আপডেট : ২৮ July ২০১৮
                                
                                         বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে মজুত নিয়ে সরকারের কাছে নিয়মিত ভুল তথ্য সরবরাহ করেছে খনি কর্তৃপক্ষ। কয়লা উধাওয়ের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি সচিব। এদিকে কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রয়োজনে বিকল্প উপায়ে সেপ্টেম্বরেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ সচিব। গতকাল শুক্রবার সকালে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পেট্রোবাংলা ও পিডিবির চেয়ারম্যান। তারা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘খনিতে কয়লা ঘাটতির ব্যাপারে কর্মকর্তারা কী বলছেন এবং বাস্তবে কয়লার বিষয়টি দেখতে এখানে এসেছি। বিদ্যুৎকেন্দ্রে চাহিদা অনুযায়ী কয়লা সরবরাহ কবে নাগাদ দেওয়া সম্ভব এবং খনির উৎপাদন কবে শুরু করা সম্ভব সেটিও পরিদর্শনের বিষয় ছিল।’ কয়লা উধাওয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে, দুদক বিষয়টি তদন্ত করছে। সত্যিকার অর্থে, কয়লা ঘাটতি হলে তার দায়-দায়িত্ব কর্মকর্তাদের। দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ১৮ এপ্রিলের পরও বাইরে কয়লা বিক্রির প্রমাণ পেয়েছে পেট্রোবাংলা।’ ২০০৫ সালের পর থেকেই কয়লার উৎপাদন ও বিক্রি নিয়ে হিসাবে গরমিল রয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এমনকি অডিট রিপোর্টেও কেন এসব তথ্য আসেনি তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন জ্বালানি সচিব। তিনি বলেন, ‘বড়পুকুরিয়ায় কয়লার মজুত নিয়ে সরকারকে ভুল তথ্য দিয়েছে খনি কর্তৃপক্ষ। তাদের ভুল তথ্যের ফলেই আজকের এই সঙ্কট।’ বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালুর আশ্বাস পাওয়া গেছে। তখনো কয়লা পাওয়া না গেলে বিকল্প উপায়ে চালুর চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবার ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘৮টি জেলায় ১০০-১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। তাই এক থেকে দেড় ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। সিরাজগঞ্জে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করে লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমানো হয়েছে।’ এ সময় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কয়লায় ঘাপলা করে যারা লোকজনকে কষ্টে ফেলেছেন তাদের বিষয়টি কোনোভাবেই হালকা করে দেখার উপায় নেই। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে, যাতে দ্রুত কয়লা উৎপাদন শুরু হয়। দ্রুত উৎপাদনে যেতে তারা রাজি হয়েছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকেই খনি থেকে উত্তোলন শুরু হবে।’ বিদ্যুৎকেন্দ্র সচলে কয়লা আমদানির উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এজন্য বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (উন্নয়ন) আহ্বায়ক করে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখাসহ এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে এক মাসের স্টক রাখার জন্য কয়লা আমদানি করা হবে।’ এদিকে বিএনপির আমলে কয়লা চুরি শুরু হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘২০০৫ সালে আপনারা (বিএনপি) বড়পুকুরিয়ার কয়লা চুরি শুরু করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় কিছু কর্মকর্তা চুরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমাদের সরকার সেই চোরদের ধরেছে। এই চোরদের ধরার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ২০০৫ সালে কারা চুরির সঙ্গে যুক্ত ছিল, সেটিও নিশ্চয় বেরিয়ে আসবে।’
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১