বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ৩১ July ২০১৮

হাওর জঙ্গল মইষের শিং এ নিয়ে ময়মনসিংহ


আবদুল মান্নান পল্টন, ময়মনসিংহ ব্যুরো

ময়মনসিংহ জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এই জেলার আকার সময় সময় পরিবর্তিত হয়েছে। এই জেলাটি ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ জেলা ছিল। পরবর্তী সময়ে এই জেলার বিভিন্ন মহকুমাকে পৃথক জেলায় উন্নীতকরণের ফলে ক্রমাগত সঙ্কুচিত হয়ে আসে এর আকার। উত্তরে গারো পাহাড় ও ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে গাজীপুর জেলা, পূর্বে নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে শেরপুর, জামালপুর ও টাঙ্গাইল জেলা বেষ্টিত ময়মনসিংহ জেলার ভৌগোলিক পরিবেশ বিচিত্র হওয়ায় বলা হয়— ‘হাওর, জঙ্গল, মইষের শিং— এ নিয়ে ময়মনসিংহ’। ৪ হাজার ৭৮৭ বর্গমাইলের রত্নগর্ভা এ জেলার প্রাণবন্ত মানুষের পরিচয় পাওয়া যায় এর নামের মাঝেই— গু-সবহ-ংরহম, অর্থাৎ আমার লোকেরা গান গায়। ময়মনসিংহ শহরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এ নদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েই শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বহু ছবি এঁকেছিলেন। এখানকার বহু স্থাপনায় প্রাচীন নির্মাণশৈলীর ছোঁয়া রয়েছে। আছে কালের সাক্ষীস্বরূপ ভগ্ন জমিদার বাড়ি। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিও জড়িয়ে আছে এ জেলার ত্রিশাল উপজেলার সঙ্গে। সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ আর বৈচিত্র্যপূর্ণ জনগোষ্ঠীর এক জনপদ এই জেলা। ময়মনসিংহ জেলা মৈমনসিংহ গীতিকা, মহুয়া, মলুয়া, দেওয়ানা মদিনা, চন্দ্রাবতী, কবিকঙ্ক, দীনেশচন্দ্র সেন এবং মুক্তাগাছার মণ্ডার জন্য বিখ্যাত। ঢাকা থেকে সড়ক পথে মাত্র ৩ ঘণ্টায়  ময়মনসিংহ পৌঁছানো যায়।

নামকরণের ইতিহাস : ময়মনসিংহের পূর্ব নাম ছিল নাসিরাবাদ। সম্রাট আকবরের শাসনামলে মোমেন শাহ নামে একজন তৎকালীন বাজুহার একাংশের (বর্তমান ময়মনসিংহ) শাসনকর্তা ছিলেন। এবং এই শাসনকর্তার নামানুসারেই এই অঞ্চলের নাম তখন মোমেনশাহী হয়। পরবর্তী সময়ে তা ময়মনসিংহ নাম লাভ করে। এ ছাড়া জনশ্রুতি রয়েছে, ১৬০১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি উত্তর জামালপুরের দশকাহুনিয়া, শেরপুর ও টাঙ্গাইল জেলার দক্ষিণ প্রান্তস্থ আতিয়ার মধ্যস্থলে সুবেদার মানসিংহের সঙ্গে ভাটি অঞ্চলের ভুঁইয়াদের একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মানসিংহ কর্তৃক এই যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল বলে তার নামানুসারে এই জেলার নাম রাখা হয় মানসিংহ। পরবর্তী সময়ে এই মানসিংহ থেকেই ময়মনসিংহ নামের উৎপত্তি।

ময়মনসিংহকে বলা হয় সংস্কৃতির নগরী। আর এই সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র সাবেক টাউন হল। বর্তমানে যার নামকরণ করা হয়েছে ‘অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়াম’।

সংস্কৃতিসেবীদের সঙ্গীত ও নাট্যচর্চাকে বিকশিত করতে জমিদারি জমানায় মাত্র ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রথম নির্মিত হয়েছিল এই অডিটোরিয়াম। সময়ের গতিধারায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে আধুনিক এই অডিটোরিয়াম। এই অডিটোরিয়াম প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে স্থবির সংস্কৃতিচর্চায় পুরোপুরি গতি এসেছে। জেলার শিল্প ও সাহিত্য অঙ্গনের মানুষের মধ্যেও আনন্দের আবহ। সংস্কৃতিচর্চার এই প্রাণকেন্দ্রের মাধ্যমেই আবর্তিত হয়েছে জেলার সাংস্কৃতিক সব কর্মযজ্ঞ। জানা যায়, মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজ সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী ১৮৮৪ সালে টাউন হল প্রতিষ্ঠা করেন।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১