বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১১ July ২০১৮

একাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে নাশকতার ছক জঙ্গিদের

আইএস অনুসারী নব্য জেএমবি # আল-কায়েদা অনুসারী আনসার আল ইসলাম

গোপনে চলছে জঙ্গিদের নতুন সদস্য সংগ্রহ প্রতীকী ছবি


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টার্গেট কিলিংয়ের ছক কষছে জঙ্গিরা। তাদের হিটলিস্টে আওয়ামী লীগ, প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ নেতারাও রয়েছেন। এ ছাড়াও আছেন প্রগতিশীল লেখক, চিন্তাবিদ, ব্লগার ও পুলিশের বেশ কিছু পদস্থ কর্মকর্তা।

গোপনে জঙ্গিদের নতুন সদস্য সংগ্রহ, তহবিল, প্রচারণা ও টার্গেট নির্ধারণের তথ্যও পেয়েছে গোয়েন্দারা। পুলিশ সদর দফতরকে পাঠানো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এরকম ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই প্রতিবেদনে ফের জঙ্গি হামলার বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে।

ভয়ঙ্কর হামলায় সক্ষম না হলেও জঙ্গি ঝুঁকি এখনো আছে বাংলাদেশে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে সব নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি একাট্টা হচ্ছে। জেল থেকে লেখা এক জঙ্গির চিঠি থেকে এমনই তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, জেএমবি, হরকাতুল জেহাদ ও হিজবুত তাহরীরসহ নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলো এক ছাতার নিচে শামিল হচ্ছে মর্মে আগাম তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। রাজশাহী, গাইবান্ধা, বগুড়া, নাটোরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন দুর্গম চরে তারা আবারো জড়ো হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, বড় হামলা করতে জঙ্গিরা এই মুহূর্তে সক্ষম নয়। তাদের শক্তি এখন আগের মতো নেই। তবে তারা হামলা চালাতে ও টার্গেট কিলিং করতে পারে। ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, টার্গেট কিলিং ঠেকানো কঠিন বিষয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের কোনো দেশ এ পর্যন্ত টার্গেট কিলিং ঠেকাতে পারেনি।

ওই সূত্র মতে, গুলশান হামলার পর প্রকাশ্যে আসে আইএসপন্থি জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি। এর আগে সবচেয়ে বেশি টার্গেট কিলিং ঘটিয়েছে আল-কায়েদাপন্থি আনসার আল ইসলাম। এ দুটি সংগঠনই দেশে টার্গেট কিলিংয়ে যুক্ত। তবে জেএমবির পুরনো অংশটিও ভিন্নমতাবলম্বীদের টার্গেট করে হত্যা করেছে। গত এক যুগে জেএমবি কিংবা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ বেশ কয়েকটি নিষিদ্ধ সংগঠন ভেঙে ভিন্ন ভিন্ন নামে তাদের উগ্রপন্থি মতবাদ নিয়ে প্রকাশ্যে এসেছে। ২০১৩ সালে সব নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনকে এক ছাতার নিচে আনার পরিকল্পনা নিয়ে তৎপর ছিল নব্য জেএমবির প্রধান তামিম আহমেদ চৌধুরী। কিন্তু তার সেই প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন। এর পরও তারা তাদের মতপার্থক্য ভুলে একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে।

গত ১৯ মার্চ বগুড়ায় তিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের একজন হলো আবির। আবিরের কাছে শীর্ষস্থানীয় জঙ্গি নেতাদের উদ্দেশে জেলে বসে অন্য এক জঙ্গির লেখা পাঁচ পৃষ্ঠার দুটি চিঠি পাওয়া যায়। চিঠি দুটি জেএমবির আমির সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন ওরফে দাদাভাইয়ের উদ্দেশে লেখা। চিঠিটি নির্দিষ্ট ব্যক্তির হাতে পৌঁছানোর আগেই তা গোয়েন্দাদের হাতে পড়ে। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশ খুন করে প্রিজন ভ্যান থেকে পালিয়ে যাওয়া সালেহীন বর্তমানে ভারতে থেকে পুরনো জেএমবির নেতৃত্ব দিচ্ছে। পালিয়ে থাকা আরেক জঙ্গি জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজান জামা’আতুল মুজাহিদীন ইন্ডিয়া (জেএমআই) নামে সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। চিঠিতে ওই জঙ্গি লিখেছে, অ্যামুনিশন সংগ্রহে তৎপর হওয়া দরকার। সামনে নির্বাচন। বিভিন্ন রকম সহিংসতা হবে। এই সুযোগ কাজে লাগানো দরকার বলেও উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।

এ ব্যাপারে অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটপ্রধান পুলিশের অতিরিক্ত আইজি শফিকুল ইসলাম গতকাল মোবাইল ফোনে বাংলাদেশের খবরকে বলেছেন, ওরা ছক কষবে আর আমরা তাদের ধাওয়া করব। আমরা তো বসে থাকব না। আমরা কাজ করছি, গুলশান হামলার পর থেকে আমরা নিরলসভাবে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে রয়েছি। ইতোমধ্যে তাদের নেটওয়ার্ক তছনছ হয়ে গেছে। এখন তারা আবার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে এটাও সত্য। কিন্তু সুবিধা করতে পারবে না।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১