আমিরা খানম আয়শা। মাদারীপুর পৌরসভার ১ নম্বর শকুনি মহল্ল­ার হামিদ শিকদার সড়কের আহসান হাবিব ও মিনারা খানমের বড় মেয়ে। নৌযানে দুর্ঘটনা এড়াতে ওভারলোডিং ইন্ডিকেটর উদ্ভাবন তাকে আলোচনায় নিয়ে এসেছে। তার এ উদ্ভাবনটি চলতি বছর শরীয়তপুরের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। শরীয়তপুর জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী আমিরার এ উদ্ভাবনে অনুপ্রেরণা, মেধা ও শ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা ও প্রভাষক মো. জহিরুল ইসলাম।

আমিরা ও তার দলের উদ্ভাবিত ওভারলোডিং ইন্ডিকেটরের কাজ হলো- এটি কোনো লঞ্চ বা স্টিমারে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করলে লাইট ও শব্দ সঙ্কেতের (অ্যালার্ম) মাধ্যমে যাত্রীদের জানাবে যে, এই নৌযান অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট একটি মোবাইল ফোন নম্বরে কল চলে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত যাত্রী বা অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে নির্দিষ্ট ওজনে না আনা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ইন্ডিকেটর সার্কিট থেকে সঙ্কেত দিতেই থাকবে। ঠিক একই সময় নৌযানে স্থাপিত ইন্ডিকেটর থেকে কন্ট্রোল রুমে সেট করা নম্বরে কল চলে যাবে। এটি ব্যবহার করে বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এই কলের মাধ্যমে লঞ্চ বা নৌযানের ওভারলোডিংয়ের বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে জানা যাবে। এতে ব্যবহূত মোবাইল সিস্টেমটি এই কলটির কাজ করতেই থাকবে। এই সিস্টেম ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট ওজনের পর লঞ্চটি আরো অতিরিক্ত ওজন/যাত্রী বহন করলেই সার্কিটটি অ্যালার্ম ও লাইট জ্বালিয়ে ইন্ডিকেট করতে থাকবে।

আমিরার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, ইচ্ছাশক্তি, কল্পনা ও মেধার বিকাশ ঘটিয়ে তা এই সার্কিট সংযুক্ত করার চেষ্টা করেছে। আগামীতে আরো আপডেট করে নতুন কিছু সংযুক্ত করার ইচ্ছা আছে তার। উদ্ভাবিত ইন্ডিকেটর সার্কিটটি নৌযানের দুর্ঘটনা রোধে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বলেও তার বিশ্বাস।

ভবিষ্যতে নৌযানে অতিরিক্ত ওভারলোড হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে- এমন ধরনের নতুন কিছু উদ্ভাবনের চিন্তা করছে আমিরা খানম আয়শা। এ ছাড়া যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লঞ্চ বা কোনো নৌযান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডুবে যায়; তাহলে জরুরি দরজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে- এ ধরনের নতুন কিছু উদ্ভাবনের চিন্তা মাথায় রেখে গবেষণার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে আমিরা ও তার দল।