আপডেট : ০৪ September ২০১৮
                                
                                         এএফসি কাপের বাছাই পর্বে ২০১৬ সালের অক্টোবরে থিম্পুতে ভুটানের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। একটি মাত্র হার, তাতেই বদলে গিয়েছিল গতিপথ। আন্তর্জাতিক ফুটবলে লজ্জার নির্বাসন। সেই হার নিয়ে সমালোচনা হয়েছে অনেক। কাঠগড়ায় উঠানো হয়েছে ফুটবলারদের। দুই বছরের ব্যবধানে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশের ফুটবল। আজ থেকে ঘরের মাঠে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ ফুটবল। উদ্বোধনী দিনেই বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সেই ভুটান। ফলে তুমুল আলোচনায় বছর দুয়েক আগের সেই লজ্জার হার। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বিকাল ৪টায় সাফ ফুটবলের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে নেপাল ও পাকিস্তান। সন্ধ্যা ৭টায় ভুটানের বিরুদ্ধে হারানো সম্মান পুনরুদ্ধারে মাঠে নামবে টিম বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ ভুটান বলেই আলোচনার পারদটা বেশ। তবে গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ভুটানকে পাশ কাটিয়ে মূল ফোকাসটা শিরোপায় রাখলেন বাংলাদেশ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নাসিরউদ্দিন চৌধুরী- ‘ভুটান নয়, আমাদের মূল লক্ষ্য টুর্নামেন্টে ভালো খেলা। অবশ্যই প্রথম লক্ষ্য গ্রুপ পর্ব পার হওয়া, তারপর অন্য ম্যাচ।’ সদ্য সমাপ্ত এশিয়ান গেমসে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নক আউট পর্বে উঠেছিল বাংলাদেশ, যেখানে গ্রুপ পর্বে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ হারাতে পেরেছিল মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ হিসেবে কাতারকে। আগের ম্যাচে থাইল্যান্ডের সঙ্গে ড্রয়ের সুবাদে শেষ ষোলোতে পৌঁছায় বাংলাদেশ। তবে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে হেরে বিদায় নেয় লাল-সবুজ শিবির। সেই এশিয়ান গেমসের ১২ জন সদস্য রয়েছেন ২০ জনের চূড়ান্ত স্কোয়াডে। সঙ্গে অভিজ্ঞ আরো ৮ ফুটবলার। সব মিলিয়ে নাসিরের চোখে ভালো করার স্বপ্ন, ‘এশিয়ান গেমসে আমরা ভালো করেছি। কোচের পরিকল্পনার সঙ্গে মাঠে যদি আমরা সব পজিশনে সেরাটা দিতে পারি তাহলে ভালো রেজাল্ট আসবে। সাফ ফুটবল উপলক্ষে আমরা ৪-৫ মাস বেশ পরিশ্রম করেছি। এবার মাঠে তা প্রয়োগের সময়।’ হোম গ্রাউন্ড বলেই বাংলাদেশের ওপর প্রত্যাশাটা থাকছে বেশি। ফলে দলের ওপর চাপও থাকবে বেশ। তবে বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ জেমি ডে তা মনে করছেন না, ‘দর্শকদের প্রত্যাশা থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের ফোকাস মাঠের পারফরম্যান্সে। যেখানে প্রথম লক্ষ্য গ্রুপ পর্ব টপকানো।’ প্রস্তুতি ম্যাচে নীলফামারীতে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ দল। এশিয়ান গেমসে ভালো করার পরও কেন প্রস্তুতি ম্যাচে এমন শ্রীহীন পারফরম্যান্স? জেমির মতে, ‘লক্ষ করবেন শ্রীলঙ্কা ম্যাচে আমাদের আধিপত্য ছিল স্পষ্ট। একাধিক গোলের সুযোগও তৈরি করেছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত গোলটাই হয়নি। সেটা ছিল গা গরমের ম্যাচ। মূল টুর্নামেন্টে আশা করি গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে পারব।’ ভুটানের সঙ্গে হেড টু হেডে বাংলাদেশ অনুমিতভাবেই এগিয়ে। সাতবারের মোকাবেলায় চারটিতে জয় মামুনুলদের। ড্র দুটি। একমাত্র হার ২০১৬ সালে। তবে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ১১ ধাপ এগিয়ে ভুটান। তাদের অবস্থান ১৮৩, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৯৪। র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকলেও আজকের ম্যাচে বাংলাদেশকে ফেভারিট হিসেবে মানছেন ভুটান কোচ ট্রেভর মরগান, ‘হোম গ্রাউন্ডে অবশ্যই বাংলাদেশ এগিয়ে। তবে তারুণ্যনির্ভর ভুটানের টিম নিয়ে আমি আশাবাদী।’ বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশকে লজ্জার হার উপহার দিয়েছিল ভুটান। সে প্রসঙ্গ উঠতেই মরগান বলেন, ‘গত দুই বছরে দুই দলেই অনেক পরিবর্তন এসেছে। যেকেউ জিততে পারে। টুর্নামেন্টে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য গ্রুপ পর্ব পার করে সেমিফাইনালের টিকেট অর্জন করা।’ সাফ ফুটবলে ভুটানের সর্বোচ্চ অর্জন সেমিফাইনাল, ২০০৮ সালে। তবে বাংলাদেশের শিরোপা জয়ের রেকর্ড আছে। যেটি আজ থেকে ১৫ বছর আগে, ২০০৩ সালে। সেটিই দক্ষিণ এশীয় টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের একমাত্র শিরোপা। এরপর ২০০৫ সালে ফাইনালে উঠলেও হারতে হয়েছিল ভারতের কাছে। ২০০৯ সালে সবশেষ সাফ ফুটবলের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ। সেবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায়। এরপর তিন আসরে গ্রুপ পর্বের বৈতরণী পার হতে পারেনি বাংলাদেশ। নয় বছর পর আবারো সাফ ফুটবলের আয়োজক বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া দেশ সাতটি। এ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভুটান, নেপাল ও পাকিস্তান। বি গ্রুপে রয়েছে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। দুই গ্রুপ থেকে সেরা দুটি দল নাম লেখাবে সেমিতে। ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দুটি সেমিফাইনাল। ১৫ সেপ্টেম্বর ফাইনাল। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক কে? গতকাল পর্যন্ত তা চূড়ান্ত করা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক কে- এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে বললেন, ‘স্কোয়াডে থাকা ২০ জনই অধিনায়ক।’ যার মর্মকথা, অধিনায়ক যেই হোক না কেন মাঠের খেলায় ফোকাস সবার। যেখানে জয়টাই আসল। শুরুটা হোক সেই ভুটানকে দিয়েই।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১