আপডেট : ১৩ July ২০১৮
বাংলাদেশ সীমান্তে মাইন পেতে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। তারা বলছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী কখনো মাইন বা আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ব্যবহার করে না। তারপরও সীমান্তে মাইন পেলে যৌথভাবে অপসারণ করা হবে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত সম্মেলনের শেষ দিন গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পিলখানায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানানো হয়। গত ৯ জুলাই থেকে পিলখানায় অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিজিপির ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মায়ো থানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এবং বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ‘ক্ষেপে ওঠেন’ বিজিপি কর্মকর্তারা। প্রশ্ন শুনেই ‘অবজেকশন’ বলে দাঁড়িয়ে যান বিজিপি প্রতিনিধিদলের একাধিক সদস্য। তারা বলেন, এটা আমাদের ইস্যু নয়। এ সময় বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক আনিছুর বলেন, এ সীমান্ত সম্মেলনে দুই দেশের সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুটি অনেক বড় বিষয়। এটা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আলোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কাজ করছে। সম্মেলনে সম্প্রতি মিয়ানমারের নাগরিকদের সীমান্ত অতিক্রমসহ সীমান্তে গুলিবর্ষণের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বন্ধে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সীমান্তে মাদক, অস্ত্র, নারী ও শিশু পাচারসহ সব ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধের লক্ষ্যে সমন্বিত যৌথ টহল, সীমান্তে নজরদারি ও অন্যান্য তৎপরতা বৃদ্ধি, উভয় পক্ষের মাঠপর্যায়ের অধিনায়কদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা এবং সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষায় পরস্পরের মধ্যে তাৎক্ষণিক তথ্যবিনিময়ে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে। সীমান্তে মাইন বা আইইডি অপসারণ প্রসঙ্গে উভয় পক্ষ বিস্তারিত আলোচনা করেছে এবং মিয়ানমার পক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে সম্মত হয়েছে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মংডুতে ইতোমধ্যে একটি বর্ডার লিয়াজোঁ অফিস স্থাপন করা হয়েছে। বিজিবি জানায়, টেকনাফ উপজেলায়ও একটি বর্ডার লিয়াজোঁ অফিস স্থাপন করা হয়েছে, যা সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। লিখিত যৌথ বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সম্মেলনের পূর্বনির্ধারিত আলোচ্য বিষয়গুলো নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আন্তরিক পরিবেশে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সম্মেলনে উত্থাপিত বিষয়গুলোর মধ্যে মাদকদ্রব্য, বিশেষ করে ইয়াবার ব্যাপকতার বিষয়ে উভয় পক্ষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে সীমান্ত সম্মেলন ফলপ্রসূ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন উভয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। উভয় পক্ষ সীমান্তে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করে। পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন আগামী জানুয়ারিতে মিয়ানমারের নেইপিডোতে হওয়ার ব্যাপারে উভয় পক্ষ নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১