বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৫ September ২০১৮

বাস্তবের লাইফ অব পাই!

রিয়েল ‘লাইফ অব পাই’ আলদি নোভেল আদিলাং সংগৃহীত ছবি


জাহাজডুবির শিকার এক কিশোরের গল্প নিয়ে তৈরি একটি সিনেমা সারা বিশ্বেই ব্যাপক আলোড়ন তোলে ২০১২ সালে। একই নৌকায় বাঘের সঙ্গে মহাসাগরে দীর্ঘদিন ভেসে নিজের জীবন বাঁচিয়ে রাখা কিশোর পাই প্যাটেলের গল্প নিয়ে তৈরি ‘লাইফ অব পাই’ নামের ছবিটি সে বছর জিতে নেয় সিনেমার নোবেল খ্যাত অস্কারও। ভারতের পণ্ডিচেরি বোটানিক্যাল গার্ডেনে এক ব্যক্তিগত জু-কিপারের ছেলে পাই। তবে এক সময় প্রাণীগুলোকে আমেরিকার এক সার্কাস কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন তার বাবা। নিজেরাও কানাডার অভিবাসী হতে কিছু জন্তু-জানোয়ারসহ উঠে পড়েন জাহাজে। কিন্তু মাঝসমুদ্রে ঘটে জাহাজডুবি। পাইয়ের মা-বাবা-ভাইয়ের সলিল সমাধি হয়। পাই একটি লাইফবোট পেয়ে বাঁচায় নিজের প্রাণ। কিন্তু বোটে অনাকাঙ্খিতভাবেই তার সঙ্গী হিসেবে উদয় হয় এক রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তারপর সেই বাঘের সঙ্গে ২২৭ দিন ভেসে থাকা ও বেঁচে থাকার রোমাঞ্চকর ঘটনাবলিতে এগিয়ে যায় সিনেমার গল্প।

তবে সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার এক কিশোরের বাস্তব জীবনের ঘটনা হার মানিয়েছে অস্কারজয়ী সেই সিনেমার গল্পকেও। দেশটির সুলাওসি দ্বীপের ১৯ বছরের তরুণ আলদি নোভেল আদিলাং। গভীর সাগরে নোঙর করে কাঠের তৈরি রমপং নামের বিশেষ ধরনের ভেলায় বাতি জ্বালিয়ে রাতে মাছ ধরার চাকরি করত সে। টানা সাগরে থাকতে হয় বলে রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য প্রতিটি ভেলার ওপর ছাউনি দেওয়া একটি কুঁড়েঘরও থাকে। সপ্তাহান্তে ভেলায় প্রয়োজনীয় খাবার, পানি এবং জ্বালানি সরবরাহ করে কোম্পানি। চলতি বছর ১৪ জুলাই তেমনি একটি রমপংয়ে মাছ ধরছিল আদিলাং। হঠাৎ ঝড়ের তোড়ে তার ভেলার নোঙর যায় ছিঁড়ে, নিরুদ্দেশ হয় আদিলাং ও তার ভেলা। সেই দিনের ঘটনার প্রায় ৪৯ দিন পর গত ৩১ অগাস্ট গুয়াম দ্বীপের কাছে সাগরে ভাসতে থাকা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে এমভি আরপিগিও নামে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ। পরে সেই তরুণ জাপান হয়ে ফিরেছে নিজ পরিবারে।

ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যম জাকার্তা পোস্ট সম্প্রতি প্রকাশ করেছে বাস্তবের লাইফ অব পাইয়ের গল্প। দেশটির কূটনীতিক ফাজার ফিরদৌসের বরাতে জাকার্তা পোস্ট জানিয়েছে, ভেলার ওপর কুঁড়েঘরের কাঠ ভেঙে ভেঙে তা দিয়ে সাগরের মাছ ধরে সেদ্ধ করে খেয়েছে সে। জমা করা পানি ফুরিয়ে গেলে দিনের পর দিন পান করেছে সাগরের পানি।

জাকার্তা পোস্টকে সে জানিয়েছে, সব সময়ই সে ভয়ে সিঁটিয়ে থাকত আর প্রায়ই কান্নাকাটি করত। জাহাজ দেখলে সাহায্যের জন্য চিৎকার করত। কিন্তু লাভ হতো না। ১০টিরও বেশি জাহাজ তার ভেলার কাছ দিয়ে চলে গেছে, কিন্তু কেউ থামেনি। পরে ৩১ আগস্ট এমভি আরপিগিও জাহাজ তাকে উদ্ধার করে। জাহাজের ক্যাপ্টেন গুয়ামের উপকূলরক্ষীদের পরামর্শে আদিলাংকে জাপানে নিয়ে যায়। পরে দেশটির ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসের সহযোগিতায় ৮ সেপ্টেম্বর নিজ দেশে ফেরে আদিলাং।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১