আপডেট : ০৯ August ২০১৮
ডায়াবেটিস শব্দটি শুনলে কেমন যেন মনে একধরনের ভয় হয়। আর তা যদি হয় গর্ভাবস্থায়, তাহলে তো ভয় আরো দ্বিগুণ বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস মা ও সন্তান উভয়ের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এ সময়ে প্রয়োজন অতিরিক্ত যত্নের, যাতে মা ও সন্তান দুজনই সুস্থ থাকে। ডায়াবেটিস কী রক্তে শর্করার পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে যে রোগ হয়, তাকে বলে ডায়াবেটিস। এক্ষেত্রে শরীরে ইনসুলিনের অভাব দেখা যায়। ডায়াবেটিসের লক্ষণ : * ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া। * ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা। * ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। * ওজন কমে যাওয়া। * দুর্বলতা। * ঘা শুকাতে দেরি হওয়া। * শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘা, ফাংগাস, ইনফেকশন। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস সাধারণত ২ থেকে ৮ শতাংশ নারীর ক্ষেত্রে এই রোগ দেখা যায়, যা গর্ভাবস্থার আগে থাকে না। সন্তান ডেলিভারি হয়ে যাওয়ার পর ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে রোগীর ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। রক্তে সুগারের পরিমাণ সকালে খালি পেটে যদি ৬.১ মি মো/লি. খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর যদি ১১.১ মি. মো/লি. এর বেশি হয়, তাহলে তাকে ডায়াবেটিস বলে। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে- * যদি গর্ভবতী মায়ের বয়স ২৫ বছরের বেশি হয়। * যদি পরিবারের বাবা/মায়ের ডায়াবেটিস থাকে। * শারীরিক পরিশ্রম যদি কম হয়। * অতিরিক্ত ওজন। চিকিৎসা না করালে কী হতে পারে * অধিকবার অ্যাবরশন। * গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পানি। * গর্ভাবস্থায় খিঁচুনি। * গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তচাপ। * গর্ভবতী মায়ের চোখে ও কিডনিতে সমস্যা হতে পারে। * বাচ্চা গর্ভে মারা যেতে পারে। * বাচ্চার শ্বাসকষ্ট হতে পারে। * বাচ্চার ওজন অনেক বেশি হয়, যাতে নর্মাল ডেলিভারি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। * বাচ্চা বিকলাঙ্গ হতে পারে। * গর্ভফুল থেকে বাচ্চাকে আলাদা করার পর বাচ্চার রক্তে সুগারের পরিমাণ কমে যেতে পারে, যাকে বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া। ডায়াবেটিসের চিকিৎসা * নিয়মিত ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস * শারীরিক পরিশ্রম * প্রতিদিন সুগার পরীক্ষা * পায়ের যত্ন * রেগুলার চেকআপ * প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার খেতে হবে। যেসব ওষুধ গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা হয়- * মেটফরমিন * ইনসুলিন এগুলো গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদায়ী মায়ের জন্য নিরাপদ। তবে তা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে সেবন করা উচিত। টার্গেট খালি পেটে সুগার ২৬ মি মো/ লি. খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর ২৮ মি মো/ লি. Hba, c ২৮ % ব্লাড প্রেশার ১৩০/ ৮০ ডায়াবেটিসকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। গর্ভাবস্থায় একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত চেকআপে থাকুন এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন। আপনার খাদ্যাভ্যাসে একটু পরিবর্তন আনুন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সুগার পরীক্ষা করান এবং ওষুধ সেবন করুন, দেখবেন ডায়াবেটিসকে আর ভয় লাগবে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। আপনি ও আপনার সন্তান সুস্থ থাকুন। সব সময় হাসি-খুশি থাকুন। ডা. ফারহানা বিন্তে ফুলজার
মেডিকেল অফিসার, ল্যাবএইড হাসপাতাল
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১