বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৮ July ২০১৮

কেমন হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রস্তুতি

পরীক্ষার সব প্রশ্নের উত্তর জানা থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক সংরক্ষিত ছবি


এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। এ নিয়ে উৎকণ্ঠার চেয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বেশি চিন্তিত। কারণ এটা শুধু পরীক্ষাই নয়, যেন একটা যুদ্ধ। হ্যাঁ, এটি ভর্তিযুদ্ধ। তাদের প্রায় সবাই কী করব, কীভাবে পড়ব- এসব বুঝে উঠতে উঠতেই গলদঘর্ম হচ্ছে। যারা এখনো ভর্তি প্রস্তুতিতে করণীয় নিয়ে দ্বিধান্বিত, তাদের জন্যই এই লেখা :

প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হবে-

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হবে, এটা নিয়ে বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই চিন্তায় থাকে। এ সম্পর্কিত কমন প্রশ্নটি হচ্ছে, দৈনিক কত ঘণ্টা পড়ব? অনেকেই এই প্রশ্নের সহজ উত্তরে দশ থেকে বারো ঘণ্টা পড়ার সাজেশন দেয়। তবে এর সঙ্গে আরো কিছু ব্যাপার যোগ করা দরকার। নির্দিষ্ট করে বললে, ততক্ষণই পড়বে যতক্ষণ না একটা টপিক সম্পর্কে তোমার স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়। কলেজে যদি ফাঁকিবাজি করে আস, তবে তোমার সময়গুলো নতুন বিষয় আত্মস্থ করার পেছনে যাবে। আর যদি সব কলেজের সবকিছু তোমার নখদর্পণে থাকে, তবে নতুন নতুন সমস্যা সমাধান করে সবকিছু ঝালাই করে নাও। মোদ্দাকথা তুমি ততক্ষণই নিজেকে পড়াশোনায় ব্যস্ত রাখবে, যতটুকু সময় দিলে তুমি একটা টপিক বা অধ্যায় সম্পর্কে নিজের দক্ষতায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারবে। এ জন্য ছয় ঘণ্টা লাগলে ছয় ঘণ্টাই পড়বে, ষোলো ঘণ্টা লাগলে ষোলো ঘণ্টা পড়বে। যারা পিছিয়ে আছ ভাবছ, তারা হাল না ছেড়ে লেগে থাক। তাই বলে আবার অতি আত্মবিশ্বাসী কোনো সমস্যা দেখেই ‘পারব’ বলে এড়িয়ে যাবে না।

কীভাবে ভালো করা যায়-

অনেকেই প্রশ্ন করে, ভাই আমি তো কিছু বিষয়ে ভালো স্কোর করতে পারছি না। তাহলে আমি কি পারব? এর উত্তর হলো, তুমি কী পারবে বা পারবে না এটা সময় বলে দেবে। তোমার মনোবল রেখে এগিয়ে যেতে হবে। যে বিষয়গুলোতে তোমার স্কোর খারাপ, সেই বিষয়ে আলাদা করে সময় দাও। একটা সময় ঠিকই তোমার আয়ত্তে চলে আসবে। চলতি পথে বাধাবিপত্তি আসবেই। সব বিষয়ে ভালো নাও করতে পার। তবে এখনো তোমার হাতে সময় আছে। হোঁচট খাওয়া থেকে শিখবে এবং এর মাধ্যমেই আসবে যথার্থ ফল। সুতরাং চেষ্টা না করেই ফলকে প্রাধান্য দিও না।

কী বই পড়তে হবে-

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোন বিষয়ের বইগুলো পড়ব? এটা অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন। এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, কলেজের পাঠ্যবইগুলো আবার রিভিউ করে নাও। রিভিউ মানে এই নয়, পরীক্ষার আগের রাতের মতো একবার রিভিশন দেওয়া। বইয়ের বিভিন্ন চ্যাপ্টারের সমস্যাগুলো সমাধান করা এবং নতুন নতুন আরো সমস্যা তৈরি ও সমাধান করা। এতে পুরো বই তোমার আয়ত্তে চলে আসবে। যত বেশি সমস্যা তুমি সমাধান করবে, তত বেশি চর্চা হবে এবং অভিজ্ঞতার ঝুলি ভারী হবে। এই কাজগুলো সফলতার সঙ্গে শেষ করতে পারলে অনেক আত্মবিশ্বাস বাড়বে। অনেকেই এই কাজগুলো করতে চায় না। কিন্তু এগুলোই তোমাকে ভর্তিযুদ্ধে সবার চেয়ে এগিয়ে রাখবে।

কোন লেকচার শিট ফলো করতে হবে-

অনেকেই বলেন, ভাইয়া কিছু লেকচার শিট পেয়েছি, এগুলো পড়ব কিনা? আসলে এর উত্তর তোমার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। যারা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য পড়ছ, তাদের এগুলো সুবিধাজনক হতে পারে। তবে কঠিন কঠিন জিনিস চর্চা করতে গিয়ে চিন্তার স্বাভাবিকতা যেন বাধাগ্রস্ত না হয়। অনেক সময় মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা সহজ সমস্যাকে পেঁচিয়ে নিজেকে যাচাই করতে চায়। কিন্তু সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, বেসিকটা আঁকড়ে থাকা। কারণ বেসিক মনে থাকলে সব সমস্যার সমাধান করতে তোমার সুবিধা হবে। তাই বেসিকের ওপর জোর দাও।

সব প্রশ্নের উত্তর জানা থাকবে না-

পরীক্ষার সব প্রশ্নের উত্তর তোমার জানা থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। তাই এক্ষেত্রে একটু কৌশলী হতে হবে। তুমি যে প্রশ্নগুলো পার, শুধু সেগুলোরই উত্তর দাও। কারণ এটা ভুলে গেলে চলবে না, ভুল উত্তরের জন্য নেগেটিভ মার্কিং রয়েছে। এর ফলে অন্য প্রতিযোগীদের চেয়ে পিছিয়ে যাবে তুমি।

বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান কর-

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিগত বছরের  প্রশ্নগুলোকে সমাধান করা। বিশেষ করে তুমি যে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে চাও তাদের বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করলে ওখানকার প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হবে। এতে তোমার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আর এটা তুমি করবে যখন বইগুলো ভালোভাবে পড়া শেষ বলে তোমার মনে হবে। সবকিছুর খুঁটিনাটি রপ্ত করার পর এই কাজ আরম্ভ করলে তুমি তোমার বিস্ময়কর অগ্রগতি লক্ষ করবে।

যারা মেডিকেলের প্রস্তুতি নিচ্ছ, তারা অবশ্যই বেশ লেখাপড়া করছ। তোমাদের জন্য পরামর্শ হলো, কোনো অবস্থাতেই গণিত বা পদার্থের বেসিক পড়ায় যেন ঘাটতি না হয়। মেমোরাইজিং, টেকনিকসহ অনেক কিছু শেখার চাপ থাকবেই, কিন্তু তাই বলে সোজাসাপ্টা জিনিসপত্র ভুলে সিলিন্ডারের আয়তন সংক্রান্ত সমস্যাও সমাধান করতে পারবে না- এটা মেনে নেওয়া কষ্টকর। মেডিকেল পরীক্ষার্থীদের এই গণিতভীতি এবং ম্যাথমেটিক্যাল প্রবলেমে বেসামাল হয়ে ওঠা ভীতি ঠেকাতে হবে। তাই তোমরা নিয়মিতভাবে বায়োলজির পাশাপাশি অন্য সাবজেক্টগুলোর প্রতি নজর দাও। তাতে যদি মেডিকেলের বাইরে অন্য কোথায় পরীক্ষা দিতে চাও তখন তার জন্য সুফল পাবে।

একটা পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়ার পর কিছুতেই কয়েক দিনের জন্য গা-ছাড়া মানসিকতা রাখা যাবে না। তোমার লক্ষ্যে পৌঁছানের জন্য নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। রিল্যাক্স করবে একেবারে সর্বশেষ পরীক্ষার শেষেই। তা না হলে অনেক কিছু তোমার মনমতো নাও হতে পারে।

সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। অন্যদের দেখে প্রভাবিত হওয়া যাবে না। এখানে যা যা বলা হয়েছে, তা অনুসরণের চেষ্টা কর। যে ক’দিন সময় তোমার হাতে আছে, এই সময়ে নিজের প্রতি মনোযোগ দিলে সফলতা তোমার আসবেই।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১