আপডেট : ১৮ September ২০১৮
দীর্ঘদিন ধরেই মানুষের শারীরিক বয়স পরিমাপের পদ্ধতির খোঁজ করছিলেন বিজ্ঞানীরা। আশা ছিল, সেটা জানা গেলে কোনো না কোনো উপায়ে বার্ধক্যকে আটকে দেওয়া যাবে। কিন্তু বয়স পরিমাপের পদ্ধতিটি পাওয়া যাচ্ছিল না বলেই বয়স আটকে রাখার গবেষণাও থমকে ছিল। তবে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো-স্ট্যাটিস্টিশিয়ান স্টিভ হভার্ট বিস্ফোরণ ঘটালেন। তিনি দাবি করলেন, মানুষের বয়স কেন বাড়ে সে কারণ খুঁজে পেয়েছেন তিনি। এর আগে বেশ কিছুকাল ধরে বার্ধক্য সংক্রান্ত গবেষকদের ধারণা ছিল ক্রোমোজমের প্রান্তে টেলোমেরেস পরীক্ষা করেই মানুষের বয়স মাপা সম্ভব। কিন্তু দেখা গেছে সেই পরীক্ষা মোটেই উপযুক্ত নয়, তাতে ভুলের মাত্রা ১৫ বছর পর্যন্ত কম বা বেশি হয়। তবে হভার্ট যে পদ্ধতিটির কথা বলছেন সেটি কাকতালীয়ভাবেই সঠিক ছিল। জার্মানিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এক সহকর্মীর অনুরোধে হভার্ট প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ডিএনএ’র মধ্যে সমকামিতার চিহ্ন খুঁজছিলেন। এই কাজে তিনি ‘এপি-মার্ক’-এর প্রতি মনোযোগ দেন যা ডিএনএ’র নির্দিষ্ট কিছু অংশে যুক্ত বা বিযুক্ত হতে পারে। হভার্ট দেখেন কোনো কোনো অংশে এপি-মার্ক যুক্ত রয়েছে, কোথাও নেই। তিনি হাজার হাজার কোষ পরীক্ষা করে তা নথিভুক্ত করেন। কিন্তু তাতে কাঙ্ক্ষিত সমকামিতার কোনো ইঙ্গিত পাননি। তবে এরপর তিনি বয়সের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজতে সেই তথ্য আবার বিশ্লেষণ করেন। এরপরই আচমকা তিনি কাঙ্ক্ষিত যোগসূত্র খুঁজে পেলেন। তার ভাষায়, তিনি যা পেয়েছেন (এপিজেনেটিক তথ্যের ওপর) তার ওপর বয়সের বিশাল প্রভাব রয়েছে। হভার্ট আবিষ্কার করলেন যে, বয়স অনুযায়ী ডিএনএ’র মধ্যে এপি-মার্ক বদলে যায়। তিনি ডিএনএ’র মধ্যে এমন কিছু জায়গা চিহ্নিত করলেন, যা বয়স নির্ধারণের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত। সেইসব জায়গায় ছাপ বা চিহ্নের বিন্যাস অত্যন্ত সমান থাকে। বালু ঘড়ির মতো এ ক্ষেত্রেও তিনি এপি-মার্ক বিশ্লেষণ করতে পারলেন। হভার্ট এমন ৩৬৩টি এপিজেনেটিক বালুর ঘড়ি খুঁজে পেয়েছেন, যেগুলোর গড় নির্ণয় করে মানুষের বয়স জানা সম্ভব। আর তাতে ভুলভ্রান্তির সম্ভাবনা সর্বোচ্চ ৩ বছর ৫ মাস। তবে জটিলতা ছিল আরেক জায়গায়। কোনো বৈজ্ঞানিক পত্রিকা এই আবিষ্কারের খবর ছাপতে ইচ্ছুক ছিল না। হভার্টের ভাষায়, আমি সেখানে গিয়ে বললাম, বয়স পরিমাপের মানদণ্ড খুঁজে পেয়েছি। যেকোনো কোষের ওপর তা প্রয়োগ করা সম্ভব এবং ফর্মুলাও হুবহু এক। মনে হলো আমি যেন কাল্পনিক ইউনিকর্ন বা একশৃঙ্গ জন্তুর বর্ণনা দিয়েছি এবং প্রাণীবিদ বলছেন, এমন কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব নেই, চলে যান। তবে হভার্ট অবশেষে প্রকাশককে বোঝাতে পেরেছিলেন, লেখাটি ছাপা হলে বৈজ্ঞানিক জগতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১