বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৯ March ২০১৯

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

পাক-ভারত পরমাণু যুদ্ধের শঙ্কা থাকছেই

পাক-ভারত পরমাণু যুদ্ধের শঙ্কা থাকছেই প্রতীকী ছবি


ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা শেষ হয়ে যায়নি। এদের বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা কাশ্মির সমস্যার সমাধান করা না গেলে এই দেশ দুটির মধ্যে এই আশঙ্কা থেকেই যাবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

প্রভাবশালী এই পত্রিকাটির গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়, গত মাসে পুলওয়ামায় হামলায় ৪০ ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ার পর পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশ দুটির মধ্যে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল তা প্রশমিত হলেও দেশ দুটি আন্তরিক না হলে এদের আবারো গুরুতর সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ‘যে সমস্যাটি এত তীব্র ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদী অনুভূতিতে নাড়া দিয়ে যায়, সেটার সমাধান ভেতর থেকেই আসতে হবে। ভারত, পাকিস্তান এবং কাশ্মিরের মানুষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং এর প্রধান ব্যক্তিরা এ বিষয়ে কোনো গুরুতর আগ্রহ দেখায়নি, কিন্তু এটাই হচ্ছে বাস্তবতা’, বলা হয় সম্পাদকীয়তে। পাকিস্তানের ডন গতকাল শুক্রবার জানায়, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত বছর ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই একাধিকবার নয়াদিল্লিকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। ভারতীয় সৈন্যরা কাশ্মিরিদের ক্রমাগত দাবিয়ে রাখলে তা ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাও তুলে ধরা হয় টাইমসের সম্পাদকীয়তে।

কাশ্মিরি এক তরুণ পুলওয়ামায় হামলা চালায় এবং জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) এই হামলার দায় স্বীকার করে, কিন্তু ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। জেইএম ২০০২ সাল থেকে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ। ইসালামাবাদ ভারতের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। কিন্তু ইমরান খান সংঘাত ঠেকানোর জন্য বলেছেন, ভারতের কাছে ‘পদক্ষেপ গ্রহণ করার মতো প্রমাণ’ থাকলে পাকিস্তান তা তদন্ত করে দেখবে।

গত সপ্তাহে ভারত পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বালাকোটে ‘জেইএমের বৃহত্তম প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে হামলা’ চালিয়েছে বলে দাবি করে। এতে ‘বিপুলসংখ্যক জেইএম সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে বলে দাবি করে ভারত।

ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স জানায়, পাকিস্তানি এয়ার ফোর্সের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ভারতীয় বিমানটি পালিয়ে যায় এবং তাদের বোমাটি তাড়াহুড়ায় বালাকোটের কাছে ফেলে। বোমার আঘাতে জঙ্গলের কয়েকটি গাছ উপড়ে যায়, স্থানীয় একজন বৃদ্ধ আহত হয়।

এর পরদিন পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতের ভেতরে অসামরিক কয়েকটি লক্ষ্যে হামলা চালায়। ওই দিনই আবারো পাকিস্তানে অনুপ্রবেশকারী দুটি ভারতীয় বিমানকে ভূপাতিত করে পাকিস্তান এবং আটক করে এক ভারতীয় পাইলটকে।

টাইমসের মতে, পাকিস্তান ‘শান্তির ইঙ্গিত’ হিসেবে ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে আটকের দুদিনের মাথায় মুক্তি না দিলে ওই সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারত।

‘প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শুভকামনার নিদর্শন হিসেবে ভারতকে তাদের পাইলট ফেরত দেন, আলোচনার প্রস্তাব দেন এবং বোমাবর্ষণের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন। মোদি এই সুযোগ গ্রহণ করে পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়া বন্ধের পদক্ষেপ নেন’, বলা হয় সম্পাদকীয়তে।

বিমান হামলার পর কয়েক দিন নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সঙ্কটময় পরিস্থিতি বিরাজ করে, কিন্তু এখন উত্তেজনা কমে এসেছে। ডন জানায়, ভারত পুলওয়ামা হামলার বিষয়ে একটি দলিলও পাঠিয়েছে, যা পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা করে দেখছে।

পাকিস্তানও চরমপন্থি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে দমন অভিযান শুরু করেছে এবং ৪০ জনেরও বেশি জঙ্গিকে ‘প্রতিরোধমূলক কাস্টডিতে’ নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ জেইএম ও জামাতুদ দাওয়ার মতো সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কয়েকটি মাদরাসারও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে বলে জানায় ডন।

‘এই দেশ দুটি বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল। ভারত পাকিস্তানকে আক্রমণ করে এবং আকাশে দ্বন্দ্বযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এর পরেরবারের সংঘাত, বা তার পরেরটা, এর চেয়ে অনেক বেশি অচিন্তনীয় হতে পারে’, সতর্ক করে দেওয়া হয় টাইমসের সম্পাদকীয়তে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১