বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২২ April ২০১৮

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট

পোশাক শিল্প নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে


সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর নানমুখী সংস্কার কার্যক্রমের সুবাদে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মপরিবেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও চাকরি হারাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ সত্ত্বেও পোশাক শিল্প নিয়ে এখনো নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পাঁচ বছর পূর্তি সামনে রেখে বিজিএমইএ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল শনিবার তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীর হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিদ্দিকুর রহমান। এ সময় সংগঠনের সহসভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাছির ছাড়াও অন্য পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্ধার কার্যক্রম, হতাহতদের সহায়তা ও কর্মপরিবেশের উন্নতি নিশ্চিত করতে নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের বিবরণ দেন তিনি। এছাড়া আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বিবেচনার জন্য বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়।

বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট বলেন, সঠিক তথ্য না তুলে কিছু কিছু এনজিও শ্রমিকদের নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এগুলো বন্ধ করা দরকার। দুর্ঘটনা পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ঘটে। অথচ রানা প্লাজা দুর্ঘটনার বর্ষপূর্তি এলেই এটা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। পোশাক শিল্প নিয়ে আরো গঠনমূলক সমালোচনা করতে তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

সিদ্দিকুর রহমান আরো বলেন, কিছু সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয় বিস্তারিত না জেনে প্রতিবেদন দিচ্ছে। এ শিল্পে কোটি লোকের জীবন-জীবিকা হয়। অথচ ২০০ জনের সঙ্গে কথা বলে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এসব প্রতিবেদন পোশাক খাতের জন্য ক্ষতিকর। সঠিক তথ্য না জেনে প্রতিবেদন প্রকাশ না করতে তিনি এনজিও এবং সুশীল সমাজের প্রতি অনুরোধ জানান।

এ সময় তিনি জানান, রানা প্লাজার পাঁচ কারখানার শ্রমিকদের বেতন ও পাওনাদি পরিশোধ, আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন বাবদ প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অভিযুক্ত পাঁচটি কারখানার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। এসব কারখানার মালিকদের আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে সহায়তা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ও নিহত শ্রমিকদের পরিবারদের ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সহযোগিতায় গঠিত তহবিল থেকে ২৪০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

কারখানার অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্প্রিংকলার, ফায়ার ডোরসহ দেশে তৈরি হয় না এমন সরঞ্জামের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। প্রি-ফেব্রিকেটেড ম্যাটেরিয়াল আমদানির ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহারেও দাবি জানানো হয়। তা ছাড়া চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে গার্মেন্ট পার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিদ্দিকুর রহমান আরো বলেন, গত পাঁচ বছরে পোশাক শিল্প অনেক পরিণত হয়েছে। এখন কমপ্লায়েন্স মেনেই কারখানা করা হচ্ছে। নতুন কারখানাকে সদস্যপদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজিএমইএ এখন অনেক বেশি সতর্ক। একই সঙ্গে সাব-কন্ট্রাকটিং কারখানাগুলোর জন্যও নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।

তিনি জানান, বাংলাদেশ এখন সবুজ শিল্পায়নে অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছে। লিড সার্টিফাইড ১০টি কারখানার মধ্যে ৭টির অবস্থান বাংলাদেশে। ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল থেকে দেশের ৬৭ কারখানা লিড সনদ পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৩টি প্লাটিনাম কারখানা। আরো ২৮০টি কারখানা সনদ পাওয়ার পাইপলাইনে আছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। নিহতদের অধিকাংশই ওই ভবনের পাঁচ কারখানার শ্রমিক। এ ঘটনায় ২ হাজারের বেশি আহত হন।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১