বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৩ April ২০১৮

ভারতে পুলিশের গুলিতে ৯ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু


তফসিলি জাতি ও জনজাতি নিপীড়ন প্রতিরোধ আইন নিয়ে ভারতে দলিত সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটকে ঘিরে দেশ জুড়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সহিংসতা থামাতে পুলিশের গুলিতে ৯ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। মধ্যপ্রদেশের গালিয়র, ভিন্দ ও মোরেনাতে এক ছাত্রনেতাসহ মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। রাজস্থানের অলওয়ারে থানায় অগ্নিসংযোগ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন আরও ১ জন। উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে ও মেরঠে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন ২ বিক্ষোভকারী। শুধু তাই নয়, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে পাঞ্জাব, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায়। সহিংসতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অন্তত সাত-আটটি রাজ্যের জনজীবন।

পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বুঝে তফসিলি জাতি ও জনজাতি নিপীড়ন প্রতিরোধ আইন লঘু না করার আর্জি নিয়ে মঙ্গলবার তড়িঘড়ি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে কেন্দ্র। তবু সকাল থেকেই মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়র, ভিন্দ, মোরেনা জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। চম্বল এলাকার পরিস্থিতি সামলাতে প্রশাসনকে নাকানিচোবানি খেতে হয়। গালিয়রে হাজার দুয়েক দলিত লাঠি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। ভিড়ের মধ্যে পাথর ছোড়া শুরু হয়। দোকান, পেট্রল পাম্পে ভাঙচুর শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। স্কুলবাসসহ অনেক গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। লাঠি, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেও পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি পুলিশ।

সংঘর্য ছড়ায় ভিন্দ, মোরেনাতেও। গালিয়রের আশেপাশের তিনটি থানা এলাকায় সান্ধ্য আইন জারি করা হয়। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী নামতে বাধ্য হয় ভিন্দে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজস্থানের জয়পুর, বাড়মের, অলওয়ার থেকে সহিংসতার খবর আসতে শুরু করে। অলওয়ারে মারা গিয়েছেন ১ জন। পবন জাটভ নামে ২৮ বছর বয়স্ক ওই বিক্ষোভকারী এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলে। অলওয়ারে আহত হয়েছেন ৯ পুলিশ। গোটা রাজস্থানে সংঘর্ষে আহত অন্তত ২৮ জন।

পাঞ্জাব, রাজস্থান, বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যেও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে সরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। আহত হয়েছেন কয়েক জন যাত্রী। মেরঠে সংঘর্ষ ব্যাপক আকার নেয়। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। ৪০ জন পুলিশসহ আহত হয়েছেন ৭৫ জন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাশের এলাকা হাপুরেও। সেখানে রেল অবরোধ করেন হাজার দুয়েক বিক্ষোভকারী।

পাঞ্জাবে স্কুল কলেজ, যানবাহন বন্ধ ছিল আগে থেকেই। বন্ধ ছিল ইন্টারনেটও। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই জালন্ধর, ভাটিন্ডা, অমৃতসরে তলোয়ার, লাঠি হাতে রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। পাঞ্জাবের সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীকে মজুত রাখা হয়েছে। হরিয়ানার অম্বালা, রোহতকেও বিক্ষোভ ছড়ায়। দিল্লির মান্ডি হাউস এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন দলিত বিক্ষোভকারীরা। গুজরাতে সকাল থেকেই সড়ক ও রেল অবরোধ হয়। অমদাবাদে বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠি চালায় পুলিশ। সুরেন্দ্রনগর, জামনগরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দলিত বিক্ষোভে।

বিক্ষোভের আঁচ লেগেছে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশাতেও। বিহারের রোহতাস জেলায় জেলাশাসককে দফতরে যেতে বাধা দেয় বিক্ষোভকারীরা। হাজিপুরে অ্যাম্বুল্যান্স পড়ায় আটকে মৃত্যু হয়েছে এক নবজাতকের। ধর্মঘট সমর্থকদের অনুরোধ করা সত্ত্বেও অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া হয়নি। নওয়াদায় ধর্মঘট সমর্থকেরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। বিহারে সাড়ে তিন হাজার ধর্মঘট সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডেও রেল ও সড়ক অবরোধ হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়ে রাজধানী, শতাব্দীসহ ১০০টি ট্রেন।

আগুন যাতে আর ছড়াতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, পাঞ্জাবে ১৭০০ র‌্যাফ পাঠানো হয়েছে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১