রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যাত্রাবাড়ীতে গ্রিনলাইন বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকার তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছেন বলে জানিয়েছেন তার ভাই আরিফ সরকার। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গোপালগঞ্জে ট্রাকের ঘষায় ডান হাত হারানো বাসযাত্রী খালিদ হাসান হূদয় কিছুটা ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা রবিউল ইসলাম। তিনি আরো জানিয়েছেন, সেই ট্রাকচালক জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। এ ঘটনায় বিস্মিত এই বাবা এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

আরিফ সরকার জানান, অ্যাপোলো হাসপাতালে কঠিন সময় পার করছেন রাসেল। সেখানে শনিবার তার দ্বিতীয় অপারেশন হয়েছে। তার পর থেকে থেমে থেমে চিৎকার করছেন। তিনি জানান, রাসেলের ব্যথা বেড়েছে। তিনি তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। রোববার সারা রাত ঘুমাননি। পাশে থাকা স্ত্রী মিম আক্তার ও বাবা শফিকুল ইসলামও তাকে থামাতে পারছেন না। তার অবস্থা চিকিৎসকদেরও অনেকটা হতাশ করেছে জানিয়ে আরিফ বলেন, গ্রিনলাইন বাস কর্তৃপক্ষ একবার খোঁজ নিয়ে আর যোগাযোগ করছে না।

দুর্ঘটনার পর আরিফ সরকার যাত্রাবাড়ী থানায় একটি দুর্ঘটনার মামলা করেন। তবে তারা মামলাটি হত্যাচেষ্টার ধারায় নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। পুলিশ বলছে, তারা একেক সময় একেক রকম ভাষ্য পাচ্ছে, তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলার ধারা বদলানো হবে না। আরিফ সরকার বলছেন, দুর্ঘটনার পর পুলিশের কথা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ওই মামলা করেন। পরে ঘটনা ‘অন্যরকম’ জানতে পারেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আজিজুর রহমান সোমবার বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিন্তু আমরা এখন নানা ভাষ্য পাচ্ছি। কখনো চালককে দোষী পাচ্ছি, কখনো বা রাসেলের ভুল ছিল এমন শুনছি। তদন্ত চলছে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

হূদয় কিছুটা ভালো : রবিউল ইসলাম জানান, তার ছেলে হূদয় আগের চেয়ে কিছুটা ভালো আছেন। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে হাত হারানোর কষ্ট তত তীব্র হয়ে উঠছে তার। রবিউল ইসলাম জানান, সোমবার হূদয়কে কেবিন থেকে বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরের কথা। চিকিৎসকরা বলেছেন, সেখানে তার প্লাস্টিক সার্জারি করা হবে। পরে ঘা শুকিয়ে গেলে কৃত্রিম হাত লাগানো যাবে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রবিউল বলেন, আমার ছেলেটা কী দোষ করেছিল? আমি এর বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই। সেই ট্রাকচালক জামিনে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এমন অপরাধ করার পর কীভাবে জামিন পায় আমার মাথায় আসে না। সরকারের কাছে আমি এর বিচার চাই।