বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ৩০ September ২০১৮

গঠন করা হবে জাতীয় উদ্ভাবন তহবিল


দেশীয় উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার উন্নয়ন, সুরক্ষা, সংরক্ষণ ও বাণিজ্যিকীকরণের জন্য একটি জাতীয় উদ্ভাবন তহবিল গঠন ও ব্যবস্থাপনার বিধান রেখে ‘জাতীয় উদ্ভাবন ও মেধাসম্পদ নীতিমালা ২০১৮’ চূড়ান্ত করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। মেধাসম্পদ সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সুবিধা অর্জনের লক্ষ্যে এ তহবিল গঠন করা হবে। তহবিলের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, সৃজনশীলতা ও সার্বিকভাবে দেশের উদ্ভাবনী ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন এবং মেধাসম্পদ অধিকারকে ব্যবসায়িক উন্নতির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের জন্য মেধাসম্পদ অফিস, প্রতিষ্ঠান, অ্যাসোসিয়েশন ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সময় ও লক্ষ্যভিত্তিক প্রচার কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। ২০১৯ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে এ তহবিল গঠন করা হবে।

সরকারি তহবিল ব্যতীত অন্যান্য উৎস যথা উন্নয়ন অংশীদার দেশসমূহ, দাতা সংস্থা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মেধাসম্পদ সংগঠন এবং বেসরকারি খাতের সংগঠনসমূহ থেকেও অর্থ সঙ্কুলান করা যাবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।

নীতিমালাটির চূড়ান্ত অনুমোদনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রেরণে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সম্প্রতি সম্মতি দিয়েছেন। শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নীতিমালাটি পাঠানো হবে বলে শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

মূলত মেধাসম্পদ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনার বিষয়টি মাথায় রেখেই এ নীতিমালাটি প্রণয়ন করা হয়েছে। এজন্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাসম্পদ কোর্স চালুকরণ, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সহায়ক কেন্দ্রগুলো (টিআইএসসি) শক্তিশালীকরণ, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উদ্ভাবনী কেন্দ্র স্থাপনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। এছাড়া দেশব্যাপী মেধাসম্পদ আদালত প্রতিষ্ঠা ও মেধাসম্পদ সংরক্ষণে টাস্কফোর্স গঠনের মতো বিষয়ও রয়েছে নীতিমালায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে মেধাসম্পদের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে এখন জ্ঞানভিত্তিক সম্পদকেই টেকসই প্রবৃদ্ধির উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এজন্য মেধাসম্পদের সুরক্ষা ও উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে এ বিষয়টি এখনো যথেষ্ট গুরুত্ব লাভ করেনি। মেধাসম্পদ আইন থাকলেও উদ্ভাবনী ও সৃষ্টিশীল কাজকে আনুকূল্য ও সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে উদ্ভাবন ও মেধাসম্পদ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

ভিশন ২০২১ ও ২০৪১-এর আলোকে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনী দেশে রূপান্তর এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে মেধাসম্পদের ব্যবহারকে ভিশন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে নীতিমালায়।

অপরদিকে দেশে উন্নয়নমূখী ও মেধাসম্পদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অনুকূল ও ভারসাম্যপূর্ণ একটি মেধাসম্পদ অবকাঠামো স্থাপন এবং ২০১৮-২৮-কে উদ্ভাবনী দশক ঘোষণার মাধ্যমে মেধাসম্পদকে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কৌশলসমূহের অপরিহার্য অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাকে নীতিমালার মিশন হিসেবে বলা হয়েছে।

নীতিমালার পাঁচটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো- মেধাসম্পদ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা উৎসাহিতকরণ, মেধাসম্পদ অধিকার ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ, মেধাসম্পদ সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সুবিধা অর্জন, আইনগত কাঠামো শক্তিশালীকরণ এবং মেধাসম্পদ অধিকারের গুরুত্ব প্রচারণা। প্রতিটি লক্ষ্য অর্জনে বেশ কিছু কৌশল বিধৃত করা হয়েছে নীতিমালায়।

অনুমোদনের তারিখ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বিধৃত কৌশলের মাধ্যমে নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হবে। নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে। তবে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে এবং নতুন উন্নয়ন ও চাহিদার প্রেক্ষিতে সময়ে সময়ে নীতিমালা সংশোধন করা যাবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে জাতীয় পর্যায়ে উদ্ভাবন এবং মেধাসম্পদের কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের জন্য শিল্পমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি ‘জাতীয় উদ্ভাবন ও মেধাসম্পদ কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাবনা রয়েছে। এ কাউন্সিল সরকারের উন্নয়ন নীতিমালার সঙ্গে জাতীয় উদ্ভাবন ও মেধাসম্পদ নীতিমালার সংস্কৃতি রক্ষা ও মেধাসম্পদ কার্যক্রমকে সমন্বিত করার দায়িত্ব পালন করবে। মেধাসম্পদ নীতিমালা পর্যালোচনা করে জাতীয় উন্নয়নের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এটিকে হালনাগাদকরণে পরামর্শ দেবে কাউন্সিল। বছরে কাউন্সিলের কমপক্ষে দুটি সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের জন্য ‘সেক্টরাল উদ্ভাবন ও মেধাসম্পদ কমিটি’ গঠনের কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব প্রয়োজন অনুসারে সেক্টরাল কমিটি গঠন করবেন।

মেধাসম্পদ নীতিমালা বাস্তবায়ন এবং এর প্রভাব পাঁচ বছর অন্তর স্বতন্ত্র পরামর্শক দ্বারা মূল্যায়িত হবে। তবে প্রয়োজন হলে যেকোনো সময় এটি করা যাবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১