আপডেট : ৩০ December ২০১৯
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর গত বছর রাজধানীতে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাসরুট রেশনালাইজেশনের বিষয়ে কমিটি গঠিত হয়। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন ছিল কমিটির কাজ। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় পার হলেও চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু ছাড়া আর কিছুই বাস্তবায়ন করতে পারেনি কমিটি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে আহ্বায়ক করে রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানো ও যানজট নিরসনে ১০ সদস্যের কমিটি হয়। সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। ডিএনসিসির মেয়রকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বিআরটিএ চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান, রাজউক চেয়ারম্যান, ডিএমপি কমিশনার, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক। কমিটি গঠনের পর ধানমন্ডি-আজিমপুর রুটে চক্রাকার বাস চালু হয়েছে। উত্তরায়ও চক্রাকার বাস চালু হলেও বেশিরভাগ সময় সেটি বন্ধ থাকছে। সর্বশেষ গত ৯ ডিসেম্বর কমিটির ১১তম বৈঠকে সাঈদ খোকন ঘোষণা দেন, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে পুরান ঢাকায় চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু হবে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আগামী মার্চের মধ্যে ২২ বাসরুট ও ছয় কোম্পানি চূড়ান্ত করা হবে। এ বিষয়ে আমরা পরিবহনের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বসেছি। আগামীতে বাস মালিকদের সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। এসব কার্যক্রমে ধীরগতি কেন জানতে চাইলে দক্ষিণের মেয়র বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে কার্যক্রমে ধীরগতি ছিল। এ কারণে একটু পিছিয়ে আছি। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। চলতি বছরের মাঝামাঝি কমিটি ঘোষণা দিয়েছিল, জুলাইয়ের মধ্যেই টিকিট সিস্টেমে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল করবে। প্রাথমিকভাবে এটি মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল রুটে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য রুটেও এটা হবে। মোহাম্মদপুর ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত রুটের সব বাস এক কোম্পানি ও এক রুটের আওতায় এনে পরিচালনা করা হবে। এরপর অন্য রুটে আরো পাঁচ কোম্পানিসহ মোট ছয়টি কোম্পানির আওতায় বাস পরিচালনা করা হবে। জুলাইয়ে ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত মতিঝিল হয়ে যেসব বাস চলাচল করে সেগুলোর মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে সব বাস এক রঙ করা হবে। ঘোষণার পাঁচ মাস পার হলেও ওই রুটে টিকিটের মাধ্যমে বাস চলাচল শুরু হয়নি। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গঠিত কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, যেসব পরিকল্পনা হয়, সেগুলো অবৈজ্ঞানিক। বিজ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। আগামী পাঁচ বছর পর কী হবে, সে বিষয়ে এখনই ধারণা থাকতে হবে। চুক্তিভিত্তিক গাড়ি ভাড়া নেওয়ায় প্রতিনিয়ত চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। চালকের টার্গেট থাকে কীভাবে ভাড়ার টাকা আগে ওঠানো যায়। এতে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সবদিকে খেয়াল করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরিবহন বিশেষজ্ঞ এবং শৃঙ্খলা ফেরানো কমিটির সদস্য ড. এস এম সালেহ উদ্দিন বলেন, পরিবহন সমস্যার সমাধানের আগে অন্য সমস্যার সমাধান প্রয়োজন। ৩০০টির বেশি রুট আছে। মালিকরা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে। চালকদের কাছে গাড়ি লিজ দিচ্ছে, ফলে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। তবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, একটু সময় লাগবে। অনেক দূর এগিয়ে গেছি। আশা করছি, আগামী বছরের মধ্যে অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারব।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১