বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৪ August ২০১৮

নিরাপত্তা পেলে চলবে বাস : মালিক সমিতি

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন মালিক-শ্রমিকরা সংগৃহীত ছবি


সড়কে শিক্ষার্থীদের অবস্থান তেমন একটা না থাকলেও গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে চলাচল করেনি গণপরিবহন। পাশাপাশি নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অনেকটা ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ হিসেবেই বাস নামানো বন্ধ করে দিয়েছে মালিক সমিতি। তবে তাদের দাবি, গাড়ি ভাঙচুর বন্ধ ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই চলবে বাস।

কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই বাস বন্ধ করে দেওয়ায় রাজধানীতে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। ঢাকার সঙ্গে প্রায় সারা দেশে সড়ক  যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বাস মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘বাস বন্ধ আছে নিরাপত্তার অভাবে। মালিক-শ্রমিকরা গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে নিরাপত্তার কারণে। এ পর্যন্ত চারশোর মতো বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। ৭-৮টি গাড়ি সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে নিরাপত্তার জন্যই বন্ধ করা হয়েছে, অন্য কিছু না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার চালু হবে।’

কিন্তু বিক্ষোভ তো হচ্ছে মূলত ঢাকায়, তাহলে কেন সারা দেশের সব ধরনের বাস বন্ধ করে দেওয়া হলো?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গাড়ি শহরে আসতে বা বের হতে পারছে না। বিভিন্ন জায়গায় চেক করছে, ভাঙছে, এ জন্যই বন্ধ আছে।’ বাস মালিক সমিতির নেতা এনায়েত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও নেতা। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

বাস বন্ধের বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালে সড়কে ৩২৫টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে, ১১টি বাস পোড়ানো হয়েছে। আমরা এই পরিস্থিতিতে সড়কে বাস নামাতে নিরাপদ বোধ করছি না। এভাবে বাস ভাঙচুর করলে, পুড়িয়ে দিলে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হই।’ শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক বলে মেনে নিয়ে কালাম বলেন, ‘কিন্তু সড়ক নিরাপদ কি শুধু বাস আর ড্রাইভার ঠিক হলেই হলো? সড়কে জায়গায় জায়গায় গর্ত। এগুলোও তো দুর্ঘটনার কারণ। সড়কও ঠিক করতে হবে।’ বাস চলাচল কখন শুরু হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি বলে সড়ক নিরাপদ, তবে আমরা যেকোনো সময় বাস নামাব।’

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মনজুর রহমান পিটার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে উচ্ছৃঙ্খল একটি গোষ্ঠী ঢুকে পড়েছে। তারা বাসে ভাঙচুর চালাচ্ছে। ফলে শ্রমিক ও যানের নিরাপত্তার কারণে বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, মালিকরা বাস নামাতে নিষেধ করেছেন। এ দিন সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একদল পরিবহন শ্রমিককে সড়কে অবস্থান নিয়ে গাড়ি আটকাতে দেখা গেছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটের চলাচলকারী ইউনিক পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক আবদুল হক বলেন, ‘নিরাপত্তা না থাকায় অঘোষিতভাবে বাস চলাচল বন্ধ আছে।’ সড়কে শ্রমিকদের অবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গাড়ি বন্ধ থাকায় তারা যাত্রাবাড়ীর সড়কে দাঁড়িয়ে আছে, এটা অবরোধ বা সে ধরনের কিছু না।’

এদিকে ফেনী আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজম চৌধুরী বলেন, ‘বাসচালকরা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে চাইছে না। শুধু চালকরা নয়, যাত্রীরাও নিরাপদ থাকছে না। এ কারণে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’

উত্তরাঞ্চলের রংপুর থেকেও কোনো বাস চলছে না। কাদের নির্দেশে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে সরাসরি কিছু বলছেন না পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। তবে জয়পুরহাট জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান বেদারুল ইসলাম বেদিন ধর্মঘট ডাকার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘পরিবহনের নিরাপত্তার জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে অবহেলা থাকলে দায়ী চালকের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে আইন করার দাবি রয়েছে শিক্ষার্থীদের, তা মেনে আইন সংস্কারের আশ্বাসও দিয়েছে সরকার। তবে সে ধরনের আইন হলে তা ঠেকানোর হুশিয়ারি দিয়েছেন গাবতলীর এক পরিবহন শ্রমিক। অরিণ পরিবহনের ওই কর্মী বলেন, ‘নতুন আইন করে সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান করা হলে তা কোনো পরিবহন শ্রমিক মেনে নেবে না।’


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১