আপডেট : ২৯ July ২০১৮
নির্বাচনী প্রচারণা শেষ। কাল ভোট রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক)। শুরু হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল। এক দিন পরেই জানা যাবে কে হচ্ছেন প্রাচীন এ নগরীর কাণ্ডারি। আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মনে করেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অনেকটা ফুরফুরে হলেও বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে রয়েছেন শঙ্কায়। প্রচারণার শেষ দিকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে ভোটাররা রয়েছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। এবারের রাসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী পাঁচজন। তারা হলেন— আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপির মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান ও গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ। স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে, রাসিক নির্বাচনে মূলত লড়াই হবে আওয়ামী লীগের নৌকা আর বিএনপির ধানের শীষে। তাদের আশা, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। সুষ্ঠু না হওয়ার কোনো কারণ নেই। নৌকার পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। তফসিল ঘোষণার শুরু থেকে বিএনপি বলে আসছে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, স্বচ্ছ হবে না। তাদের এ দাবি ভিত্তিহীন। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে তারা আওয়ামী লীগকে চাপে রাখতে চায়।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক, আমি মেনে নেব। প্রতিপক্ষ প্রার্থীরও জনগণের রায় মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।’মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হলেও রিটার্নিং অফিসার কোনো পদক্ষেপ নেননি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করে বিএনপির ১৫০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পার্শ্ববর্তী জেলায় পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন কৌশলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। সক্রিয় কর্মীদের ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ভীতি সৃষ্টি করছে। নেতাকর্মীরা শঙ্কায় আছেন। তিনি বলেন, রাজশাহী শান্তির শহর। এখানে কাউকে অশান্তি করতে দেওয়া হবে না। ভোটের দিন কোনো অনিয়ম হলে প্রতিহত করা হবে।’ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। তারা ভোট দিতে চান। কিন্তু সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কিত। কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনেকেও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন বলে জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী বলেন, আমার ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন ঘরে ঘরে গিয়ে নেতাকর্মীদের নামের তালিকা হচ্ছে। এতে ভীতি ছড়াচ্ছে। তাতে সোমবার কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রাজশাহী জেলার সভাপতি সফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নাগরিকের অধিকার। সম্প্রতি কয়েকটি সিটি নির্বাচনে অনেক অনিয়ম হয়েছে। এখানে কেমন নির্বাচন হবে, সোমবার দেখা যাবে। অতীত অভিজ্ঞতার থেকে বলছি, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কালো টাকা আর পেশিশক্তির বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। কুমারপাড়ার মুদি দোকানি মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, এখন তো শুধু পোস্টারই দেখি। সারা শহরে পোস্টার। আর মাইকিং। ভোট কেমন হবে, জানি না। সুষ্ঠু হলে ভোট দিতে যাব। এমন মন্তব্য নগরবাসীর অনেকেরই। প্রসঙ্গত, কাল সোমবার রাসিক নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। মোট ভোটার তিন লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন। পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন। আর নারী ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন। নগরীর নতুন স্থাপিত ভোটকেন্দ্র অনন্যা শিশু শিক্ষালয়কে নিয়ে মোট কেন্দ্র ১৩৮টি। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট হবে দুটি কেন্দ্রে। হিন্দু বিবি একাডেমি কেন্দ্রে নারী ও পুরুষের ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হবে। নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১