আপডেট : ০১ July ২০১৮
নতুন বিশ্ব ঐতিহ্যের নাম ঘোষণা শুরু করেছে জাতিসংঘের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। বাহরাইনে চলমান ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪২তম অধিবেশন থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত নতুন ছয়টি ঐতিহ্যের নাম ঘোষণা হয়েছে। ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে এবার মোট ১১টি স্থান ও স্থাপনাকে এই তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করার প্রস্তাবনা রয়েছে। তবে যাচাই বাছাই এর পরে ৩০ জুন ভারতের মুম্বাইয়ের গোথিক ও আর্ট ডেকো, ইরানের সাসানীয় যুগের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন,জাপানে খ্রিস্টানদের গোপন ধর্মীয় স্থান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পাহাড়ি মঠকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর গতকাল রোববার ২০ শতকে তৈরি ইতালির ইভরিয়া শিল্প এলাকা ও স্পেনের মেডিনা আযাহেরাকেও বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দেয় ইউনেস্কো। জানা গেছে,গত ২৪ জুন থেকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪২তম অধিবেশন শুরু হয়েছে,চলবে ৪ জুলাই পর্যন্ত। আর আগামী দুই দিনে এই অধিবেশন থেকে আসতে পারে নতুন আরো ঐতিহ্যের স্বীকৃতির ঘোষণা। এক নজরে নতুন ছয়টি ঐতিহ্য মুম্বাইয়ের গথিক ও আর্ট ডেকো ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই শহরের ওভাল মেইডেন এলাকায় অবস্থিত যত ভিক্টোরিয়ান গথিক ও আর্ট ডেকো ধাঁচের স্থাপত্য রয়েছে সেগুলো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ভিক্টোরিয়ান গথিক স্টাইলে এসব সৌধ নির্মিত হয়েছিল উনিশ শতকে এবং আর্ট ডেকোগুলো নির্মাণ করা হয় বিংশ শতকে। মুম্বাই শহরে ৯৪টি সৌধ এই ধাঁচে তৈরি করা হয়েছে। ইরানের সাসানীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ইরানের সাসানীয় সাম্রাজ্যের দুর্গের মতো অবকাঠামো,প্রাসাদ ও নগর পরিকল্পনাসহ ফার্স প্রদেশের ৮টি প্রতœতাত্ত্বিক ক্ষেত্র স্থান পেয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্যে। তৃতীয় থেকে সপ্তম শতাব্দীতে এসব স্থান গড়ে উঠেছিল। জাপানে খ্রিস্টানদের গোপন ধর্মীয় স্থান নাগাসাকি অঞ্চলের গোপন খ্রিস্টান ধর্মীয় স্থানগুলোর ১২টি অংশ, জাপানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা নাগাসাকি ও কুমামোতোয় অবস্থিত। এগুলোর মধ্যে হারা দুর্গের ধ্বংসাবশেষ,ওউরা গির্জা এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের উপস্থিতি থাকা গ্রামগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই জায়গাগুলো, সপ্তদশ ও উনবিংশ শতাব্দীতে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের গোপনে ধর্ম পালনের ইতিহাস প্রদর্শন করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পাহাড়ি মঠ দক্ষিণ কোরিয়ার সানসা পাহাড়ি মঠগুলো সপ্তম শতক থেকে ধর্মীয় বিশ্বাসের কেন্দ্রে রয়েছে। সাতটি মন্দিরের রয়েছে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ, লেকচার হল,প্যাভিলিয়ন ও বৌদ্ধ কক্ষ। ইউনেস্কো এই স্থানগুলো পবিত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইতালির ইভরিয়া শিল্প এলাকা গেল শতকে নির্মিত এই শিল্প এলাকায় মূলত টাইপরাইটার,মেকানিক্যাল ক্যালকুলেটর ও কম্পিউটার তৈরি করা হতো। এখানে একই সঙ্গে আছে কারখানা,সামাজিক সেবার বিভন্ন প্রতিষ্ঠা ও শ্রমিক কর্মীদের আবাসন ব্যবস্থা। এটি মূলত ১৯৩০ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে তৈরি হয়। স্পেনের মেডিনা আযাহেরা মুসলিমদের স্বর্ণযুগ হিসেবে খ্যাত উমাইয়া শাসন আমলে তৈরি করা হয় মেডিনা আযাহেরা শহর। তৎকালীন খলিফারা এই শহরের বসেই শাসন করতেন স্পেন ও আসে পাশের এলাকা। তবে ২০ শতক পর্যন্ত এর কোনো খবরই জানা ছিলো না বিশ্ববাসী। এছাড়া কেনিয়ার থিমলিচ ওহিঙ্গা,ওমানের প্রাচীন প্রাচীর শহর কালহাত,সৌদি আরবের আল আহসা মরূদ্যানকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। ইউনেস্কোর নীতি অনুসারে প্রতিটি ঐতিহ্যবাহী স্থানের একটি পরিচয়বাহী নম্বর দেওয়া হয়। বর্তমানে এই নম্বরের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। আবার বাদও পড়েছে অনেক স্থান ও স্থাপনা। প্রতিটি ঐতিহ্যবাহী স্থানের মালিক ওই স্থানটি যে দেশে অবস্থিত সেই দেশ। তবে এই স্থানগুলো রক্ষায় বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান প্রকল্পের আওতাভুক্ত সব রাষ্ট্রই ভূমিকা নিতে পারে। এই স্থানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ইউনেস্কো গঠিত বিশ্ব ঐতিহ্য ফান্ড থেকেও অর্থ সহযোগিতা দেওয়া হয়।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১