বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২০ December ২০১৮

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বিদেশি দূতদের বৈঠক

ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন সংরক্ষিত ছবি


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে  বৈঠক করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গতকাল বুধবার দুপুর ২টা থেকে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে প্রায় দেড় ঘণ্টার এ বৈঠক হয়।

পরে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, এখানেও তিনি একই কথা বলেছেন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে বলে তিনি আশা করেন। সহিংসতা বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিস্থিতি ঠিক রাখতে সব দলকে সহিংসতা পরিহার করতে হবে।

ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের মানুষ খুব আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। তারা শতভাগ অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। কারণ তারা পরিবর্তন চায়। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, জনগণের অবাধে ভোট দেওয়ার সুযোগ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ করছি পুলিশ অসাধারণভাবে তৎপর। এত পুলিশকে রাস্তায় টহল দিতে কখনো দেখিনি, তারা সারা দেশে ধরপাকড় চালাচ্ছে। কাউকে পেলেই ধরে ফেলে। কেন ধরছে, কিছু বলে না। পুলিশ নির্বাচনের সময় এ রকম কোনো ভূমিকা রাখতে পারে না৷ মূলত ভয়ভীতি দেখিয়ে সরকার চায় বিরোধীরা নির্বাচনে না আসুক। তাহলে সরকারি দল নির্বাচনে একক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে। এ কারণে পুলিশের এমন ভূমিকা। এটা সরকারি কৌশলের অংশ৷

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমরা দেখা করে এসেছি। তাদের নীরবতায় আমরা উদ্বিগ্ন। সিইসিকে আমরা বলেছি তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে। তবে অন্তত আমরা দেখা করার পর তিনি আইজিপিকে একটি চিঠি দিয়েছেন। তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছি।

কূটনীতিকদের সঙ্গে কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা নিজেরাও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন। আমরা তাদের যেসব তথ্য দিয়েছি, সেগুলোর সঙ্গে কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষণ প্রায় একই। অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, জনগণ কীভাবে তাদের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য অবাধে ভোট দিতে পারে- তা নিয়ে আলোচনা করেছি। বিদেশিরা এসব বিষয়ে সহানুভূতিশীল।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের চাপেই হোক বা নির্দেশে- নির্বাচন কমিশন সবকিছু দেখেশুনেও চুপ। বৈঠকে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে কথা বলেছি। কূটনীতিকরা এই পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট নন।

কূটনীতিকদের কাছে কী ধরনের সহযোগিতা চান- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা যাতে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিই, সে জন্য তারা বহু অনুরোধ করেছেন। আমরা তো নির্বাচনে গেলাম। প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছিলেন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। মামলা ও গ্রেফতার হবে না। কিন্তু তা বন্ধ হয়নি। সরকার তার কোনো কথাই রাখছে না।

বিদেশিদের কাছে বিএনপি মায়াকান্না করে- আওয়ামী লীগের এমন অভিযোগের ব্যাপারে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী লীগও বিদেশিদের নিয়ে বৈঠক করে। কান্নার কিছু নেই। যা সত্য ও বাস্তব, তা সবাইকে জানতে দেওয়া উচিত। কারণ, সরকার বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারই নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট যে ইশতেহার দিয়েছে, তা কূটনীতিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি জানান, ৩৫টি দেশের কূটনীতিকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, তুরস্ক, ডেনমার্ক, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, তাবিথ আউয়াল, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, জেবা খান, ড. আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১