বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৭ July ২০১৮

কেন ফুটবলে ইউরোপের আধিপত্য

বিশ্বকাপ নিয়ে ফ্রান্স ফুটবল দলের উল্লাস ছবি : ইন্টারনেট


রাশিয়া বিশ্বকাপ শেষে পরের আসর জয়ের স্বপ্ন নিয়ে আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের ফ্যানরা আশায় বুক বাঁধতেই পারেন। আর্জেন্টিনা ফ্যানদের জন্য আশার কথা পরের বিশ্বকাপে মেসির বয়স হবে ৩৩, কাজেই তার খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। আর নেইমার, কুতিনহো, ফিরমিনো আর জেসুসদের নিয়ে অভিজ্ঞ আর শক্তিশালী দল তৈরি করে কাতার বিশ্বকাপ মাতানোর স্বপ্ন দেখতেই পারেন ব্রাজিল ফ্যানরা। কিন্তু বাস্তবতা হলো দক্ষিণ আমেরিকা আর ইউরোপের বাইরের দেশগুলোর জন্য পরের বিশ্বকাপগুলো জেতা আরো কঠিন হয়ে পড়বে।

পরিকল্পিত অর্থায়ন আর সময়োপযোগী পদ্ধতিতে ফুটবল উন্নয়নের অবকাঠামো তৈরির কারণে বিশ্ব ফুটবলে ইউরোপের আধিপত্য দিন দিন আরো শক্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এর পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এখনই।

২০১৮ বিশ্বকাপ জিতে টানা চতুর্থবারের মতো কোনো ইউরোপীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপ জিতল ফ্রান্স। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ঘটল এমন ঘটনা। ২০০৬-এর বিশ্বকাপ থেকে দেখা যাচ্ছে, একমাত্র আর্জেন্টিনা (২০১৪) বাদে ইউরোপের বাইরের আর কোনো দেশ আসরের সেমিফাইনাল পর্যন্তই উঠতে পারেনি। যদিও এখন পর্যন্ত হওয়া ২১টি বিশ্বকাপে ল্যাটিন আমেরিকানদের সাফল্যের ইতিহাস ঈর্ষণীয়। ইউরোপিয়ান দেশগুলোর ১২টি শিরোপার বিপরীতে ল্যাটিন দলগুলোর শিরোপা ৯টি।

স্পন্সরশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান দেশগুলোর জন্য অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করে তাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা। ফুটবলের জন্য ল্যাটিন আমেরিকা বা ইউরোপের বাইরের দেশগুলোর চেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে ইউরোপিয়ান দেশগুলো। কাজেই সেসব দেশে খেলোয়াড় তৈরি ও উন্নয়নের সম্ভাবনা বেশি থাকায় ওইসব দেশকে পৃষ্ঠপোষকতা করার প্রবণতা বেশি থাকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর।

এক্ষেত্রে দক্ষিণ আমেরিকার অধিকাংশ দেশই অনেক পিছিয়ে। তবে ব্রাজিলের অবস্থা অন্যান্য ল্যাটিন আমেরিকার দেশের চেয়ে ব্যতিক্রমী। ব্রাজিল সাধারণত স্পন্সরশিপের সুবিধা পেয়ে থাকে। তবে ব্রাজিলের এসব লোভনীয় স্পন্সর পাওয়ার পেছনে সাম্প্রতিক সাফল্যের চেয়ে অতীত ঐতিহ্যের ভূমিকাই বেশি।

বর্তমান পদ্ধতিতে বিশ্বকাপের ৩২টি দেশের মধ্যে ১৩টি ইউরোপের দেশ খেলার সুযোগ পায়। বাকি দলগুলোর মধ্যে আফ্রিকা থেকে পাঁচটি, ল্যাটিন আমেরিকা আর এশিয়া থেকে চারটি করে, উত্তর ও মধ্য আমেরিকা থেকে তিনটি এবং মহাদেশীয় প্লে-অফ থেকে তিনটি দল বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগ পায়। এই পদ্ধতিতে নিশ্চিতভাবে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় ইউরোপের দেশগুলো। কিন্তু শুধু এই সুযোগের কারণেই ইউরোপের দেশগুলো ফুটবলে দ্রুত উন্নতি করছে, তা নয়। প্রতিভা অন্বেষণ ও পরিচর্যা অন্য দেশগুলোর চেয়ে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর ধারা ভিন্ন। যেমন বেলজিয়ামের সবগুলো ক্লাব তাদের যুব একাডেমিতে একই ধরনের কৌশল অনুসরণ করে যেন সব খেলোয়াড়ের মধ্যে কৌশলগত সচেতনতা তৈরি হয়।

অন্যদিকে ব্রাজিলের খেলোয়াড় বাছাই ও উন্নয়নের পদ্ধতি বেশ জটিল। কয়েকটি সফল ক্লাব ও দেশের ভেতরে থাকা ফুটবল প্রতিভা থেকে তারা খেলোয়াড় খুঁজে বের করে। কিন্তু ইউরোপের দেশগুলোর পদ্ধতি জটিল তো নয়ই বরং উপযোগী। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মতো ল্যাটিন আমেরিকার দলগুলোর জন্য ফুটবলের বিশ্ব আসরে বাজিমাত করা দিন দিন আরো কঠিন হয়ে পড়বে ইউরোপের দাপটে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১