আপডেট : ০১ August ২০১৮
                                
                                         শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর বাস উঠিয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত জাবালে নূরের তিন চালকের কারোই বাস চালানোর লাইসেন্স নেই। অপেশাদার (হালকা) ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েই যাত্রীবাহী বাস চালাচ্ছিল তারা। গ্রেফতার দুই চালক ও তাদের সহকারীদের গতকাল মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সংশ্লিষ্টরা জানান, গত রোববার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জড়িত মাসুম বিল্লাহ, জুবায়ের ও সোহাগ নামে তিন চালক। রাজধানীর মিরপুর ও বরগুনা জেলায় অভিযান চালিয়ে এই তিন চালক এবং তাদের দুই সহযোগী এনায়েত ও রিপনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১। গ্রেফতার জাবালে নূরের তিন বাসচালকের কাছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) অপেশাদার চালকের লাইসেন্সের তিনটি কার্ড পাওয়া গেছে। তাদের লাইসেন্সগুলো যাচাই করতে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। বিআরটিএ জানায়, অপেশাদার অনুযায়ী পরীক্ষা দিয়ে পেশাদার চালকের লাইসেন্স নিতে হবে। অপেশাদার লাইসেন্সধারী একজন চালক সর্বোচ্চ ১২ আসনের কোনো যান চালাতে পারবেন। এদিকে গ্রেফতার পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চালক মাসুম বিল্লাহ র্যাব হেফাজতে ছিল। ক্যান্টনমেন্ট জোনের পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার তাপস কুমার দাশ জানান, মঙ্গলবার দুপুরের পর গ্রেফতার চারজনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। বাসচালক সোহাগ আলী, জুবায়ের এবং হেলপার এনায়েত ও রিপনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার এসআই রিয়াদ আহমেদ। তবে মামলার সিডি না থাকায় এ আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য ৬ আগস্ট পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়। এ সময় আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম এইচ এম কোহা। যেভাবে হতাহতের ঘটনা ঘটে : জাবালে নূরের যে তিনটি বাসের রেষারেষিতে এ ঘটনাটি ঘটে সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো- ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭, ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় মারা যায় দুই শিক্ষার্থী। এই বাসটি চালাচ্ছিল মাসুম বিল্লাহ। ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের চালক ছিল জুবায়ের এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০ নম্বরধারী বাসটির চালক ছিল সোহাগ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিন চালকের কাছ থেকে জানা গেছে, গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার কিছু আগে মাটিকাটা হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে উড়ালসড়কের ঢালুতে আড়াআড়ি করে বাস থামায় জুবায়ের। সে বাসটিকে ডান দিকে মুখ করে এমন করে থামায় যেন অন্য কোনো যান তা অতিক্রম করতে না পারে। আড়াআড়ি করে মিনিট দু-এক সময় নিয়ে জুবায়েরের বাস থেকে যাত্রী নামানো হয়। বেশ কয়েকজন যাত্রী নেমে গেলে আবার যাত্রী তুলতে থাকে বাসটির সহকারী (পলাতক)। কুর্মিটোলা থেকে যাত্রী পাওয়ার আশায় মাটিকাটায় ২৩ ফুট চওড়া উড়ালসড়কে নিজেদের বাস নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করে দুই চালক মাসুম ও সোহাগ। কিন্তু উড়ালসড়কের ঢালে আরেকটি জাবালে নূর বাস দেখতে পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে অতিক্রম করার চেষ্টা করে মাসুম বিল্লাহ। তখন নিজের বাসের গতি আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি মাসুম। সরাসরি বাঁ দিকে ফুটপাথে বাসটি তুলে দেয় সে। সেখানে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছিল রমিজ উদ্দিন কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। আহত আরো প্রায় ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১