একসময় লেনদেনে শাখার বিকল্প ছিল না গ্রাহকের কাছে। ব্যাংকের গ্রাহক তার প্রয়োজনীয় লেনদেন সম্পন্ন করতে যেতেন ব্যাংকের শাখায়। তবে গ্রাহকরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগ্রহী হয়ে উঠছেন ডিজিটাল লেনদেনে। আন্তঃব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে ঝামেলাহীনভাবে গ্রাহক নিজেই এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকের গ্রাহককে অর্থ পরিশোধ করছেন। বাড়তি চার্জ ও শাখায় যাওয়ার ঝামেলা না থাকায় দ্রুত প্রসার হচ্ছে এ সেবার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, আন্তঃব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে গত জুলাইয়ে প্রায় সাড়ে আট হাজার লেনদেনের বিপরীতে ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা পরিশোধ হয়েছে। আগের মাস জুনের তুলনায় যা প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচের (এনপিএস) আওতায় এটিএম ও পয়েন্ট অব সেলস বা পসের পাশাপাশি গত বছরের নভেম্বরে আন্তঃব্যাংক ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। প্রথমে ছয়টি ব্যাংক এ সেবা চালু করলেও বর্তমানে যুক্ত হয়েছে ১২টি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ গত সপ্তাহে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, দেশে যত পয়েন্ট অব সেলস সেন্টার রয়েছে সব ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালুর প্রথম মাসে মাত্র এক হাজার ১৩১ লেনদেনের বিপরীতে এক কোটি ৪৬ লাখ টাকা স্থানান্তর হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে এক হাজার ৬৮৫ লেনদেনের বিপরীতে স্থানান্তর হয় দুই কোটি ৭৮ লাখ টাকা। গত জুনে ছয় হাজার ৪২৭ লেনদেনের বিপরীতে ১১ কোটি ২২ লাখ টাকা স্থানান্তর হয়। জুলাইয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়ে আট হাজার ৩৪৮ লেনদেনের বিপরীতে স্থানান্তর হয়েছে ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

ব্যাংকাররা জানান, ইন্টারনেট ব্যাংকিং তহবিল স্থানান্তর বা আইবিএফটি পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না নিয়ে গ্রাহক নিজেই আরেক ব্যাংকের গ্রাহককে পরিশোধ করতে পারেন। ফলে শাখায় গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয় না। যদিও রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট বা আরটিজিএস, বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক ক্লিয়ারিং হাউজ (বিএসিএইচ) এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার-ইএফটিএনের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বেশ আগে থেকে ইলেকট্রনিক লেনদেন হচ্ছে। তবে এসব ক্ষেত্রে লেনদেন করতে ব্যাংকারের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। আইবিএফটি পদ্ধতিতে গ্রাহক নিজেই তহবিল স্থানান্তর করতে পারেন। এ উপায়ে দিনে পাঁচবারে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত স্থানান্তর করা যায়। তহবিল স্থানান্তর ছাড়াও গ্রাহক অনলাইনে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ, ডিপিএসের কিস্তি জমা, ঋণের কিস্তি জমা, বীমা প্রিমিয়াম পরিশোধ, বিজনেস টু বিজনেস পরিশোধ করতে পারেন।