বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৩ October ২০১৮

আসামে বিজেপির তিন ‘ডি’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা

আসাম রাজ্য সরকার তিনটি ‘ডি’ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে সংগৃহীত ছবি


বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে ‘মাতি’ বা ‘মাথি’ বলে একটা কথা প্রচলিত রয়েছে। এর মূলকথা হলো, বিশেষ কোনো বিষয় নিয়ে কথা বা আলোচনা শুরু হলে অন্য সবকিছু ফেলে শুধু ওই একটি বিষয়কে নিয়েই সবাই ‘মেতে’ ওঠে। জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে যত জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণই হোক না কেন, অন্য সব বিষয় আড়ালে চলে যায়। এর ফলে দেশ ও জনগণকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।

এভাবে শুরু করার কারণ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের দিকে দৃষ্টি ফেরাতে হবে। দেখা যাবে, এই মুহূর্তে সবাই ‘মেতে’ আছেন কথিত জাতীয় ঐক্য এবং ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গড়ে উঠি উঠি অবস্থায় থাকা যুক্তফ্রন্টকে নিয়ে। সেখানেও আবার কথা আছে। যুক্তফ্রন্টের সম্ভাবনা নিয়ে আশংকার কারণ তৈরি করেছেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী— যাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অসম্মানজনকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে প্রচারণা রয়েছে। শুরু থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এলেও সম্প্রতি হঠাৎ করেই তিনি বলে বসেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীকে ২০-দলীয় জোট থেকে বের না করে দিলে বিএনপিকে যুক্তফ্রন্টে নেওয়া হবে না।

অথচ মাত্র ক’দিন আগে পর্যন্তও বি. চৌধুরীর অবস্থান কিন্তু এরকম ছিল না। বিএনপি এমনকি জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দিয়েই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। জামায়াত ছাড়া ২০-দলীয় জোটের অন্য সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপি এমনকি নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত ২২ সেপ্টেম্বরের সমাবেশেও যোগ দিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই পিছুটান দিয়েছেন বি. চৌধুরী। আগে থেকে ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও তিনি শুধু নাট্যমঞ্চের সমাবেশেই যাননি, একই সঙ্গে সমঝোতার কফিনে পেরেক ঠুকে আবারো জামায়াতে ইসলামীকেই প্রাধান্যে নিয়ে এসেছেন। বলেছেন, তার এবং ‘তাদের’ সঙ্গে থাকতে হলে বিএনপিকে ২০-দলীয় জোট থেকেও জামায়াতকে বের করে দিতে হবে। অর্থাৎ জামায়াত যদি ২০-দলীয় জোটে থাকে, তাহলে বিএনপিকে ‘তাদের’ সঙ্গে নেওয়া হবে না! এ ধরনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে বি. চৌধুরী বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি এবং ‘তারা’ এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন যে, বিএনপির মতো বৃহৎ একটি দলকেও তার এবং ‘তাদের’ নির্দেশনা মেনে চলতে হবে!

বিএনপির পক্ষ থেকে সরাসরি জবাব দেওয়ার পরিবর্তে নীরবতা অবলম্বন করা হলেও রাজনীতির মাঠে বোমা ফাটিয়েছেন কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম। স্বাধীনতা যুদ্ধের দিনগুলো থেকে জিয়াউর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন এবং সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) অলি বছর কয়েক আগে পর্যন্তও বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন। পরবর্তীকালে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) নামে পৃথক দল গঠন করলেও তিনি এখনো ২০-দলীয় জোটের সঙ্গে রয়েছেন। বিকল্পধারা ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৃহত্তর কোনো জাতীয় ঐক্যে যাবে না বলে বি. চৌধুরী যে ঘোষণা দিয়েছেন, তার তীব্র সমালোচনা করে গত ২৮ সেপ্টেম্বর দলীয় এক অনুষ্ঠানে অলি আহমদ বলেছেন, ব্যাপারটা ‘মাংস হালাল কিন্তু ঝোল হারাম’-এর মতো হয়ে গেছে। (দৈনিক ‘বাংলাদেশের খবর’, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮)

নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কর্নেল (অব.) অলি কিছু ঐতিহাসিক তথ্যের উল্লেখ করেছেন। যেমন তিনি বলেছেন, বি. চৌধুরী যখন বিএনপির মহাসচিব, পাকিস্তান আমলের মুসলিম লীগ নেতা শাহ আজিজুর রহমান তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এই শাহ আজিজ যে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখার জন্য পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘেও গিয়েছিলেন, সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে কর্নেল (অব.) অলি আরো দু’-একজনের নাম উল্লেখ করেছেন, বি. চৌধুরী বিএনপির মহাসচিব থাকার সময় যারা মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নামও বলেছেন কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। জামায়াতের আমির এবং সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে যে দুই নেতা সেই চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন— যে জোটের একজন নেতা হিসেবে বি. চৌধুরী প্রথমে মন্ত্রী এবং পরে দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।

বক্তৃতার এই পর্যায়ে এসেই কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, নিজে মহাসচিব থাকার সময় বি. চৌধুরী স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রী শুধু নয়, প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বানিয়েছেন, পরবর্তীকালে তাদের সঙ্গে মন্ত্রিত্ব তো করেছেনই, তাদের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত হয়েছেন। সেই একই ব্যক্তিরা এতদিন পর হঠাৎ ‘রাজাকার’ ও ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ হলেন কীভাবে? জামায়াতে ইসলামী যে চারদলীয় জোটেরও দ্বিতীয় প্রধান শরিক দল ছিল— কথাটা স্মরণ করিয়ে দিয়েই কর্নেল (অব.) অলি বলেছেন, বিষয়টি কি ‘মাংস হালাল কিন্তু ঝোল হারাম’-এর মতো হয়ে গেল না?

এভাবে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আরো কিছু বিষয় নিয়েও ‘মাতামাতি’ চলছে। অন্যদিকে আড়ালে চলে যাচ্ছে জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য অনেক বিষয়। এ প্রসঙ্গে ভারতের বাংলাদেশ সংলগ্ন রাজ্য আসাম থেকে কথিত অবৈধ বাংলাদেশিদের বিতাড়িত করার কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করতেই হবে। কারণ আসামের নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে নতুন পর্যায়ে বিতর্কের সূত্রপাত করেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতারা। বিগত কয়েকদিনে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বিজেপির অত্যন্ত প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব রাজধানী নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এনআরসি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন, আসাম রাজ্যে তাদের সরকার তিনটি ‘ডি’ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। প্রথম ‘ডি’র অর্থ ডিটেক্ট বা শনাক্ত করা। রাজ্যটিতে যেসব অবৈধ বিদেশি রয়েছে প্রথমে তাদের শনাক্ত করা হবে। বর্তমানে এনআরসির মাধ্যমে শনাক্ত করার কার্যক্রমই চালানো হচ্ছে।

এরপর দ্বিতীয় ‘ডি’র মাধ্যমে অবৈধ বিদেশিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার বা ডিলিট করার কার্যক্রম শুরু হবে। তারা আর কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে না। সবশেষে অর্থাৎ তৃতীয় পর্যায়ের ‘ডি’ হিসেবে আসবে ডিপোর্ট করার বা ভারত তথা আসাম থেকে বের করে দেওয়ার পালা। এনআরসি থেকে বাদ পড়া অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বাংলাদেশে ডিপোর্ট করা হবে বলেও ঘোষণা করেছেন বিজেপির ওই নেতা।

বিশেষ কিছু কারণে মিস্টার রাম মাধবের বক্তব্য ও ঘোষণাকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হয়েছে। প্রথমত, তিনি শুধু বিজেপির অত্যন্ত প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদক নন, বাংলাদেশ সংক্রান্ত নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রেও তাকে অন্যতম একজন ফ্যাক্টর বা নির্ধারক হিসেবে মনে করা হয়। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে বাংলাদেশের যত রাজনৈতিক নেতা ভারতে যান, তাদের সবাই বিজেপির এই প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করে থাকেন। বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে মিস্টার রাম মাধবই বাংলাদেশের মন্ত্রী, নীতিনির্ধারক এবং রাজনৈতিক নেতাদের তাদের করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।

দ্বিতীয় বিশেষ কারণ হলো, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আসামের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিতর্ক চললেও মিস্টার রাম মাধবের আগে বিজেপির উচ্চ পর্যায়ের কেন্দ্রীয় আর কোনো নেতা এতটা প্রত্যক্ষভাবে অবৈধ বসবাসকারীদের সরাসরি বাংলাদেশি হিসেবে উল্লেখ বা চিহ্নিত করেননি। সব দেশ রেখে কেবল বাংলাদেশে ডিপোর্ট করার ঘোষণাও আর কেউ দেননি।

এসব কারণেই মিস্টার রাম মাধবের ঘোষণায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অমিত শাহ কলকাতার এক জনসভায় ঘোষণা করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস এবং ভারতের প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল কংগ্রেস যত বিরোধিতাই করুক না কেন, আসামে তো বটেই, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের অন্য কোনো রাজ্যেও কোনো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে থাকতে ও বসবাস করতে দেওয়া হবে না। কারণ ব্যাখ্যাকালে বিজেপি সভাপতি বলেছেন, বাংলাদেশের এসব অনুপ্রবেশকারী ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির সৃষ্টি করছে। এজন্যই নাগরিকপঞ্জি তৈরি করার মাধ্যমে রাজ্যে রাজ্যে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাদের ডিপোর্ট বা বহিষ্কার করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকার কোনো বিরোধিতা বা প্রতিবাদের মুখেই এনআরসির কার্যক্রম বন্ধ করবে না বলে ঘোষণা করেছেন অমিত শাহ।

উল্লেখ্য, এরও কয়েক মাস আগে বিজেপির একই প্রেসিডেন্ট কলকাতারই এক সমাবেশে বলেছিলেন, আসামে বসবাসরত যে ৪০ লাখ মানুষের নাম নাগরিকপঞ্জি তথা নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, তাদের সবাই অবৈধ ‘বাংলাদেশি’। এসব বাংলাদেশিকে বের করে দেওয়া হবে। শুধু আসাম প্রসঙ্গে বলেই থেমে যাননি বিজেপির প্রেসিডেন্ট। অমিত শাহ আরো বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গেও লাখ লাখ বাংলাদেশি রয়েছে এবং তাদের সবাইকেও বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠানো হবে। নিজের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজেপির প্রেসিডেন্ট সেবার বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি অবৈধ বাংলাদেশিদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন! মমতার এই ভোটের রাজনীতির অবসান ঘটানোর জন্যই লাখ লাখ অবৈধ বাংলাদেশিকে বের করে দেওয়া হবে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ এবং প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের বক্তব্য ও ঘোষণাকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। দুজনের বক্তব্যেই পরিষ্কার হয়েছে, আসামের নাগরিক পঞ্জিকেন্দ্রিক সঙ্কটে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে বিপদে পড়তে যাচ্ছে। কিন্তু উদ্বেগের কারণ হলো, বিষয়টি নিয়ে আসামের রাজ্য সরকার এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার উদ্দেশ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি, রাজনৈতিক দলগুলোও তেমনি নীরবতাই অবলম্বন করে চলেছে। তারা ‘মেতে’ আছে শুধু যুক্তফ্রন্ট গঠন এবং সরকারের পতন নিয়ে!

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য আশার কথা শুনিয়েছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে নিউইয়র্ক অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন, ভারতে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি থাকার খবর ভিত্তিহীন। গত ১ অক্টোবর দৈনিক বাংলাদেশের খবরে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা বোধহয় ভারতের পলিটিকস। তারা বলছেন, কিন্তু আমি মনে করি না, কোনো অবৈধ বাংলাদেশি সেখানে আশ্রয় নিয়েছে।’ নিজের এই ধারণার কারণ জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী এবং মজবুত। এমন অবস্থায় বাংলাদেশিরা কেন ভারতে গিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করবে? ভারতীয়দের কেউ যদি এটা বলেন তবে সেটা তাদের ব্যাপার। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে যখন কথা হয়েছিল তখন তিনি বলেছিলেন, এ ধরনের বাংলাদেশিদের ফেরৎ পাঠানোর মতো কোনো চিন্তা তাদের নেই।’

বলা দরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণা ও বক্তব্য বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন সচেতন মহলে আশাবাদের সৃষ্টি করবে। কারণ, রাজনৈতিক দলগুলো সবকিছু ফেলে ‘মাতি’ বা ‘মাথি’ কথাটা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বলেই অবস্থার সুযোগ নিয়ে ভারতের বিজেপি সরকার প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে ‘অবৈধ ও অনুপ্রবেশকারী’ বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অথচ খোদ ভারতেরই বিভিন্ন দল ও সংস্থার জরিপ, তথ্যনির্ভর পর্যালোচনায় দেখা গেছে এবং প্রমাণিতও হয়েছে, যাদের ‘অবৈধ ও অনুপ্রবেশকারী’ বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা এবং বহিষ্কারের পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে, তারা জন্মসূত্রসহ সব বিচারেই ভারতীয় নাগরিক।

আসামের নাগরিক পঞ্জিকেন্দ্রিক বিতর্ক ও ঘটনাপ্রবাহে বাংলাদেশ বিপন্ন হতে চলেছে বলেই সরকারের উচিত অবিলম্বে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা করা এবং সমঝোতায় পৌঁছানো, যাতে ভারতের কোনো একজন নাগরিককেও ‘অবৈধ ও অনুপ্রবেশকারী’ বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা এবং বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো সম্ভব না হয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলিষ্ঠভাবে দেশপ্রেমিকের ভূমিকা পালন করবেন বলেই আশা করেন দেশের সচেতন সব মহল।

লেখক : সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষক


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১