আপডেট : ০৪ February ২০১৯
ডাকসু নির্বাচনের জন্য আগামী ১১ মার্চ দিন ঠিক হয়েছে। ১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলবে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ডাকসুর সভাপতি হিসেবে তার ক্ষমতাবলে এই দিন ঠিক করেছেন বলে ২৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এই ঘোষণা দেওয়ার আগে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ এবং ডাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে সভা করেন। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল তিন দশক আগে; ১৯৯০ সালের পর আর নির্বাচন হয়নি। ডাকসুসহ বিভিন্ন ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের যথাযথ বিকাশ হচ্ছে না বলে রাজনীতিবিদরা হতাশা প্রকাশ করে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে গিয়ে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করতে বলেছিলেন। ডাকসু নির্বাচন চেয়ে আদালতে রিট আবেদন হয়েছিল, তাতে ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশনা আসে গত বছর হাইকোর্ট থেকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনে ওই আদেশ স্থগিত করেছিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগ গত ৬ জানুয়ারি সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিলে নির্বাচন আয়োজনের বাধা কাটে। এর ফলে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যেই ডাকসু নির্বাচন করতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এরপর নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমানকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং আরো পাঁচজনকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। নির্বাচনের জন্য ৭ অধ্যাপকের সমন্বয়ে একটি ‘আচরণবিধি কমিটি’ও গঠন করা হয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। সেখানে ভোটার কারা হবে এবং ভোটকেন্দ্র কোথায় হবে, সে নিয়ে নানা মত এসেছে। উপাচার্য জানিয়েছেন, এসব চূড়ান্ত করার জন্য ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। প্রার্থিতার সর্বোচ্চ বয়স ৩০ এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সিন্ডিকেটের সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। সিন্ডিকেট মিটিংয়ে ডাকসুর সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় যে সব পরিবর্তন আনা হয়েছে তা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. এনামুজ্জামান। তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও এমফিল পর্যায়ে অধ্যয়নরত আছে এবং যারা বিভিন্ন আবাসিক হলে আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে সংযুক্ত আছে এবং নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার তারিখে যাদের বয়স কোনোক্রমে ত্রিশের বেশি হবে না, কেবল তারাই ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটার হতে পারবে। সব ভোটারই প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা রাখে। এ ছাড়া যারা সান্ধ্যকালীন কোর্স, প্রোগ্রাম বা প্রফেশনাল এক্সিকিউটিভ বা স্পেশাল মাস্টার্স, এমএ, ডিপ্লোমা, এমএড, পিএইচডি, ডিবিএ, ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স অথবা এ ধরনের অন্যান্য কোর্সে অধ্যয়নরত আছেন তারা ভোটার হতে পারবেন না। ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে শিক্ষার্থীরা যে কোর্সে অধ্যয়ন করুন না কেন, তারা ভোটার হতে পারবেন না। সরকারি ও বেসরকারি, দেশে বা বিদেশে যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো শিক্ষার্থী ভোটার হতে পারবেন না। অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজের কোনো শিক্ষার্থী ভোটার হতে পারবেন না। গঠনতন্ত্রের প্রচলিত নিয়মানুসারে হলগুলোতে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের সুপারিশ ও সময়ের চাহিদা বিবেচনা করে কয়েকটি সম্পাদক ও সদস্যপদ সৃষ্টি করা হয়েছে। ডাকসুর সভাপতির ক্ষমতা ভারসাম্য প্রস্তাবনার বিষয়টি সিন্ডিকেট বিবেচনায় নিয়েছে। সিন্ডিকেটের কার্যাবলি অনুমিত হওয়া ও সভার কার্যবিবরণী লেখার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি। আচরণবিধির বিষয়ে তিনি বলেন, ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর দেওয়া সুপারিশ বিবেচনা করে কিছু আচরণবিধি প্রণয়ণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে লিফলেট বা হ্যান্ডবিলে শুধু সাদাকালো ছবি ব্যবহার করা যাবে, হলসমূহে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। প্রাধ্যক্ষ প্রয়োজনবোধে আরো ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা করবেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন রাখা হবে। প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত রাখা হয়েছে। সভা-সমাবেশ ও অডিটোরিয়ামে মাইকের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো যাবে। কোনো ধরনের স্থাপনা, দেয়াল, যানবাহন ইত্যাদিতে হ্যান্ডবিল বা লিফলেট না লাগানোর বিষয়টি সংযুক্ত করা হয়েছে। সভা-সমাবেশের অনুমতি গ্রহণের সময় ৪৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৪ ঘণ্টা করা হয়েছে। এছাড়া গঠনমূলক সমালোচনার সুযোগ সবসময় আছে। ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রার্থী বা নেতাকর্মীদের হয়রানি করা যাবে না। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে। প্রয়োজনে আরো বসানো হবে। রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তিরাই ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১