বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৯ September ২০১৮

ইউএনডিপির প্রতিবেদন

রোহিঙ্গা আশ্রয়ণে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ

মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ সংগৃহীত ছবি


রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী ঘরবাড়ি নির্মাণ, রান্নার জ্বালানি সরবরাহে ৪ হাজার ৩০০ একর পাহাড় ও বন কাটা হয়েছে। উজাড় করা হয়েছে ১ হাজার ৫০২ হেক্টর প্রাকৃতিক বনভূমির প্রায় ৭৯৩ হেক্টর। মাটির নিচ থেকে পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। মনুষ্য বর্জ্যসহ নানা ধরনের বর্জ্যে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। মাটির স্তরে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটছে। মানুষের পদচারণায় বিঘ্ন ঘটছে হাতির চলাচলে। বিরূপ প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যে। কক্সবাজার ও টেকনাফে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার ফলে পরিবেশের প্রভাব নিয়ে ইউএনডিপির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওই অঞ্চলের পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিগগিরই এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো নাজুক হবে। গতকাল রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। এ ছাড়া বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, প্রধান বন সংরক্ষক শফিউল আলম চৌধুরী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মহসীনও অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদিপ্ত মুখার্জী।

ইউএনডিপির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বসবাসের কারণে বায়ু, মাটি, বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে পরিবেশের ওপর যে ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তা শিগগিরই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সঙ্কট সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সক্ষমতা অর্জন ও পুনঃবনায়নের মাধ্যমে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রতিবেদনে ৫৪টি সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সেটি নজিরবিহীন। বাংলাদেশ ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশে এ পরিমাণ জনসংখ্যাও নেই। খুবই স্বল্প জায়গায় তাদের থাকতে দেওয়ায় সেখানে পরিবেশের সমস্যা হওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। আশ্রয়ের জন্য, জ্বালানির জন্য তারা বন কেটে কাঠ জোগাড় করছে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিকল্প হিসেবে এলপিজি ব্যবহার করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে জ্বালানি চাহিদা মেটানোর আহ্বান জানান তিনি।

জ্বালানির চেয়ে পানির বিষয়টি আরো গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন ১১ লাখ লোকের পানি সরবরাহ করা খুবই কঠিন। আগামী ৬ মাসের মধ্যে পানির সঙ্কট সমাধানে কার্যকর উপায় বের করা না গেলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা তাই সবাইকে এর জন্য সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বন ও পরিবেশ সচিব বলেন, শুধু রোহিঙ্গাদের বিষয়টি মাথায় রাখলেই হবে না। স্থানীয় জনগণও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের প্রাধান্য দিয়েই কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।

প্রধান বন সংরক্ষক বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশের ওপর যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে তা ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকেই যাচ্ছে। এটি নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কৃতিত্ব অর্জন করছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি কোনো অংশে কম কৃতিত্ব নয়।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১