আপডেট : ২০ September ২০১৮
ডা. ওয়ানাইজা রহমান আমরা জানি শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে আয়রন ডিফিসিয়েন্সি অ্যানেমিয়া হয়। আর অ্যানেমিয়া হলে দুর্বল ও ক্লান্তি লাগার পাশাপাশি মেজাজও খিটখিটে হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সাধারণত শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের আয়রনের ঘাটতিজনিত অ্যানেমিয়া হয়ে থাকে। এর ফলে মহিলাদের প্রিম্যাচিউর ডেলিভারি হতে পারে। খাবার থেকে কীভাবে বেশি আয়রন পাওয়া যেতে পারে, এ ব্যাপারে বেইলর কলেজ অব মেডিসিনের পুষ্টিবিদ ডক্টর ডেবি ডেমেরি দুটি উপায়ের কথা বলেছেন, যার প্রথমটি হলো- আপনাকে প্রচুর আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে গরুর কলিজা, গোশত, রুই মাছ, সয়াবিন, শিম, যব, কুমড়া, তিলের বিচি, পেস্তা প্রভৃতি। দ্বিতীয় ব্যাপারটি হলো- এসব খাবার গ্রহণের সময় কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে, যাতে আয়রন ঠিকমতো শোষিত হয়। আমরা দেখতে পাই, শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে চিকিৎসক স্বাভাবিকভাবেই আপনাকে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের উপদেশ দিয়ে থাকেন। আর আপনি চিকিৎসকের উপদেশমতো বাজার থেকে সেসব খাবারই কিনে নিয়ে আসবেন। কিন্তু আপনি কী করে বুঝবেন খাবারের সেই আয়রনগুলো আপনার শরীরে ঠিকমতো জোগান পাচ্ছে? মনে রাখতে হবে, যথাযথভাবে যদি খাবার গ্রহণ না করেন তাহলে খাবারের আয়রন বা লৌহ আপনার শরীরে ঠিকমতো শোষিত হবে না। সাধারণ দুই ধরনের আয়রন- প্রাণিজ আয়রন ও উদ্ভিজ আয়রন পাওয়া যায়। আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য এই দুই ধরনের আয়রন গ্রহণ করাই শরীরের জন্য প্রয়োজন। আপনি যখন খাওয়ার সময় আয়রনসমৃদ্ধ শাকসবজি খাবেন, তখন অবশ্যই আপনাকে তার সঙ্গে সামান্য গোশত খেতে হবে। এর কারণ হলো, উদ্ভিদে যে আয়রন থাকে তা মানব শরীরে সহজে শোষিত হয় না কিন্তু সামান্য গোশত যোগ করলে উল্লেখযোগ্যভাবে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং শরীরে শোষিত হয়। তাই প্রতিবার খাবারে ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করবেন। ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ বাড়িয়ে দেয়। আর সাবধান, অতিরিক্ত চা কিংবা কফি খাবেন না। চা এবং কফিতে থাকে ট্যানিন নামের এক ধরনের উপাদান, যার কাজই হলো আপনার আয়রনের শোষণ মাত্রা কমিয়ে দেওয়া। আয়রনসমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো- কলিজা : আয়রনের সবচেয়ে ভালো উৎস হচ্ছে কলিজা। এতে ভিটামিন, খনিজ লবণ ও প্রোটিন থাকে। এক স্লাইস গরুর মাংসে ৫ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। ডিম : আধাকাপ ডিমের কুসুমে ৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। ডার্ক চকোলেট : ডার্ক চকোলেট আয়রনের একটি ভালো উৎস এবং এতে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্টও থাকে। ছোলা : এক কাপ ছোলায় ৫ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। নিরামিষ ভোজীদের জন্য ছোলা আদর্শ খাদ্য। কুমড়ার বীচি : এক কাপ কুমড়ার বীচিতে ২ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। সুস্বাদু কুমড়ার বীচি রান্না করে, সালাদের সঙ্গে, সিদ্ধ করে বা ভেজে বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। ডাল : আয়রনের একটি ভালো উৎস ডাল। এক কাপ ডালে ৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। সাথে থাকে প্রচুর ফাইবার। পালং শাক : এক কাপ রান্না করা পালংশাকে ৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। রান্না করা পালং শাকের পুষ্টি উপাদান খুব সহজেই শরীর শোষণ করে নিতে পারে। সিদ্ধ আলু : খোসাসহ একটি সিদ্ধ আলুতে ৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। সিদ্ধ আলুতে ভিটামিন সি, বি ভিটামিন, প্রচুর পটাশিয়াম থাকার পাশাপাশি উচ্চমাত্রার আয়রন থাকে। লেখিকা : অধ্যাপক, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১