো আধুনিকীকরণ করা হয়নি। ফলে মাদরাসায় শিক্ষিত যুবকদের অবহেলার শিকার হতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অস্বীকার করার উপায় নেই, আমাদের দেশের সাধারণ, গরিব-দুঃখী মানুষের একটি বিরাট অংশ মাদরাসায় লেখাপড়া করে। অথচ উপযুক্ত স্বীকৃতির অভাবে তাদের দুঃখদৈন্য ও অবহেলায় জীবন কাটাতে হয়। কওমি মাদরাসার উচ্চতর ডিগ্রিকে সাধারণ শিক্ষার মাস্টার্স ডিগ্রির সমমর্যাদা দিয়ে আমাদের সরকার মাদরাসা শিক্ষাকে মর্যাদাবান, অর্থবহ ও আধুনিক শিক্ষার পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। মেইনস্ট্রিম শিক্ষাব্যবস্থায় ডিগ্রিপ্রাপ্তদের সঙ্গে তারাও এখন একই মর্যাদায় সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে ও জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে সকল সুযোগ সুবিধার অধিকারী হবে।’

কওমি মাদরাসার স্বীকৃতির বিল পাস করায় হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেবেন বলে প্রকাশিত খবরের প্রতি সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য সুখবর। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’ প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের রাজধানীর শাপলা চত্বরের সেই ভয়াল তাণ্ডবের কথা। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ধর্মে বিশ্বাস করি, কিন্তু ধর্মান্ধ নই। ধর্মের প্রতি সব সময়ই গভীর বিশ্বাস ও অনুভূতি আমাদের মাঝে কাজ করে। সেদিন শাপলা চত্বরের হেফাজতের কর্মকাণ্ডকে উসকে দেওয়ার জন্য একটি মহল প্রকাশ্যে মদত দিয়েছিল। বিশেষ করে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া হেফাজতের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য তিনি ঢাকাবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন। সকালবেলা ২০০ গরু জবাই করে খাওয়ানোর জন্য বিএনপি মহানগরের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু গোটা জাতি স্বস্তির সঙ্গে প্রত্যক্ষ করেছে আমরা সম্পূর্ণ অহিংস পন্থায় সেই ভয়াবহ পরিস্থিতির পরিসমাপ্তি টেনেছিলাম। সেই হেফাজতে ইসলাম যদি আমাদের সংবর্ধনা দেয়, সেটা হবে আমাদের জন্য গৌরবের।’

উল্লেখ্য, কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সর্বোচ্চ সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সোমবার চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সংস্থার সভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে ঢাকায় বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেওয়ার লক্ষ্যে কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। ওই বৈঠকে শাহ আহমদ শফি বলেন, ‘অতীতে বহু নেতা, বহু সরকার কওমি মাদরাসার যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ কথা রাখেননি। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা রেখেছেন। আমরা আমাদের যোগ্য স্বীকৃতি পেয়েছি। এজন্যই শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১