আপডেট : ৩০ June ২০১৮
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব শেষ। এখন অপেক্ষা নকআউট পর্বের। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তারপরই শুরু হবে গ্রুপ পর্ব থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা ১৬ দলের বাঁচা-মরার লড়াই। আট গ্রুপ থেকে উঠে আসা দলগুলো এখন প্রস্তুত আসল পরীক্ষা দিতে। নকআউট পর্বে ভুল করে আর শোধরানোর কোনো সুযোগ নেই। যে দল হোঁচট খাবে, সে দলই ছিটকে পড়বে বিশ্ব ফুটবলের রঙিন মঞ্চ থেকে। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দেশ রাশিয়ায় চলতি এ আসরের নকআউট পর্বের প্রথম দিনের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা। একদিকে ইউরোপ, অন্যদিকে ল্যাটিন আমেরিকা। কাজান এরিনা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে দুই ফুটবল পরাশক্তির এ লড়াই। বিশ্বের শতকোটি মানুষের শত কোটি জোড়া চোখ আজ আটকে থাকবে রাশিয়ার ৪৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এ স্টেডিয়ামের দিকে। এ দুই দলের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আজকেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে সাবেক এক চ্যাম্পিয়নের। হয় আর্জেন্টিনা, নয় ফ্রান্স। পতন ঘটবে আরো এক নক্ষত্রের।
ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা ম্যাচটিকে ঘিরে উন্মাদনার কোনো কমতি নেই। দুই দলের সমর্থকরাই ব্যস্ত কাগজ-কলম নিয়ে হিসাব কষতে। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি টিম আর্জেন্টিনা। এখনো নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি মেসি-আগুয়েরো-মাশ্চেরানোরা। দলটির সমর্থকদের একমাত্র ভরসা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অতীত রেকর্ড। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫ নম্বরে থাকা আর্জেন্টিনা এ পর্যন্ত ১১ বার মুখোমুখি হয়ে ইউরোপের দেশটির বিরুদ্ধে ছয় ম্যাচেই পেয়েছে জয়ের দেখা। তিন ম্যাচে ড্র আর দুই ম্যাচে হারতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। এর মধ্যে ল্যাটিন আমেরিকার দেশটি ফ্রান্সের জালে বল পাঠিয়েছে এক ডজন। আর হজম করেছে মাত্র সাত গোল। বিশ্বকাপের লড়াইয়েও এগিয়ে আছে আর্জেন্টিনা। দুইবারের লড়াইয়ে দুইবারই জয় পেয়েছে ম্যারাডোনার দেশ। বিশ্বকাপের দুই ম্যাচে আর্জেন্টিনা করেছিল তিন গোল। বিপরীতে এক গোল দিয়েছিল ফ্রান্স।
তবে ইতিহাস পক্ষে থাকলেও বিশ্বকাপের চলতি আসরে এখনো স্বস্তিতে নেই টিম আর্জেন্টিনা। বাছাই পর্ব থেকেই শুরু ধাক্কা খাওয়া। মূল পর্বে এসেও বারবার পেছন থেকে যেন টেনে ধরা হচ্ছে মেসি-রোহো-হিগুয়েনদের। স্বরূপে ফিরতে পারছেন না কেউই। মেসিদের যেন লড়াই করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। চিন্তার কারণটা আসলে এখানেই। গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে এখনো আর্জেন্টিনাকে ধ্রুপদী ফুটবল খেলতে দেখা যায়নি। স্বভাসুলভ ফুটবল খেলে ভরাতে পারেননি সমর্থকদের মন। প্রথম ম্যাচে দুর্বল আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র আর দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া মেসিবাহিনীর দ্বিতীয় রাউন্ডে আসাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। শেষ ম্যাচে নাইজেরিয়ার সঙ্গে ২-১ গোলের জয় নিয়ে ৪ পয়েন্ট ঝুলিতে ভরে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলতে জায়গা করে নেয় সাম্পাওলির শিষ্যরা।
আর্জেন্টিনা গ্রুপ রানার্সআপ হলেও ‘সি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই নক আউট পর্বে ঠাঁই পেয়েছে ’৯৮-এর বিশ্বকাপ জয়ীরা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২-১ গোলের জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করা ফ্রান্স পেরুর বিরুদ্ধে ১-০ গোলের জয় তুলে নিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত করে ফেলেছিল গ্রিজম্যান-পল পগবারা। বৃহস্পতিবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ডেনমার্কের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে দিদিয়ে দেশমের শিষ্যরা। গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থাকা দলটি বেশ উজ্জীবিত নকআউট পর্বে। দলে নেই বড় ধরনের কোনো ইনজুরি সমস্যা। কার্ড সমস্যাও নেই ফ্রান্স শিবিরে। তাই পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ময়দানি লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে ইউরোপের দলটি।
গ্রুপ পর্বে কালো মেঘে ঢেকে থাকা আর্জেন্টিনা শিবিরের আকাশে কিছুটা হলেও আলোর দেখা পাওয়া গেছে। বিশেষ করে দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে গোল পাওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে সমর্থকরা। মেসি স্বরূপে ফিরতে পারলেই কোয়ার্টার ফাইনালের পথ অনেকটাই সহজ হবে আর্জেন্টিনার জন্য- এমন ধারণা ফুটবলবোদ্ধাদের। তবে স্নায়ুচাপের এ লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কোন দল জয় পায় সেটা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে রেফারির শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১