বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৮ September ২০১৮

দুই সেতুতে বদলে গেছে তিন জেলা

তিস্তা সেতু সংগৃহীত ছবি


আবু আলম মিয়া, পাটগ্রাম 

উত্তরাঞ্চলের তিন জেলা লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পরিবর্তন এনে দিয়েছে তিস্ত-ধরলা নদী ওপর নবনির্মিত দুই সেতু। উন্মোচিত হয়েছে পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের সম্ভাবনার নতুন দ্বার।

পাশাপাশি অবস্থান হলেও ওই তিন জেলার আন্তঃ যোগাযোগে বাধা ছিল তিস্তা ও ধরলা নদী। সেই বাধা কাটাতে ২০১২ সালে ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীর ওপর ৮৫০ মিটার দীর্ঘ লালমনিরহাটের কাকিনা ও রংপুরের মহিপুরে দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন। একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটের কুলাঘাট ও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ধরলা নদীর ওপর ২৯১ কোটি ৬৩ লাখ ২২৩ টাকা ব্যয়ে ৯৫০ মিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় ধরলা সেতুর ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন। চলতি বছরের শুরুতে সেতু দুটির কাজ শেষ হওয়ার পর গত ৩ জুন দ্বিতীয় ধরলা সেতু ও গত ১৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।

সেতু দুটি চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ পুরো অঞ্চলের অর্ধকোটি মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক রুট বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহর রংপুরের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার কমিয়ে এনেছে। কম সময়ে কাঁচামালসহ কৃষিজাত পণ্য পরিবহন সম্ভব  হচ্ছে। এছাড়া অল্প সময়ের মধ্যেই রংপুর শহরের সঙ্গে লালমনিরহাটের আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার লোকজন যোগাযোগ করতে পারছে। এর সুফল পাচ্ছে রংপুরের পিছিয়ে থাকা গঙ্গাচড়া উপজেলার মানুষও।

বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স সায়েদ এন্টারপ্রাইজ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারক ব্যবসায়ী সায়েদুজ্জামান সাঈদ বলেন, ‘কাকিনা-মহিপুর দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু চালু হওয়ার ফলে বুড়িমারী-লালমনিরহাট-বড়বাড়ী হয়ে ঘুরে আর ঢাকা যেতে হচ্ছে না। এতে অল্প সময়ে পণ্য গন্তব্যে পাঠানো যাচ্ছে। ফলে বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। কলেজ ছাত্র মেহেরাজ ফাহিম বলেন, সেতুটি চালুর ফলে লালমনিরহাটের চার উপজেলার শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ রংপুরের উন্নত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে।

অপরদিকে, দ্বিতীয় ধরলা সেতু দিয়ে চলাচলের সুযোগ সৃষ্টির ফলে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সঙ্গে লালমনিরহাট জেলা সদরসহ রংপুরের যোগাযোগের দূরত্ব কমে এসেছে ৩০ কিলোমিটার। এতে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দরের গুরুত্ব বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা। এছাড়া সেতুটি কুড়িগ্রামের তিন উপজেলার সাথে রাজধানী ঢাকা, রংপুর, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার কমিয়ে এনেছে। সেতুটি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ লাখ মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এই সেতু মঙ্গাকবলিত জনগোষ্ঠীর দ্রুতই অর্থনৈতিক দ্বার খুলে দেবে। বাড়বে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান।

লালমনিরহাটের চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি শেখ আবদুল হামিদ বলেন, ‘সেতু দুটি পিছিয়ে থাকা রংপুর অঞ্চলের ইতিবাচক আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সুযোগ করে দিয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান ও বাণিজ্য সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে।

 

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১